স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯

Jumjournal
Last updated Nov 17th, 2020

510

featured image

স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯

( ২০০৯ সনের ৫৮ নং আইন )

পৌরসভা সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়নকল্পে প্রণীত আইন

যেহেতু পৌরসভা সংক্রান্ত বিদ্যমান অধ্যাদেশ রহিত করিয়া একটি নূতন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-

১ম ভাগ

প্রারম্ভিক

সংক্ষিপ্ত শিরোনাম প্রয়োগ ও প্রবর্তন

১। (১)এই আইন স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে। 

(২) ইহা সমগ্র বাংলাদেশে প্রযোজ্য হইবেঃ তবে শর্ত থাকে যে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন নির্দিষ্ট এলাকা বা পৌর এলাকা বা পৌরসভাকে এই আইন বা তদধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধানের সকল বা যে কোন বিধানের প্রয়োগ হইতে অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবে। 

(৩) এই আইনের-  
(ক) ধারা ৩৬, ৮০, ৯৮, ৯৯, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫ ও ১০৯ ব্যতীত অন্যান্য ধারাসমূহ ১৪ মে, ২০০৮ তারিখে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে; এবং  
(খ) ধারা ৩৬, ৮০, ৯৮, ৯৯, ১০০, ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫ ও ১০৯ অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

সংজ্ঞা

২৷ বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,- 
(১) ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা’ অর্থ পুলিশ বাহিনী, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), আনসার বাহিনী, ব্যাটালিয়ান আনসার, বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্ট গার্ড বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ; 

(২) ‘আচরণ বিধি’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত আচরণ বিধি; 

(৩) ‘আর্থিক প্রতিষ্ঠান’ অর্থ আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ২৭ নং আইন) এর ধারা ২ এবং অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ (২০০৩ সনের ৮ নং আইন) এর ধারা ২ এ সংজ্ঞায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান; 

(৪) ‘আবর্জনা’ অর্থ জঞ্জাল, উচ্ছিষ্ট, বিষ্ঠা-ময়লাদি, জীব-জন্তুর মৃতদেহ, নর্দমার তলানি, পয়ঃপ্রণালীর থিতানো বস্তু, ময়লার স্তুপ, বর্জ্য এবং অন্য যে কোন দূষিত পদার্থ; 

(৫) ‘ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’ অর্থ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষসহ যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ যাহা শহর উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পাদনে দায়িত্বপ্রাপ্ত; 

(৬) ‘ইমারত’ অর্থে কোন দোকান, বাড়ীঘর, কুঁড়েঘর, বৈঠকঘর, চালা, আস্তাবল বা যে কোন প্রয়োজনে যে কোন দ্রব্য সহযোগে নির্মিত কোন ঘেরা, দেয়াল, পানি-সংরক্ষণাগার, বারান্দা, প্লাটফরম, মেঝে ও সিঁড়িও ইহার অর্ন্তভুক্ত হইবে; 

(৭) ‘ইমারত নির্মাণ’ অর্থ নূতন দালান নির্মাণ; 

(৮) ‘ইমারত পুনঃনির্মাণ’ অর্থ নির্দেশিতভাবে একটি ইমারতের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন; 

(৯) ‘ইমারত রেখা’ অর্থ এইরূপ রেখা যাহার বাহিরে বিদ্যমান কিংবা প্রস্তাবিত রাস্তার দিকে ইমারতের বহির্মুখ বা বহির্দেয়ালের কোন অংশ প্রক্ষিপ্ত হইবে না; 

(১০) ‘উৎপাত’ অর্থ এমন যে কোন কাজ, ত্রুটি, স্থান বা দ্রব্য দ্বারা সৃষ্টি, ঘ্রাণ বা শ্রবণ যাহা জখম, বিপদ, বিরক্তি বা অপরাধ ঘটানো বা ঘটাইতে পারে যাহা জীবনের জন্য মারাত্মক অথবা স্বাস্থ্য বা সম্পদের জন্য ক্ষতিকারক;

(১১) ‘উপ-আইন’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত উপ-আইন; 

(১২) ‘উপ-কর’ অর্থ এই আইনের অধীন আরোপিত উপ-কর; 

(১৩) ‘উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ অর্থ শহর উন্নয়নের কার্যাবলী সম্পাদনের দায়িত্বে নিয়োজিত কোন সংস্থা বা কর্তৃপক্ষ; 

(১৪) ‘ওয়ার্ড’ অর্থ একজন কাউন্সিলর নির্বাচনের উদ্দেশ্যে সীমানা নির্ধারিত একটি ওয়ার্ড; 

(১৫) ‘কর’ অর্থ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস, শুল্ক অথবা এই আইনের অধীন আরোপযোগ্য কোন করও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(১৬) ‘কাউন্সিলর’ অর্থ পৌরসভার কোন কাউন্সিলর; 

(১৭) ‘কারখানা’ অর্থ বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০০৬ সনের ৪২ নং আইন)-এর ধারা ২(৭) এ সংজ্ঞায়িত কারখানা; 

(১৮) ‘ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড’ অর্থ Cantonments Act,1924 (Act No. II of 1924) এর অধীন গঠিত ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড;  

(১৯) ‘খাজনা’ অর্থ আইনসম্মত উপায়ে কোন ইমারত বা জমি অধিকারে রাখিবার কারণে দখলদার বা ভাড়াটিয়া বা ইজারা গ্রহীতা কর্তৃক আইনতঃ প্রদেয় অর্থ বা দ্রব্য; 

(২০) ‘খাদ্য’ অর্থ ঔষধ এবং পানীয় ব্যতীত মানুষের পানাহারের নিমিত্ত ব্যবহৃত সকল প্রকার দ্রব্য; 

(২১) ‘গণস্থান’ অর্থ কোন ভবন, আঙ্গিনা অথবা স্থান যেখানে সাধারণ জনগণের প্রবেশাধিকার রহিয়াছে; 

(২২) ‘মেয়র’ অর্থ পৌরসভার কোন মেয়র; 

(২৩) ‘জেলা’ অর্থ District Act, 1836 (Act No. I of 1836)- এর অধীন সৃষ্ট জেলা; 

(২৪) ‘টোল’ অর্থ এই আইনের অধীন আরোপিত টোল; 

(২৫) ‘ডেপুটি কমিশনার’ অর্থে এই আইনের অধীনে সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে নিয়োগকৃত কোন কর্মকর্তাকে বুঝাইবে যিনি ডেপুটি কমিশনারের সকল কিংবা যে কোন কার্য পালন করিবেন; 

(২৬) ‘ড্রাগ বা ঔষধ’ অর্থ অভ্যন্তরীণ অথবা বাহ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত যে কোন দ্রব্য এবং ঔষধের মিশ্রণে অথবা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত যে কোন দ্রব্যও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(২৭) ‘ড্রেন’ অর্থে ভূ-নিম্নস্থ নর্দমা, রাস্তা বা বাড়ি-ঘরের নর্দমা, সুড়ঙ্গ, কালভার্ট, পরিখা, নালা এবং বৃষ্টির পানি ও নোংরা পানি বহনের জন্য যে কোন প্রকার ব্যবস্থাও উহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(২৮) ‘তফসিল’ অর্থ এই আইনের সহিত সংযুক্ত তফসিল; 

(২৯) ‘দখলদার’ অর্থ একজন মালিক যিনি নিজের জমি বা ইমারতের প্রকৃত দখলদার এবং এমন ব্যক্তি যিনি সাময়িকভাবে জমি বা ইমারত বা উহার অংশের জন্য উহার মালিককে ভাড়া প্রদান করেন বা তাহা প্রদানের জন্য দায়ী থাকেন; 

(৩০) ‘দুগ্ধ খামার’ অর্থ কোন খামার, গরুর ছাউনি, গোয়াল ঘর, দুধ সংরক্ষণাগার, দুধের দোকান, অথবা এমন কোন স্থান যেখান হইতে দুধ অথবা দুগ্ধজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করা হয়; 

(৩১) ‘দণ্ডবিধি’ অর্থ The Penal Code (Act No. XLV of 1860); 

(৩২) ‘নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ’ অর্থ সরকার বা এই আইনের কোন সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার কর্তৃক ক্ষমতা প্রদত্ত যে কোন সরকারি কর্মকর্তা; 

(৩৩) ‘নির্বাচন কমিশন’ অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৮-এর অধীন প্রতিষ্ঠিত নির্বাচন কমিশন; 

(৩৪) ‘নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল’ অর্থ এই আইনের ধারা ২৪ এর অধীন গঠিত নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল; 

(৩৫) ‘নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল’ অর্থ এই আইনের ধারা ২৪ এর অধীন গঠিত নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল; 

(৩৬) ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষক’ অর্থ কোন ব্যক্তি বা সংস্থা যাহাকে নির্বাচন কমিশন বা এতদুদ্দেশ্যে তদকর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই আইনের অধীন কোন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য লিখিতভাবে অনুমতি দেওয়া হইয়াছে; 

(৩৭) ‘নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ’ অর্থে দণ্ড বিধিতে সংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি, সম্পত্তি আত্মসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act No. II of 1947)-এ সংজ্ঞায়িত Criminal Misconduct ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(৩৮) ‘পরিষদ’ অর্থ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণ সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ;

(৩৯) ‘পল্লী এলাকা’ অর্থ শহর নহে এইরূপ যে কোন অপেক্ষাকৃত পশ্চাদপদ ও অনগ্রসর কৃষিনির্ভর বা সামন্ত ব্যবস্থার ন্যায় পেশাজীবী লইয়া গড়িয়া উঠা জনপদ এবং ইউনিয়ন পরিষদের অধীন গ্রাম বা ওয়ার্ড লইয়া গঠিত এলাকা যাহা পৌরসভা বা সেনানিবাস এলাকার অন্তর্ভুক্ত নহে; 

(৪০) ‘পুলিশ কর্মকর্তা’ অর্থ পুলিশ বাহিনীর সাব-ইন্সপেক্টর ও তদূর্ধ্ব পদ-মর্যাদাসম্পন্ন কোন পুলিশ কর্মকর্তা; 

(৪১) ‘প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা’ অর্থ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা; 

(৪২) ‘প্রবিধান’ অর্থ এই আইনের অধীনে প্রণীত প্রবিধান; 

(৪৩) ‘পৌরসভা’ অর্থ এই আইনের ধারা ৬ এর অধীন গঠিত পৌরসভা; 

(৪৪) ‘পৌর এলাকা’ অর্থ এই আইনের ধারা ৪(২) এ বর্ণিত এলাকা; 

(৪৫) ‘পৌরসভা তহবিল’ অর্থ পৌরসভার তহবিল; 

(৪৬) ‘পৌরসভার মাস্টার প্ল্যান’ অর্থ পৌরসভার সীমানার আওতাধীন উন্নয়ন পরিকল্পনার কাঠামো; ভূমি ব্যবহার, পরিবহন ও ব্যবস্থাপনা, পয়ঃনিষ্কাশন এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনার নীতি ও কৌশল নির্ধারণ এবং সামগ্রিকভাবে পৌরসভার উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় নির্দিষ্ট বাস্তবায়নযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্প;  

(৪৭) ‘পৌরসভার সাধারণ বাসিন্দা’ অর্থ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড বা পৌরসভা এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দা যাহার নাম ঐ এলাকার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে; 

(৪৮) ‘ফিস’ অর্থ এই আইনের অধীন নির্ধারিত ফিস; 

(৪৯) ‘বসত বাড়ি’ অর্থ কোন ইমারত যাহা সম্পূর্ণ বা প্রধানতঃ মানুষের ব্যবহারের জন্য ব্যবহৃত হইয়া থাকে; 

(৫০) ‘বাজার’ অর্থে এমন কোন স্থান যেখানে জনগণ মাছ, মাংস, ফল-মূল, শাক-সবজি বা অন্য যে কোন খাদ্য দ্রব্যসহ অন্যান্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিক্রয় ও ক্রয়ের জন্য জড়ো করা হয় এবং ক্রয়-বিক্রয় করা হয় অথবা পশু বা গরু-ছাগল ও পশু-পক্ষী বিক্রয় এবং ক্রয়ের জন্য জড়ো করা হয় এবং ক্রয়-বিক্রয় করা হয় এবং হাট বাজারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে এবং এমন কোন স্থান যা বাজার বা হাট-বাজার হিসাবে বিধি অনুসারে ঘোষণা করা হইয়াছে। 

(৫১) ‘বাৎসরিক বাড়ি ভাড়া বাবদ মূল্য’ অর্থ কোন ইমারতে রক্ষিত আসবাবপত্র ও জায়গার উপর অবস্থিত যন্ত্রপাতি ব্যতীত ইমারত ও জায়গার প্রত্যাশিত যুক্তিসংগত বৎসরান্তরের ভাড়া, দখলজনিত কারণে ভাড়াটিয়া কর্তৃক ইমারতের মালিক অথবা জায়গার মালিককে প্রদত্ত সমুদয় অর্থ কিংবা অঙ্গীকারকৃত প্রদেয় অর্থ, কর, বীমা অথবা অধিকারজনিত অন্য কোন আনুষংগিক ব্যয়; 

(৫২) ‘বিধি’ অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি; 

(৫৩) ‘বিভাগীয় কমিশনার’ অর্থ সংশিষ্ট রাজস্ব প্রশাসনের প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং এই অধ্যাদেশের অধীনে সরকার কর্তৃক বিশেষভাবে নিয়োগকৃত যে কোন কর্মকর্তা যিনি বিভাগীয় কমিশনারের সকল কিংবা যে কোন কার্য পালন করিবেন; 

(৫৪) ‘ব্যাংক’ অর্থ- 
(ক) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (১৯৯১ সনের ১৪ নং আইন)-এর ধারা ৫(ণ) এ সংজ্ঞায়িত ব্যাংক কোম্পানী; বা, 
(খ) The Bangladesh Shilpa Rin Sangstha Order, 1972 (P. O. No. 128 of 1972), এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ঋণ সংস্থা; বা, 
(গ) The Bangladesh Shilpa Bank Order. 1972 (P. O. No. 129 of 1972) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক; বা, 
(ঘ) The Bangladesh House Building Finance Corporation Order, 1973 (P. O. No. 17 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন; বা, 
(ঙ) The Bangladesh Krishi Bank Order, 1973 (P. O. No. 27 of 1973) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক; বা, 
(চ) The Investment Corporation of Bangladesh Ordinance, 1976 (Ordinance No. XL of 1976) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ; বা, 
(ছ) The Rajshahi Krishi Unnayan Bank Ordinance, 1986 (Ordinance No. LVIII of 1986) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক; বা, 
(জ) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এর অধীন প্রতিষ্ঠিত Basic Bank Limited (Bangladesh Small Industries and Commerce Bank Limited)৷ 
(৫৫) ‘মালিক’ অর্থ কোন ব্যক্তি যিনি আপাততঃ জমি ও ইমারতের ভাড়া অথবা উহাদের যে কোন একটির ভাড়া নিজ দায়িত্বে অথবা কোন ব্যক্তির অথবা সমাজের অথবা কোন ধর্মীয় অথবা দাতব্য কাজের প্রতিনিধি অথবা ট্রাস্টি হিসাবে সংগ্রহ করেন অথবা জমি অথবা ইমারত ভাড়াটিয়ার নিকট ভাড়া প্রদান করিলে যিনি তাহা সংগ্রহ করিতেন বা করেন; 1[ (৫৫ক) “রাজনৈতিক দল” অর্থ Representation of the People Order, 1972 (P.O No. 155 of 1972) এর Article 2 (xixa) তে সংজ্ঞায়িত registered political party;] 

(৫৬) ‘রেইট’ অর্থ এই আইনের অধীন নির্ধারিত রেইট; 

(৫৭) ‘লাভজনক পদ’ অর্থ প্রজাতন্ত্র বা সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ বা সরকারের শতকরা পঞ্চাশ ভাগ বা তদূর্ধ্ব শেয়ার রহিয়াছে এইরূপ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীতে সার্বক্ষণিক বেতনভুক্ত পদ বা অবস্থান; 

(৫৮) ‘সচিব’ অর্থ পৌরসভার সচিব বা সাময়িকভাবে সচিবের দায়িত্ব পালনরত কোন ব্যক্তি; 

(৫৯) ‘সরকার’ অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; 

(৬০) ‘সরকারি রাস্তা’ অর্থ সরকার কিংবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণাধীন জনগণের চলাচলের জন্য যে কোন রাস্তা;

(৬১) ‘সড়ক রেখা’ অর্থে রাস্তা ধারণের ভূমি এবং রাস্তার অংশবিশেষ গঠনের ভূমি, পার্শ্ববর্তী ভূমি হইতে বিভক্তকারী রেখাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 2[(৬১ক) “স্বতন্ত্র প্রার্থী” অর্থ এইরূপ কোন প্রার্থী যিনি কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত নহেন;] 

(৬২) ‘সংক্রামক ব্যাধি’ অর্থে এমন ব্যাধি যাহা একজন ব্যক্তি হইতে অন্য ব্যক্তিকে সংক্রামিত করে এবং সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রকাশিত অন্য যে কোন ব্যাধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(৬৩) ‘সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ’ অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদে সংজ্ঞায়িত কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ; 

(৬৪) ‘সুয়ারেজ’ অর্থ একটি ড্রেনের মাধ্যমে বাহিত পয়ঃনিষ্কাশন, দূষিত পানি, বৃষ্টির পানি এবং নর্দমা বাহিত যে কোন দূষিত বা নোংরা দ্রব্য; 

(৬৫) ‘স্থানীয় কর্তৃপক্ষ’ অর্থ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা কোন আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত কোন বিধিবদ্ধ সংস্থা; 

(৬৬) ‘স্থানীয় পরিষদ’ অর্থ আইনের অধীন গঠিত পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশন; 

(৬৭) ‘স্থায়ী কমিটি’ অর্থ এই আইনের অধীন গঠিত পৌরসভার স্থায়ী কমিটি; 

(৬৮) ‘শহর এলাকা’ অর্থ পৌরসভা বা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এখতিয়ারাধীন এলাকা, এবং এই আইনের ধারা ৩ এর অধীন ঘোষিত শহর এলাকাও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; 

(৬৯) ‘হাট’ অর্থ পণ্য সামগ্রী, খাদ্য, মালামাল, পশু সম্পদ, ইত্যাদি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন ও সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।

২য় ভাগ

প্রথম অধ্যায়

পৌরসভা প্রতিষ্ঠা, পৌরসভা গঠন, ইত্যাদি

শহর এলাকা ঘোষণা

৩৷ (১) সরকার প্রয়োজনীয় তথ্য যেমন,
(ক) জনসংখ্যা,
(খ) জনসংখ্যার ঘনত্ব,
(গ) স্থানীয় আয়ের উৎস
(ঘ) অকৃষি পেশার শতকরা হার, এবং
(ঙ) এলাকার অর্থনৈতিক গুরুত্বসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণের পর সরকারি গেজেটে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে যে কোন পল্লী এলাকাকে শহর এলাকা ঘোষণা করিবার অভিপ্রায় ব্যক্ত করিতে পারিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিবার পূর্বে নিম্নবর্ণিত বিষয় সম্পর্কে এই মর্মে নিশ্চিত হইতে হইবে যে, ঘোষণাকৃত এলাকার-  
(ক) তিন-চতুর্থাংশ ব্যক্তি অকৃষি পেশায় নিয়োজিত;  
(খ) শতকরা ৩৩ ভাগ ভূমি অকৃষি প্রকৃতির;  
(গ) জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে গড়ে এক হাজার পাঁচশত এর কম নয়;  
(ঘ) জনসংখ্যা পঞ্চাশ হাজারের কম হইবে না।  


(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন শহর এলাকা ঘোষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হইবার পর ঐ এলাকার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ অনূর্ধ্ব এক মাসের মধ্যে উক্তরূপ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরকারের বরাবরে লিখিত আপত্তি উত্থাপন করিতে পারিবে।  

(৪) সরকার উপ-ধারা (৩) এর অধীন উত্থাপিত আপত্তি তিন মাসের মধ্যে নিষ্পন্ন করিবে এবং শহর এলাকা গঠনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হইলে সরকার উহা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।

পৌরসভা প্রতিষ্ঠা, ইত্যাদি

৪৷ (১) এই আইন প্রবর্তনের পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এবং এই আইন প্রবর্তনের তারিখে বিদ্যমান সকল পৌরসভা যেই নাম এবং এলাকা লইয়া গঠিত এই আইনের অধীন সেই নাম এবং এলাকা লইয়া গঠিত পৌরসভা বলিয়া গণ্য হইবে।  

(২) এই আইন বলবৎ হইবার পর সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ঘোষিত এক বা একাধিক শহর এলাকা সমন্বয়ে নূতন পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে এবং উক্ত পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত এলাকা পৌর এলাকা হিসাবে অভিহিত হইবে।  

(৩) পৌরসভা একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও তদধীন প্রণীত বিধি, প্রবিধি ও উপ-আইন বিধানাবলী সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করিবার, অধিকারে রাখিবার ও হস্তান্তর করিবার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার নামে মামলা দায়ের করিতে পারিবে এবং উক্ত নামে ইহার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা যাইবে।  

(৪) সরকার এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে- 
(ক) ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ব্যতীত, অন্যান্য শহর এলাকা সমন্বয়ে পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে;  
(খ) কোন পৌরসভার পৌর এলাকার সীমানা সংকোচন, সম্প্রসারণ বা অন্যরূপে পরিবর্তন বা সংশোধন করিতে পারিবে;  
(গ) পৌর এলাকা সংলগ্ন কোন শহর এলাকাকে পৌর এলাকার অন্তর্ভুক্ত করিতে পারিবে;  
(ঘ) কোন পৌর এলাকাকে বিভক্ত করিয়া দুই বা ততোধিক পৌর এলাকা করিতে পারিবে;  
(ঙ) দুই বা ততোধিক সন্নিকটের পৌর এলাকাকে একীভূত করিয়া একটি পৌর এলাকা করিতে পারিবে; এবং  
(চ) দুই বা ততোধিক পৌর এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণ করিতে পারিবে।

প্রশাসনিক ইউনিট হিসাবে পৌরসভা

৫৷ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৯ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি পৌরসভা একটি প্রশাসনিক একাংশ বা ইউনিট হিসাবে গণ্য হইবে।

পৌরসভা গঠন

৬৷ (১) এই আইন বলবৎ হইবার পর, যতশীঘ্র সম্ভব, প্রত্যেক পৌর এলাকায় এই আইনের বিধান অনুযায়ী একটি পৌরসভা গঠিত হইবে।  

(২) নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ সমন্বয়ে পৌরসভা গঠিত হইবে,
যথাঃ-  
(ক) মেয়র;  
(খ) সরকার কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক ওয়ার্ডের সমসংখ্যক কাউন্সিলর; এবং  
(গ) ধারা ৭ এর অধীন কেবল মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত নির্ধারিত সংখ্যক কাউন্সিলর। 

(৩) এই আইন এবং ইহার অধীন প্রণীত বিধি অনুসারে সরাসরি প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটের মাধ্যমে কোন পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরগণ নির্বাচিত হইবেন।  

(৪) মেয়র পৌরসভার একজন কাউন্সিলর হিসাবে গণ্য হইবেন।  

(৫) পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর এর দায়িত্ব, কার্যাবলী ও সুযোগ-সুবিধাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে। ব্যাখ্যা৷- এই উপ-ধারায় কাউন্সিলর অর্থে সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরও বুঝাইবে।

পরিষদে মহিলা প্রতিনিধিত্ব

৭৷ (১) প্রত্যেক পৌরসভার জন্য সরকার কর্তৃক ধারা ৬ এর উপ-ধারা (২)(খ) অনুযায়ী সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত সংখ্যক কাউন্সিলরের এক তৃতীয়াংশের সমসংখ্যক আসন, অতঃপর সংরক্ষিত আসন বলিয়া উল্লিখিত, মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে।  

(২) সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরগণ এই আইন এবং ইহার অধীনে প্রণীত বিধি অনুসারে সরাসরি প্রাপ্ত বয়স্কদের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হইবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোন কিছুই কোন মহিলাকে সংরক্ষিত আসন বহির্ভূত আসনে সরাসরি নির্বাচন করার অধিকারকে খর্ব করিবে না। ব্যাখ্যা৷- এই ধারার অধীন সংরক্ষিত আসনে সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, যদি উক্ত সংখ্যার ভগ্নাংশ থাকে এবং উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেক বা তদুর্ধ্ব হয়, তবে উহাকে পূর্ণ সংখ্যা বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং যদি উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেকের কম হয়, তবে উহাকে উপেক্ষা করিতে হইবে।

পৌরসভার মেয়াদ, ইত্যাদি

৮৷ (১) ধারা ৬ এর বিধান সাপেক্ষে, পৌরসভা গঠনের পর প্রথম সভার তারিখ হইতে পরবর্তী পাঁচ বৎসর পর্যন্ত উক্ত পৌরসভার মেয়াদ থাকিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও, নির্বাচিত নূতন পৌরসভা উহার প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত, পূর্ববর্তী পৌরসভার সদস্যগণ তাহাদের কার্য চালাইয়া যাইবে।  

(২) এই আইনে যাহা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেন, কোন পৌরসভার মোট কাউন্সিলরগণের শতকরা পঁচাত্তর ভাগের নির্বাচন এবং মেয়র নির্বাচন সম্পন্ন হইবার পর পৌরসভা যথার্থভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।  ব্যাখ্যাঃ এই উপ-ধারার অধীন শতকরা পঁচাত্তর ভাগ গণনায় ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে, শতকরা দশমিক পাঁচ শূন্যের কম ভগ্নাংশ হিসাবে নেওয়া হইবে না এবং শতকরা দশমিক পাঁচ শূন্য বা উহার বেশি ভগ্নাংশকে একক সংখ্যা ধরা হইবে।  

(৩) কোন পৌরসভা গঠিত হইবার পর ইহার প্রথম সভা এমন এক তারিখে অনুষ্ঠান করিতে হইবে যাহা সরকারি গেজেটে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণের নাম প্রকাশের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের পরে নহে।

পৌরসভার নামকরণ

৯৷ (১) সাধারণতঃ যেই এলাকায় পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হইবে সেই এলাকার নামেই পৌরসভার নামকরণ হইবে এবং কোন ব্যক্তির নামে নূতন করিয়া কোন পৌরসভার নামকরণ করা যাইবে না।  

(২) বিদ্যমান পৌরসভার ক্ষেত্রে, উক্ত পৌরসভার সম্মতি ব্যতিরেকে নাম পরিবর্তন করা যাইবে না।

পৌরসভার শ্রেণীবিন্যাস

১০৷ সরকার, সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি ও মানদণ্ডের ভিত্তিতে পৌরসভার শ্রেণীবিন্যাস করিতে পারিবে।

পৌরসভার বিলুপ্তি

১১৷ (১) এই আইনে যাহা কিছুই বলা থাকুক না কেন, এই আইন বলবৎ হইবার পর সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি প্রতীয়মান হয় যে, Paurashava Ordinance, 1977 (Ord. No. XXVI of 1977) এর অধীন ঘোষিত কোন পৌরসভা উক্ত অধ্যাদেশে বর্ণিত শর্তাবলী পূরণ করিতে ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহার বিলুপ্তি ঘোষণা করিতে পারিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ঘোষণা প্রদানের পূর্বে সংশ্লিষ্ট পৌরসভাকে প্রস্তাবিত বিলুপ্তিকরণের বিষয়ে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হইবে।  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন পৌরসভা বিলুপ্তির ঘোষণা সরকারি গেজেটে প্রকাশের সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উক্ত পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণের কার্যকালের অবসান হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।  

(৪) অনুরূপ বিলুপ্ত পৌরসভার সম্পদের দায়দেনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে।

মেয়র ও কাউন্সিলরগণের সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা

১২। মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও কাউন্সিলরগণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে পৌরসভা হইতে সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধাদি পাইবার অধিকারী হইবেন।

দ্বিতীয় অধ্যায়

ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা, ইত্যাদি

পৌর এলাকাকে ওয়ার্ডে বিভক্তিকরণ

১৩। পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচনের উদ্দেশ্যে সরকার, পৌরসভাকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডে বিভক্ত করিবে।

ওয়ার্ড কমিটি

১৪৷ (১) পৌর এলাকার প্রত্যেক ওয়ার্ডে অনধিক দশ সদস্য লইয়া, পরিষদের অনুমোদনক্রমে, ওয়ার্ড কমিটি গঠন করিতে হইবে এবং প্রতিটি ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর ঐ ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি হইবেন।  

(২) মোট দশ সদস্যের মধ্যে ৪০% সদস্য মহিলা হইবেন, তবে এই ব্যবস্থা অধিকতর কার্যকর করিবার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডের কার্য পর্যালোচনাপূর্বক পৌরসভা প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবে।  

(৩) ওয়ার্ড কমিটির কার্যপরিধি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে এবং, বিধি না হওয়া পর্যন্ত, পৌরসভা সাধারণ আদেশ দ্বারা উহা নির্ধারণ করিয়া দিবে।  

(৪) অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে ওয়ার্ড কমিটির অন্যতম কাজ হইবে উন্মুক্ত সভার মাধ্যমে ওয়ার্ডের নাগরিকগণকে পৌরসভার উন্নয়ন ও প্রশাসনিক কর্মসূচিতে সম্পৃক্ত করা।  

(৫) পৌরসভার মেয়াদকালীন সময়ের জন্য, পরবর্তী উত্তরাধিকারী দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত, ওয়ার্ড কমিটি কার্যকর থাকিবে।

সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ

১৫৷ (১) ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের মধ্য হইতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা ও সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবে৷  
(২) সহকারী সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তার অধীনে কার্য সম্পাদন করিবেন৷

ওয়ার্ডের সীমানা নির্ধারণ

১৬৷ (১) পৌরসভার ওয়ার্ড পুনর্বিন্যাসকালে যতদূর সম্ভব ভৌগলিক সম্পৃক্ততা সংরক্ষণ করিতে হইবে 3[***] ৷  

(২) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা সীমানা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবেন সেইরূপ রেকর্ডপত্র পরীক্ষা, তদন্ত, এবং এই বিষয়ে উপস্থাপিত প্রস্তাবসমূহ বিবেচনা করিতে পারিবেন এবং তিনি প্রস্তাবিত কোন্ এলাকা কোন ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত হইবে তাহা উল্লেখ করিয়া ওয়ার্ডসমূহের একটি প্রাথমিক তালিকা বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করিবেন।

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পনের দিনের মধ্যে আপত্তি অথবা পরামর্শের আহবান জানাইয়া বিজ্ঞপ্তিটি তাহার কার্যালয়ে ও পৌরসভার কার্যালয়ে এবং তাহার বিবেচনায় প্রয়োজনীয় অন্য কোন স্থান অথবা স্থানসমূহে প্রকাশ করিবেন।  

(৪) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা উপ-ধারা (২) এর অধীন প্রাপ্ত কোন আপত্তি বা পরামর্শ বিবেচনা করিবেন এবং প্রয়োজনবোধে ব্যক্তিগত শুনানি করিবেন এবং এই বিষয়ে তাহার সিদ্ধান্ত অনধিক পনের দিনের মধ্যে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জনগণকে জানাইয়া তাহার কপি সংশ্লিষ্ট ডেপুটি কমিশনার এবং সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।  

(৫) সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পনের দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার ডেপুটি কমিশনারের বরাবরে আপিল করা যাইবে এবং ডেপুটি কমিশনারকে পনের দিনের মধ্যে উক্ত আপিল নিষ্পত্তি করিতে হইবে।  

(৬) উপ-ধারা (৫) এর প্রেক্ষিতে সংশোধন, পরিবর্তন অথবা রূপান্তর, যদি থাকে, তাহা সম্পন্ন করিয়া সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা প্রত্যেক ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত এলাকাসমূহ উল্লেখ করিয়া স্বীয় দপ্তর, পৌরসভা কার্যালয় এবং স্বীয় বিবেচনায় আবশ্যিক ওয়ার্ডসমূহের চূড়ান্ত তালিকা অন্য যে কোন স্থানে প্রচার করিবেন এবং তালিকার সত্যায়িত অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং সরকার তাহা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে।  

(৭) সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনের উদ্দেশ্যে, সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তা এই ধারার অধীন কোন পৌরসভাকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওয়ার্ডে বিভক্তিকরণের সাথে সাথে, এই ধারার বিধানাবলী যথাসম্ভব অনুসরণ করিয়া, ঐ সকল ওয়ার্ডকে এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডরূপে চিহ্নিত করিবেন যেন এইরূপ সমন্বিত ওয়ার্ডের সংখ্যা সংরক্ষিত আসন সংখ্যার সমান হয়।

ভোটার তালিকা

১৭৷ (১) প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত একটি ভোটার তালিকা থাকিবে।  

(২) কোন ব্যক্তি কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকাভুক্ত হইবার অধিকারী হইবেন, যদি তিনি-  
(ক) বাংলাদেশের নাগরিক হন;  
(খ) আঠারো বৎসরের কম বয়স্ক না হন;  
(গ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত না হন; এবং  
(ঘ) সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বাসিন্দা বলিয়া গণ্য হন।

ভোটাধিকার

১৮৷ কোন ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় আপাততঃ যে ওয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হইবে, তিনি সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং মেয়র নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন।

তৃতীয় অধ্যায়

মেয়র ও কাউন্সিলরগণের যোগ্যতা-অযোগ্যতা, ইত্যাদি

মেয়র এবং কাউন্সিলরগণের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা

১৯৷ (১) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, মেয়র বা কাউন্সিলর নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি- 
(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন; 
(খ) তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হয়; 
(গ) মেয়রের ক্ষেত্রে যে কোন ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে; এবং 
(ঘ) সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলরসহ অন্যান্য কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটার তালিকায় তাহার নাম লিপিবদ্ধ থাকে। 
(২) কোন ব্যক্তি মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হইবার জন্য এবং উক্তরূপ মেয়র বা কাউন্সিলর পদে থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি- 
(ক) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান; 
(খ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন; 
(গ) দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন; 
(ঘ) কোন ফৌজদারী বা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসর কাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে; 
(ঙ) প্রজাতন্ত্রের বা পৌরসভার অথবা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন; 
(চ) কোন বিদেশী রাষ্ট্র হইতে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এইরূপ বেসরকারি সংস্থার প্রধান কার্য নির্বাহী পদ হইতে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ বা পদচ্যুতির পর এক বৎসর অতিবাহিত না করিয়া থাকেন; 
(ছ) কোন সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ব্যতীত, সংশ্লিষ্ট পৌর এলাকায় সরকারকে পণ্য সরবরাহ করিবার জন্য বা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোন চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য, তাহার নিজ নামে বা তাহার ট্রাস্টি হিসাবে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তাহার সুবিধার্থে বা তাহার উপলক্ষ্যে বা কোন হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসাবে তাহার কোন অংশ বা স্বার্থ আছে এইরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়া থাকেন; ব্যাখ্যা৷- উপরি-উক্ত দফা (ছ) এর অধীন আরোপিত অযোগ্যতা কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না যেই ক্ষেত্রে-  (১) চুক্তিটিতে অংশ বা স্বার্থ তাহার উপর উত্তরাধিকারসূত্রে বা উইলসূত্রে প্রাপক, নির্বাহক বা ব্যবস্থাপক হিসাবে হস্তান্তরিত হয়, যদি না উহা হস্তান্তরিত হইবার পর ছয় মাস অতিবাহিত হয়; অথবা (২) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত কোন পাবলিক কোম্পানীর দ্বারা বা পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদিত হইয়াছে যাহার তিনি একজন শেয়ারহোল্ডার মাত্র, তবে উহার অধীন তিনি কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত পরিচালকও নহেন বা ম্যানেজিং এজেন্টও নহেন; অথবা (৩) তিনি কোন যৌথ হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসাবে চুক্তিটিতে তাহার অংশ বা স্বার্থ নাই এইরূপ কোন স্বতন্ত্র ব্যবসা পরিচালনাকালে পরিবারের অন্য কোন সদস্য কর্তৃক চুক্তি সম্পাদিত হইয়া থাকে৷ 
(জ) বা তাহার পরিবারের কোন সদস্য সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা পৌরসভার কোন বিষয়ে তাহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে; 
(ঝ) মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না; 
(ঞ) এমন কোন কোম্পানীর পরিচালক বা ফার্মের অংশীদারগণ যাহার কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত কোন ঋণ বা উহার কোন কিস্তি, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার তারিখে পরিশোধে খেলাপী হইয়াছেন; ব্যাখ্যা৷- উপরি-উক্ত দফা (ঝ) ও (ঞ) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে “ঋণ খেলাপী” অর্থ ঋণ গ্রহীতা ছাড়াও যিনি বা যাহাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানী বা ফার্ম Banker’s Book of Account এ ঋণ খেলাপী হিসাবে চিহ্নিত আছে তাহাদেরকেও বুঝাইবে। 
(ট) পৌরসভার নিকট হইতে গৃহীত কোন ঋণ গ্রহণ করেন এবং তা অনাদায়ী থাকে; 
(ঠ) সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী নির্ধারিত দায়কৃত অর্থ পৌরসভাকে পরিশোধ না করেন; 
(ড) অন্য কোন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা জাতীয় সংসদের সদস্য হন; 
(ঢ) কোন সরকারি বা আধা-সরকারি দপ্তর, কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকুরী হইতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ, ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া চাকুরীচ্যুত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং তাহার এইরূপ চাকুরিচ্যুত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসরের পর পাঁচ বৎসর কাল অতিক্রান্ত না হইয়া থাকে; 
(ণ) পৌরসভার তহবিল তসরুফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হন; 
(ত) বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ১৮৯ ও ১৯২ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন; 
(থ) বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ২১৩, ৩৩২, ৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন; 
(দ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন; 4[ ***] 
(ধ) কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন 5[ ; 
(ন) মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিলকৃত হলফনামায় কোন অসত্য তথ্য প্রদান করেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন তথ্য গোপন করেন।] 

(৩) প্রত্যেক মেয়র বা কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়, এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা (২) এর অধীন তিনি মেয়র বা কাউন্সিলর নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।

চতুর্থ অধ্যায়

নির্বাচন, নির্বাচনী বিরোধ, ইত্যাদি

নির্বাচনের সময়, ইত্যাদি

২০৷ (১) পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ড হইতে একজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হইবে।  
(২) নিম্নবর্ণিত সময়ে পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে –  
(ক) পৌরসভা প্রথমবার গঠনের ক্ষেত্রে, এই আইন বলবৎ হইবার পরবর্তী একশত আশি দিনের মধ্যে;  
(খ) পৌরসভার মেয়াদ শেষ হইবার ক্ষেত্রে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার পূর্ববর্তী নব্বই দিনের মধ্যে;  
(গ) পৌরসভা বাতিলের ক্ষেত্রে, বাতিলাদেশ জারির পরবর্তী একশত আশি দিনের মধ্যে।নির্বাচনে অংশগ্রহণ6[২০ক। ধারা ১৯ এর বিধান সাপেক্ষে, কোন পৌরসভার মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হইতে হইবে।]

নির্বাচন পরিচালনা

২১। (১) নিবার্চন কমিশন কতৃর্ক প্রণীত বিধি অনুসারে নিবার্চন কমিশন পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর নিবার্চনের আয়োজন, পরিচালনা ও সম্পাদনা করিবে এবং অনুরূপ বিধিতে নিবার্চন কমিশন নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে, যথাঃ-    
(ক) নিবার্চন পরিচালনার উদ্দেশ্যে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;    
(খ) প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে হলফনামা দাখিল, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;   7[(খখ) রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়;]   
(গ) প্রার্থী কতৃর্ক প্রদেয় জামানত এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;    
(ঘ) প্রার্থীপদ প্রত্যাহার ও প্রতীক বরাদ্দ;    
(ঙ) প্রার্থীর এজেন্ট নিয়োগ;    
(চ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নিবার্চন পদ্ধতি;    
(ছ) ভোট গ্রহণের তারিখ, সময় ও স্থান এবং নিবার্চন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;    
(জ) ভোট প্রদান পদ্ধতি;    
(ঝ) ভোট বাছাই ও গণনা, ফলাফল ঘোষণা এবং সমসংখ্যক ভোটের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় পদ্ধতি;    
(ঞ) ব্যালট পেপার এবং নিবার্চন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলি বন্টন;    
(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;    
(ঠ) প্রার্থীদের নিবার্চন ব্যয় এবং এতদ্সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;    
(ড) ভোট গ্রহণের দিন নিবার্চন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের গ্রেফতার করিবার ক্ষমতা;    
(ঢ) নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কাযর্কলাপ ও অন্যান্য নিবার্চনী অপরাধ ও উহার দণ্ড; এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আচরণ বিধি ভঙ্গের দণ্ড।    
(ণ) নিবার্চনী বিরোধ এবং উহার বিচার ও নিষ্পত্তি;    
(ত) অপরাধ বিচারার্থে আমলে গ্রহণ, নিবার্চন কমিশনের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কতিপয় ব্যক্তির ম্যাজিষ্ট্রেটের ক্ষমতা প্রয়োগ, কতিপয় মামলার মেয়াদ সংক্রান্ত বিষয়াদি;    
(থ) গাড়ি হুকুম দখলের ক্ষমতা, নিবার্চন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বদলী, কতিপয় ক্ষেত্রে নিবার্চন কমিশনের ভোট গ্রহণ বন্ধ রাখিরার ক্ষমতা এবং নিবার্চন পযবের্ক্ষক নিয়োগে নিবার্চন কমিশনের ক্ষমতা; এবং    
(দ) নিবার্চন সম্পর্কিত আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয়। (২) উপ-ধারা (১) এর দফা (ঢ) এর ক্ষেত্রে বিধিতে কারাদণ্ড, অর্থ দণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ড বা, ক্ষেত্রমত, প্রার্থিতা বাতিল সংক্রান্ত বিধান করা যাইবেঃ    তবে শর্ত থাকে যে, নিবার্চনী অপরাধের জন্য কারাদণ্ডের মেয়াদ অন্যূন ছয় মাস এবং অনধিক সাত বৎসর এবং আচরণ বিধির কোন বিধান লংঘনের জন্য কারাদণ্ডের মেয়াদ অনধিক ছয় মাস বা অনধিক পঞ্চাশ হাজার টাকার অর্থ দণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডের বিধান করা যাইবে।

নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশ

২২৷ মেয়র এবং কাউন্সিলর হিসাবে নির্বাচিত সকল ব্যক্তির নাম নির্বাচন কমিশন, যথাশীঘ্র সম্ভব, সরকারি গেজেটে প্রকাশ করিবে৷

নির্বাচনী দরখাস্ত দাখিল

২৩৷ (১) এই আইনের অধীন অনুষ্ঠিত কোন নির্বাচন বা গৃহীত নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না। 

(২) কোন নির্বাচনের প্রার্থী ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত নির্বাচন বা নির্বাচনী কার্যক্রম বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে আবেদন করিতে পারিবেন না।  

(৩) এই আইনের ধারা ২৪ এর অধীনে গঠিত নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বরাবরে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্বাচনী অভিযোগপত্র পেশ করিতে হইবে।  

(৪) কোন আদালত-  
(ক) পৌরসভার কোন মেয়র বা কাউন্সিলরের নিবার্চন মূলতবী রাখিতে;  
(খ) এই আইনের অধীন নিবার্চিত কোন পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলরকে তাহার দায়িত্ব গ্রহণে বিরত রাখিতে;  
(গ) এই আইনের অধীন নিবার্চিত কোন পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলরকে তাহার কাযার্লয়ে প্রবেশ করা হইতে বিরত রাখিতে-  নিষেধাজ্ঞা জারি করিতে পারিবে না।

নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন

২৪। (১) এই আইনের অধীন নিবার্চন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য নিবার্চন কমিশন একজন উপযুক্ত পদমযার্দার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিবার্চন ট্রাইব্যুনাল এবং একজন উপযুক্ত পদমযার্দার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিবার্চন আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করিবে।  

(২) পৌরসভা নিবার্চনের ফলাফল গেজেটে প্রকাশের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে নিবার্চন বা নিবার্চনী কার্যক্রম বিষয়ে আপত্তি উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নিবার্চন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা যাইবে এবং উক্তরূপে কোন মামলা দায়ের করা হইলে নিবার্চন ট্রাইব্যুনাল মামলা দায়ের হইবার তারিখ হইতে একশত আশি দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।  

(৩) নিবার্চন ট্রাইব্যুনালের রায়ে কোন ব্যক্তি সংক্ষুদ্ধ হইলে উক্ত ব্যক্তি রায় ঘোষণার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে নিবার্চন আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করিতে পারিবেন এবং উক্তরূপে কোন আপিল দায়ের করা হইলে নিবার্চন আপিল ট্রাইব্যুনাল আপিল দায়ের হইবার তারিখ হইতে একশত বিশ দিনের মধ্যে উহা নিষ্পত্তি করিবে।  

(৪) নিবার্চন আপিল ট্রাইব্যুনালের রায় চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।

নির্বাচনী দরখাস্ত, আপিল নিষ্পত্তি

২৫৷ নির্বাচনী দরখাস্ত ও আপিল দায়েরের পদ্ধতি, ট্রাইব্যুনাল ও আপিল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি, এখতিয়ার, ক্ষমতা, প্রতিকার এবং আনুষঙ্গিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

নির্বাচনী দরখাস্ত স্থানান্তর

২৬৷ নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা এতদুদ্দেশ্যে কোন এক পক্ষের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে মামলার যে কোন পর্যায় কোন নির্বাচনী দরখাস্ত বা আপিল এক ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে অথবা ক্ষেত্রমত, এক আপিল ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করিতে পারিবে; এবং স্থানান্তরিত দরখাস্ত বা আপিল যে পর্যায়ে স্থানান্তর করা হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচার কার্য চলিতে থাকিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী দরখাস্ত বা আপিল যে ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষীকে পুনরায় তলব বা পরীক্ষা করিতে পারিবে।

পঞ্চম অধ্যায়

শপথ, সম্পত্তির ঘোষণা, অপসারণ, ইত্যাদি

শপথ বা ঘোষণা

২৭৷ (১) মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত ব্যক্তি তাহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রথম তফসিলে বর্ণিত ছকে সরকার কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা প্রদান করিবেন এবং শপথ বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর দান করিবেন।

(২) মেয়র এবং কাউন্সিলরগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবার 8[বিশ দিনের] মধ্যে সরকার বা তদ্‌কর্তৃক মনোনীত কর্তৃপক্ষ মেয়র ও সকল কাউন্সিলরকে শপথ গ্রহণ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা প্রদানের ব্যবস্থা করিবে।

সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা

২৮৷ (১) মেয়র এবং প্রত্যেক কাউন্সিলরকে, শপথ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা প্রদানের সময় ট্যাক্সপেয়ার’স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরসহ (টি.আই.এন), যদি থাকে, সংশ্লিষ্ট কর অফিসে দাখিলকৃত ও গৃহীত তাহার এবং তাহার পরিবারের সদস্যদের দেশে ও বিদেশে অবস্থিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সর্বশেষ বিবরণ, একটি হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করিতে হইবে।  

(২) সংশ্লিষ্ট কর অফিসে দাখিলকৃত ও গৃহীত টি.আই.এন, যদি থাকে, সম্বলিত সম্পত্তির সর্বশেষ হিসাব দাখিল করিতে না পারিলে বা করা না হইলে মেয়র এবং প্রত্যেক কাউন্সিলর শপথ গ্রহণ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণার সময় তাহার এবং তাহার পরিবারের যে কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ হলফনামার মাধ্যমে দাখিল করিবেন।  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে দাখিলকৃত হলফনামা এবং উপ-ধারা (২) এর অধীন দাখিলকৃত লিখিত বিবরণ অসত্য প্রমাণিত হইলে, ক্ষেত্রবিশেষে, মেয়র বা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে, অসদাচরণের অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।  ব্যাখ্যাঃ – এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, ‘‘পরিবারের সদস্য’’ বলিতে সংশ্লিষ্ট মেয়র বা পৌর কাউন্সিলরে স্ত্রী বা স্বামী এবং তাহার সহিত বসবাসকারী এবং তাহার উপর সম্পূর্ণরূপে নির্ভরশীল পিতা, মাতা, পুত্র, কন্যা, সৎপুত্র, সৎকন্যা, ভ্রাতা ও ভগ্নিকে বুঝাইবে।

একাধিক পদে প্রার্থিতায় বাধা

২৯৷ (১) কোন ব্যক্তি একই সাথে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হইতে পারিবেন না।  

(২) যদি কোন ব্যক্তি একই সাথে কোন পৌরসভার একাধিক পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন, তাহা হইলে তাহার সকল মনোনয়নপত্র বাতিল হইবে।  

(৩) পৌরসভার মেয়াদকালে কোন কারণে মেয়র পদ শূন্য হইলে, কোন কাউন্সিলর মেয়রের পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে পারিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত কাউন্সিলরকে স্বীয় পদ ত্যাগ করিয়া প্রতিদ্বন্দ্বিতা করিতে হইবে।

মেয়র ও কাউন্সিলরের পদত্যাগ

৩০৷ (১) কোন কাউন্সিলর পৌরসভার মেয়র বরাবর তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং ঐরূপ পদত্যাগপত্র মেয়র কর্তৃক গৃহীত হওয়ার সাথে সাথে উক্ত কাউন্সিলরের পদ শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) মেয়র সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কর্মকর্তার নিকট তাহার পদত্যাগ করিবার অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করিয়া পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং উহার একটি অনুলিপি সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরণ করিবেন এবং উক্তরূপ পদত্যাগ নির্দিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক প্রাপ্তির তারিখ হইতে কার্যকর হইবে।  

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন পদত্যাগের বিষয়টি সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অনধিক তিন দিনের মধ্যে পরিষদ, নির্বাচন কমিশন এবং সরকারকে অবহিত করিবেন।

মেয়র ও কাউন্সিলরের সাময়িক বরখাস্ত

৩১৷ (১) যেক্ষেত্রে কোন পৌরসভার মেয়র অথবা কোন কাউন্সিলর অপসারণের কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা তাহার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলায় অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হইয়াছে, সেই ক্ষেত্রে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের বিবেচনায় মেয়র অথবা কাউন্সিলর কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ পৌরসভার স্বার্থের পরিপন্থী অথবা প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন না হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র অথবা কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে সাময়িকভাবে বরখাস্তকৃত মেয়র, তাহার অনুপস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব পালনের জন্য জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে মেয়রের প্যানেলের সদস্যের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত মেয়রের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা মেয়র অপসারিত হইলে তাহার স্থলে নূতন মেয়র নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র দায়িত্ব পালন করিয়া যাইবেন।  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীনে পৌরসভার কোন কাউন্সিলরকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত কাউন্সিলর অপসারিত হইলে তাহার স্থলে নূতন কাউন্সিলর নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পৌর পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে একজন কাউন্সিলর সাময়িকভাবে উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।

মেয়র ও কাউন্সিলর অপসারণ

৩২৷ (১) মেয়র অথবা কাউন্সিলর তাহার নিজ পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি তিনি-  
(ক) পৌরসভার নোটিশ প্রাপ্তি সত্ত্বেও যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;  
(খ) পৌরসভা বা রাষ্ট্রের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন অথবা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দণ্ডিত হন;  
(গ) দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;  
(ঘ) অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন;  
(ঙ) নির্বাচনের পর ইহা প্রমাণিত হয় যে, তিনি ধারা ১৯ (২) অনুযায়ী নির্বাচনে অযোগ্য ছিলেন;  
(চ) বার্ষিক ১২ টি মাসিক সভার স্থলে অন্যূন নয়টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত অনুষ্ঠান করিতে বা উপস্থিত থাকিতে ব্যর্থ হন;  
(ছ) তিনি নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করেন কিংবা দাখিলকৃত হিসাবে অসত্য তথ্য প্রদান করিয়াছেন বলিয়া উহা দাখিলের ছয় মাসের মধ্যে প্রমাণিত হয় 9[;  
(জ) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর হইতে পৌরসভার মেয়াদকালের মধ্যে যে কোন সময় যদি প্রমাণিত হয় যে, কোন নির্বাচিত প্রার্থী মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিলকৃত সাতটি তথ্য সম্বলিত হলফনামায় কোন অসত্য তথ্য প্রদান করিয়াছেন বা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন তথ্য গোপন করিয়াছেন। ]  ব্যাখ্যা৷- এই উপ-ধারায় বর্ণিত ‘অসদাচরণ’ বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার, ধারা ২৮ অনুযায়ী সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা প্রদান না করা কিংবা অসত্য হলফনামা দাখিল করা, এবং বিধি-নিষেধ পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি, অসদুপায়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ, পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, ইচ্ছাকৃত অপশাসন, ইত্যাদি বুঝাইবে।  

(২) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কারণে মেয়র বা কাউন্সিলরকে অপসারণ করিতে পারিবে।  

(৩) অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, অভিযোগের তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট মেয়র বা কাউন্সিলরকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।  

(৪) একজন মেয়র বা কাউন্সিলর উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ কিংবা উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী অপসারণের প্রস্তাব নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদন লাভের পর তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।  

(৫) পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলরকে উপ-ধারা (১) এর অধীন তাহার পদ হইতে অপসারিত করা হইলে, তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোন কর্তৃপক্ষের নিকট এই আদেশের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে আপিল করিতে পারিবেন।  

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন আপিল করা হইলে আপিল কর্তৃপক্ষ উহা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপ-ধারা (২) এ প্রদত্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আপিলকারীর বক্তব্য প্রদানের সুযোগ প্রদানের পর ঐ আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।  

(৭) উপ-ধারা (৬) এর অধীন আপিল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত হইবে।  

(৮) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কার্যকালের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য কোন পদে নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।

মেয়র এবং কাউন্সিলরের পদ শূন্য হওয়া এবং পুনঃনির্বাচন

৩৩৷ (১) পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর পদ শূন্য হইবে, যদি তিনি-  
(ক) ধারা ১৯ (২) এর অধীনে মেয়র অথবা কাউন্সিলর থাকিবার অযোগ্য হন; বা,  
(খ) ধারা ২৭ এ নির্দেশিত সময়ের মধ্যে শপথ গ্রহণ বা ধারা ২৮ এর অধীনে হলফনামা দাখিল করিতে ব্যর্থ হন; বা,  
(গ) ধারা ৩০ অনুযায়ী পদত্যাগ করেন; বা,  
(ঘ) ধারা ৩২ অনুযায়ী অপসারিত হন; বা,  
(ঙ) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন; বা,  
(চ) মৃত্যুবরণ করেন।  (২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পৌরসভার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্ববর্তী একশত আশি দিনের পূর্বে কোন মেয়র বা কাউন্সিলরের পদ শূন্য হইলে, পদটি শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে পূরণ করিতে হইবে, এবং যিনি উক্ত পদে নির্বাচিত হইবেন তিনি পৌরসভার কেবল অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকিবেন।

মেয়রের দায়িত্ব ও দলিল দস্তাবেজ হস্তান্তর

৩৪৷ নির্বাচনের পর নির্বাচিত মেয়র, অথবা প্যানেল মেয়র বা অন্য কোন কাউন্সিলর মেয়রের দায়িত্ব পালন করিতে থাকিলে, পূর্ববর্তী মেয়র বা প্যানেল মেয়র বা মেয়রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর তাঁহার দখলে বা নিয়ন্ত্রণে থাকা পৌরসভার সকল নগদ অর্থ, পরিসম্পদ, দলিল দস্তাবেজ, রেজিস্টার ও সীলমোহর যত শীঘ্র সম্ভব অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্মকর্তা কর্তৃক স্থিরীকৃত তারিখ, সময় ও স্থানে নূতন নির্বাচিত মেয়র বা ক্ষেত্রমত মনোনীত প্যানেল মেয়র বা মেয়রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলরের নিকট পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, সচিবের উপস্থিতিতে বুঝাইয়া দিবেন।

মেয়র ও কাউন্সিলরের সদস্যপদ পুনর্বহাল

৩৫৷ পৌরসভার কোন নির্বাচিত মেয়র বা কাউন্সিলর এই আইনের বিধান অনুসারে অযোগ্য ঘোষিত হইয়া অথবা অপসারিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর আপিলে তাহার উক্তরূপ অপসারণ বাতিল হইলে, বা তাহার অযোগ্যতা অবলোপন হইলে, তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্ব-পদে বহাল হইবেন।

ব্যত্যয়ের দণ্ড

৩৬। যদি কোন মেয়র বা প্যানেল মেয়র বা মেয়রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন কাউন্সিলর ধারা ৩৪ এর অধীন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করিতে ব্যর্থ হন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২০,০০০ (বিশ হাজার) টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।মেয়র ও কাউন্সিলরের অধিকার ও দায়বদ্ধতা

৩৭৷ (১) পৌরসভার মেয়র ও প্রত্যেক কাউন্সিলর এই অাইন ও সংশ্লিষ্ট বিধানাবলী সাপেক্ষে পৌরসভার সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে।   

(২) পরিষদের প্রত্যেক সদস্য বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌরসভার মেয়র অথবা সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সভাপতির নিকট পরিষদের বা স্থায়ী কমিটির প্রশাসনিক এখতিয়ারভুক্ত বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন বা ব্যাখ্যা দাবি করিতে পারিবেন।  

(৩) পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলর পৌরসভা কর্তৃক অথবা অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়িত কোন কাজ বা প্রকল্পের ত্রুটি বিচ্যুতি সম্পর্কে পৌরসভার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারিবে।  

(৪) মেয়র এবং কাউন্সিলর এই আইনের বিধান অনুযায়ী জনস্বার্থে পৌরসভার কার্য পরিচালনা করিবেন এবং পরিষদের নিকট যৌথভাবে দায়ী থাকিবেন।

অনাস্থা প্রস্তাব

৩৮৷ (১) এই আইনের কোন বিধান লঙ্গন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে বা শারীরিক ও মানসিক অসামর্থ্যের কারণে মেয়র বা কোন কাউন্সিলরকে তাহার পদ হইতে অপসারণের লক্ষ্যে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে।  

(২) যে কোন একজন কাউন্সিলর ব্যক্তিগতভাবে উপ-ধারা (১) এর অধীন অনাস্থা প্রস্তাব আনয়নের ক্ষেত্রে পৌরসভার মোট সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরের স্বাক্ষরিত নোটিশ, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়োগকৃত একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার নিকট দাখিল করিতে হইবে।  

(৩) অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির পর উক্ত কর্মকর্তা এক মাসের মধ্যে অভিযোগসমূহ তদন্ত করিবেন এবং তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হইলে দশ কার্যদিবসের সময় দিয়ে তিনি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন।  

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হইলে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা নোটিশ প্রাপ্তির অনধিক পনের কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য এতদুদ্দেশ্যে নির্বাচিত কাউন্সিলরগণের সভা আহবান করিবেন অথবা মেয়রকে সভা আহবানের জন্য অনুরোধ করিবেন এবং সকল নির্বাচিত কাউন্সিলরগণের নিকট সভার নোটিশ প্রেরণ নিশ্চিত করিবেন।  

(৫) মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে মেয়রের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন কাউন্সিলর এবং কোন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে পৌরসভার মেয়র সভায় সভাপতিত্ব করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, মেয়র অনুপস্থিত থাকিলে বা অন্য কোন কারণে তাহাকে পাওয়া না গেলে উপস্থিত কাউন্সিলরগণের মধ্য হইতে একজন কাউন্সিলরকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সভাপতি নির্বাচিত করা যাইবে।  

(৬) উপ-ধারা (২) এর অধীন নিয়োগকৃত কর্মকর্তা সভায় একজন পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন।  

(৭) এই ধারার উদ্দেশ্যে আহুত সভাটি নিয়ন্ত্রণ বর্হিভূত কোন কারণ ব্যতীত স্থগিত করা যাইবে না এবং মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার অর্ধেক সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।  

(৮) সভার শুরুতে সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবটি সভায় পাঠ করিয়া শুনাইবেন এবং উন্মুক্ত আলোচনা আহবান করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণ ছাড়া এই ধরনের উন্মুক্ত আলোচনা বা বিতর্ক স্থগিত করা যাইবে না।  

(৯) সভা শুরু হইবার তিন ঘন্টার মধ্যে বিতর্ক বা উন্মুক্ত আলোচনা সমাপ্ত না হইলে, অনাস্থা প্রস্তাবটির উপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে।  

(১০) সভার সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রকাশ্য মতামত প্রকাশ করিবেন না এবং তিনি ব্যালটের মাধ্যমে উপ-ধারা

(৯) এর অধীন ভোট প্রদান করিতে পরিবেন, তবে সভাপতি দ্বিতীয় বা নির্ণায়ক ভোট দিতে পারিবেন না।  

(১১) নিয়োগকৃত কর্মকর্তা সভা শেষ হওয়ার পর পরই অনাস্থা প্রস্তাবের কপি এবং ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।  

(১২) অনাস্থা প্রস্তাবটি পৌরসভার মোট সদস্য সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হইলে সংশ্লিষ্ট মেয়র বা কাউন্সিলরের আসনটি সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা শূন্য বলিয়া ঘোষণা করিবে।  

(১৩) অনাস্থা প্রস্তাবটি মোট সদস্য সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত না হইলে অথবা কোরামের অভাবে সভা অনুষ্ঠিত না হইলে উক্ত তারিখের পর ছয় মাস অতিক্রান্ত না হইলে অনুরূপ কোন অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিশ প্রদান করা যাইবে না।  

(১৪) পৌরসভার মেয়র বা কোন কাউন্সিলর দায়িত্বভার গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে তাহার বিরুদ্ধে অনাস্থা নোটিশ আনয়ন করা যাইবে না।

মেয়র ও কাউন্সিলরের অনুপস্থিতির ছুটি

৩৯৷ (১) মেয়র অথবা কাউন্সিলরকে পরিষদ যুক্তিসঙ্গত কারণে এক বৎসরে সর্বোচ্চ তিন মাস ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবে।  

(২) কোন কাউন্সিলর ছুটিতে থাকিলে বা অন্য কোন কারণে অনুপস্থিত থাকিলে উক্ত অনুপস্থিতকালীন সময়ের জন্য পৌরসভার মেয়র পার্শ্ববর্তী যে কোন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে দায়িত্ব প্রদান করিতে পারিবেন।  

(৩) কোন মেয়র অথবা কাউন্সিলরের উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত ছুটির অতিরিক্ত সময়ের জন্য ছুটির প্রয়োজন হইলে সরকার উক্ত অতিরিক্ত সময়ের ছুটি মঞ্জুর করিতে পারিবে।

মেয়রের প্যানেল

৪০৷ (১) পৌরসভা গঠিত হইবার পর অনুষ্ঠিত প্রথম সভার এক মাসের মধ্যে কাউন্সিলরগণ অগ্রাধিকারক্রমে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি মেয়রের প্যানেল তাহাদের নিজেদের মধ্য হইতে নির্বাচন করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচিত তিন জনের মেয়রের প্যানেলের মধ্যে একজন সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর হইতে হইবে।  

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য যে কোন কারণে মেয়র দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত মেয়রের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন কাউন্সিলর মেয়রের দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃত্যু অথবা অন্য যে কোন কারণে মেয়রের পদ শূন্য হইলে নূতন মেয়রের কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত মেয়রের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন কাউন্সিলর মেয়রের দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী মেয়রের প্যানেলভুক্ত কোন সদস্য অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে অসম্মতি জ্ঞাপনের তারিখ হইতে অনধিক এক মাসের মধ্যে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে তাহার স্থলাভিষিক্ত হইবার জন্য কোন কাউন্সিলরকে মেয়রের প্যানেলভুক্ত করিতে হইবে।  

(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) এর অধীন সদস্যগণের মধ্য হইতে মেয়রের প্যানেল নির্বাচন করা না হইলে সরকার প্রয়োজন অনুসারে মেয়রের প্যানেল তৈরি করিতে পারিবে।

পদত্যাগ, অপসারণ, ইত্যাদি গেজেটে প্রকাশ

৪১৷ পৌরসভার নির্বাচন, মেয়র এবং কাউন্সিলর এর পদত্যাগ ও অপসারণ অথবা শূন্যপদ সম্পর্কে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারি করিতে হইবে।

অবস্থা বিশেষে প্রশাসক নিয়োগ

৪২৷ (১) কোন শহর এলাকাকে পৌর এলাকা ঘোষণার পর পৌরসভার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ করিবে এবং পৌরসভা গঠন না হওয়া পর্যন্ত উক্ত প্রশাসক প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(২) সরকার, প্রয়োজনবোধে, প্রশাসকের কর্ম সম্পাদনে সহায়তা প্রদানের জন্য যথাযথ বলিয়া বিবেচিত হয় এমন সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত কমিটি নিয়োগ করিতে পারিবে। 

(৩) প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যবৃন্দ, যদি থাকে, যথাক্রমে মেয়র ও কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে। 

(৪) এই আইনে যাহা কিছু থাকুক না কেন, উপ-ধারা (১) এর অধীন নিযুক্ত পৌর প্রশাসক কোনক্রমেই একের অধিক বার বা ১৮০ (একশত আশি) দিনের অধিক সময়কাল দায়িত্বে থাকিতে পারিবেন না।

কতিপয় ব্যক্তি কাউন্সিলর বিবেচিত হইবেন

৪৩৷ এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন পল্লী এলাকাকে শহর এলাকা ঘোষণার পর পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হইলে সেই এলাকা হইতে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা সদস্য পৌরসভার কাউন্সিলর হিসাবে বিবেচিত হইবেন৷

ষষ্ঠ অধ্যায়

পৌরসভার সম্পত্তি, চুক্তি, ইত্যাদি

পৌরসভার সম্পত্তি

৪৪৷ (১) সরকার বিধি দ্বারা-  
(ক) পৌরসভার মালিকানাধীন অথবা উহার উপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়নের জন্য বিধান করিতে পারিবে;  
(খ) উক্ত সম্পত্তির হস্তান্তর নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;  
(গ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পৌরসভার প্রয়োজনে স্থাবর সম্পত্তির বাধ্যতামূলক অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করিতে পারিবে;  
(ঘ) এই আইন অথবা বিধির উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অনুরূপ সম্পত্তি সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে লাগাইতে পারিবে৷  

(২) পৌরসভা-  (ক) নিজস্ব অথবা সরকার অথবা অন্য কর্তৃপক্ষ হইতে প্রাপ্ত সম্পত্তির সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নতি সাধন করিতে পারিবে;  
(খ) উন্নয়ন জরিপের মাধ্যমে ইহার নিয়ন্ত্রণাধীন সকল সম্পত্তির বিবরণাদি প্রস্তত করিয়া প্রতি বৎসর ইহা হালনাগাদ করিবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সম্পদের বিবরণী, মানচিত্র প্রস্তত করিয়া ইহার একটি অনুলিপি সরকার নিকট প্রেরণ করিবে;  
(গ) দান, ক্রয় অথবা অন্য কোন পন্থায় স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি অর্জন করিতে পারিবে;  
(ঘ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পৌরসভার সীমানার বাহিরেও সম্পত্তি অর্জন আবশ্যক হইলে সরকারের অনুমোদনক্রমে সম্পত্তি অর্জন করিতে পারিবে৷

রাস্তার নিকটবর্তী জমির অধিগ্রহণ

৪৫৷ (১) জনস্বার্থে কোন রাস্তার নিকটবর্তী জমি অধিগ্রহণ করিবার প্রয়োজন অনুভূত হইলে পৌরসভা সরকারের অনুমোদন গ্রহণ করিয়া প্রয়োজনীয় পরিমাণ জমি আইনানুগ বিধান অনুসরণে অধিগ্রহণ করিতে পারিবে৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে পৌরসভা নির্ধারিত আইন অনুযায়ী অধিগ্রহণের সম্পূর্ণ ব্যয় বহন করিবে৷

সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা

৪৬৷ (১) পৌরসভা নিম্নবর্ণিত পদ্ধতিতে উহার সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা করিতে পারিবে, যথাঃ-  (ক) পরিষদের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করিয়া ইজারা প্রদান অথবা বিক্রয় করিতে পারিবে এবং অস্থাবর সম্পত্তি একই প্রক্রিয়ায় ইজারা অথবা ভাড়ায় ব্যবহার করিতে পারিবে;  
(খ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোন সম্পত্তি বিক্রয় অথবা হস্তান্তর করিতে পারিবে যদি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ইহার ফলে পৌরসভা অধিকতর লাভবান হইবে এবং সংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পত্তি এই আইনের কোনো উদ্দেশ্য, কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনে পৌরসভার প্রয়োজনে আসিবে না৷  

(২) সরকার অথবা সরকারি কোনো বিভাগ বা সংস্থা হইতে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিক্রয় করা যাইবে৷দায়দেনা আদায়৪৭৷ পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, পৌরসভার সচিব সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং পৌরসভার প্রশাসনিক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত অথবা পৌরসভার পক্ষে কর্মরত প্রত্যেক ব্যক্তি তাহার অবহেলা অথবা অসদাচরণের প্রত্যক্ষ পরিণামে পৌরসভার কোন অর্থ অথবা ইহার মালিকানাধীন সম্পত্তির ক্ষতি, অপচয় অথবা অপব্যবহারের জন্য দায়ী বলিয়া প্রমাণিত হইলে তাহা সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে৷

চুক্তি

৪৮৷ পৌরসভা কর্তৃক অথবা ইহার পক্ষে সম্পাদিত সকল চুক্তি –  
(ক) লিখিত হইবে এবং পৌরসভার নামে সম্পাদিত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশিত হইবে;  
(খ) সম্পাদনের পূর্বে পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হইবে; এবং  
(গ) চুক্তি সম্পাদনের পর অনুষ্ঠিত পরবর্তী সভায় মেয়র কর্তৃক তাহা পরিষদকে অবহিত করিতে হইবে৷

৩য় ভাগ

প্রথম অধ্যায়

পরিষদ, বাতিল ও পুনঃ নির্বাচন

পরিষদ বাতিল ও পুনঃনির্বাচন

৪৯৷ (১) সরকার, নিম্নবর্ণিত কারণে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা কোন পরিষদ বাতিল ঘোষণা করিতে পারিবে, যথাঃ-  
(ক) কোন পৌরসভা চলতি অর্থ বৎসর শেষ হওয়ার পূর্বে পরবর্তী বৎসরের বাজেট পাশ করিতে ব্যর্থ হইলে; অথবা  
(খ) পৌরসভার ৭৫% নির্বাচিত কাউন্সিলর পদত্যাগ করিলে; অথবা  
(গ) পৌরসভার ৭৫% নির্বাচিত কাউন্সিলর এই আইনের বিধান অনুসারে অযোগ্য হওয়ার কারণে অপসারিত হইলে; এবং  
(ঘ) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতীত বৎসরে ধার্যকৃত মোট কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস, ইত্যাদি কমপক্ষে ৭৫% আদায় করিতে ব্যর্থ হইলে৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন পৌরসভা বাতিল করিবার পূর্বে সংশ্লিষ্ট পৌরসভাকে যুক্তিসংগতভাবে শুনানির সুযোগ দিতে হইবে৷  

(৩) উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত অতিরিক্ত হিসাবে সরকারের বিবেচনায় কোন পৌরসভা এই আইন ও অন্যান্য আইন ও বিধি, প্রবিধি, ইত্যাদির মাধ্যমে অর্পিত দায়িত্ব পালনে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হইলে অথবা পৌরসভা ক্ষমতার অপব্যবহার করিলে, সরকার সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা উক্ত পরিষদ ভাঙ্গিয়া দিতে পারিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারা অনুসারে পৌরসভা ভাঙ্গিয়া দিবার পূর্বে সরকার ভাঙ্গিয়া দিবার কারণসহ প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট পৌরসভাকে অবহিত করিবে এবং কোনোরূপ আপত্তি বা ব্যাখ্যা থাকিলে তাহা বিবেচনা করিয়া চূড়ান্ত সিন্ধান্ত গ্রহণ করিবে।  

(৪) উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হইবার তারিখ হইতে উহা কার্যকর হইবে এবং একই তারিখ হইতে পৌরসভার মেয়র ও সকল কাউন্সিলরের আসন শূন্য হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে এবং এই আইনের বিধান অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠান করিতে হইবে৷  

(৫) পুনর্গঠিত পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরগণ পৌরসভার অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবেন।  

(৬) পরিষদ বাতিল হইবার এবং পুনর্গঠিত হইবার অন্তবর্তীকালীন সময়ে এই আইনের ধারা ৪২ (প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত) অনুযায়ী সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।  

(৭) পৌরসভার সকল সম্পদ ও দায় উপ-ধারা (৬) এর অধীন গঠিত প্রশাসক দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ হইতে পৌরসভা পুনর্গঠিত হওয়া পর্যন্ত এবং উপ-ধারা (৪) এর অধীন পুনর্গঠিত পৌরসভার উপর দায়িত্ব গ্রহণের পর হইতে পৌরসভার অবশিষ্ট মেয়াদকাল পর্যন্ত বর্তাইবে৷

দ্বিতীয় অধ্যায়

পৌরসভার দায়িত্ব ও কার্যাবলী, কমিটি, ইত্যাদি

পৌরসভার দায়িত্ব ও কার্যাবলী

৫০৷ (১) পৌরসভার মূল দায়িত্ব হইবে –  
(ক) স্ব-স্ব এলাকাভুক্ত নাগরিকগণের এই আইন ও অন্যান্য আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত বিধান অনুসারে সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা প্রদান করা;  
(খ) পৌর প্রশাসন ও সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ করা;  
(গ) পৌর এলাকায় নাগরিকগণের পৌরসেবা প্রদানের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ইমারত নিয়ন্ত্রণসহ নগর উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা; এবং  
(ঘ) নাগরিক নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষা করা৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পৌরসভার কার্যাবলী হইবে –  
(ক) আবাসিক, শিল্প এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য পানি সরবরাহ;  
(খ) পানি ও পয়ঃ নিষ্কাশন;  
(গ) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা;  
(ঘ) অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন;  
(ঙ) যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে রাস্তা, ফুটপাথ, জনসাধারণের চলাচল, যাত্রী এবং মালামালের সুবিধার্থে টার্মিনাল নির্মাণ;  
(চ) জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ (২০০৪ সনের ২৯ নং আইন) এ প্রদত্ত কার্যাবলী;  
(ছ) পরিবহন ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা, পথচারীদের সুবিধার্থে যাত্রী ছাউনী, সড়ক বাতি, যানবাহনের পার্কিং স্থান এবং বাস স্ট্যান্ড বা বাস স্টপ এর ব্যবস্থা করা;  
(জ) নাগরিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষণাবেক্ষণ, বৃক্ষরোপণ ও রক্ষণাবেক্ষণ;  
(ঝ) বাজার ও কসাইখানা স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনা;  
(ঞ) শিক্ষা, খেলাধুলা, চিত্ত বিনোদন, আমোদ প্রমোদ এবং সাংস্কৃতিক সুযোগ সৃষ্টি ও প্রসারে সহায়তা, পৌর এলাকার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি; এবং  
(ট) আইন, বিধি, প্রবিধি, উপ-আইন বা সরকার প্রদত্ত আদেশ দ্বারা অর্পিত অন্যান্য কার্যাবলী৷  

(৩) উপরি-উক্ত যে কোন কার্য সম্পাদন করিতে পৌরসভার নিজস্ব কারিগরি ব্যবস্থাপনা ও আর্থিক সামর্থ্য না থাকিলে নাগরিক সুবিধার্থে উপরিউক্ত কার্যাবলী স্থগিত করা যাইবে না৷  

(৪) উপ-ধারা (১) ও (২) এ বর্ণিত কোন কার্য সম্পাদিত না হইলে সরকার এতদ্বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে৷  

(৫) উপরি-উক্ত কার্যাবলী ছাড়াও পৌরসভা উহার তহবিলের সঙ্গতি অনুযায়ী দ্বিতীয় তফসিলে বর্ণিত কার্যাবলী সম্পাদন করিবে৷

সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কার্যাবলী

৫১৷ (১) এই আইনে প্রদত্ত কার্যাবলী ব্যতীত সরকারের অনুমোদনক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা, প্রতিরোধ ও নিরাময়মূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পরিবহন, অগ্নি প্রতিরোধ ও অগ্নি নিরাপত্তা এবং পৌর এলাকার দারিদ্র্য দূরীকরণ, ইত্যাদি যে কোন দায়িত্ব ও কার্য পৌরসভা সম্পাদন করিবে৷  

(২) অন্য কোন দায়িত্ব বা কার্য পৌরসভা কর্তৃক সম্পাদন করিবার প্রস্তাব করা হইলে সরকার উহা যথাযথ মনে করিলে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে সম্পাদনের নির্দেশ দিতে পারিবে৷

পৌরসভার বার্ষিক প্রতিবেদন

৫২৷ (১) পৌরসভা প্রত্যেক বৎসর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে ও পদ্ধতিতে পৌরসভার কার্যক্রমের প্রশাসনিক প্রতিবেদন প্রস্তত করিবে এবং পরবর্তী বৎসরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে উহা প্রকাশ করিবে৷    

(২) উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ করিতে না পারিলে সরকার পৌরসভার অনুকূলে অনুদান প্রদান স্থগিত রাখিতে পারিবে৷    

(৩) পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেয়রের সহিত পরামর্শক্রমে খসড়া প্রশাসনিক প্রতিবেদন প্রস্তত করিবে এবং উহা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিবে৷  

নাগরিক সনদ প্রকাশ

৫৩৷ (১) এই আইনের আওতায় গঠিত প্রতিটি পৌরসভা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিয়া বিভিন্ন প্রকারের নাগরিক সেবা প্রদানের বিবরণ, সেবা প্রদানের শর্তসমূহ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিবার বিবরণ প্রকাশ করিবে যাহা “নাগরিক সনদ” (Citizen Charter) বলিয়া অভিহিত হইবে৷  

(২) সরকার পৌরসভার জন্য আদর্শ নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে এবং পৌরসভা আইন ও বিধি সাপেক্ষে, এই নির্দেশিকার প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করিবার ক্ষমতা রাখিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, এই ধরনের পবিবর্তন বা পরিবর্ধন করা হইলে, তাহা অবগতির জন্য সরকারকে অবহিত করিতে হইবে৷  

(৩) নাগরিক সনদ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নে নিম্নবর্ণিত বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথাঃ-  
(ক) পৌরসভা প্রদত্ত প্রতিটি সেবার নির্ভুল ও স্বচ্ছ বিবরণ;  
(খ) পৌরসভা প্রদত্ত সেবা প্রদানের মূল্য;  
(গ) সেবা গ্রহণ ও দাবি করা সংক্রান্ত যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া;  
(ঘ) সেবা প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা;  
(ঙ) সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব;  
(চ) সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা;  
(ছ) সেবা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া; এবং  
(জ) সনদে উল্লিখিত অঙ্গীকার লংঘনের শাস্তি৷

উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুশাসন

৫৪৷ (১) প্রত্যেক পৌরসভা সুশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নততর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করিবে৷  
(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করিবে৷  
(৩) পৌরসভা নাগরিক সনদে বর্ণিত আধুনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়সহ সরকারিভাবে প্রদত্ত সকল সেবার বিবরণ উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জ্ঞাত করিবার ব্যবস্থা করিবে৷

পৌরসভা কর্তৃক স্থায়ী কমিটি গঠন

৫৫। (১) পৌরসভা গঠিত হইবার পর প্রথম সভায় অথবা তৎপরবর্তী কোন সভায় কার্যপরিধি ও আড়াই বৎসর মেয়াদ নির্ধারণ করিয়া বিধি অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত স্থায়ী কমিটি গঠন করিবে, যথাঃ-  
(ক) সংস্থাপন ও অর্থ;  
(খ) কর নিরূপণ ও আদায়;  
(গ) হিসাব ও নিরীক্ষা;  
(ঘ) নগর পরিকল্পনা, নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন; এবং  
(ঙ) আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা; 
(চ) যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামো;  
(ছ) মহিলা ও শিশু;  
(জ) মৎস্য ও পশু সম্পদ;  
(ঝ) তথ্য ও সংস্কৃতি; এবং  
(ঞ) বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ।  

(২) উপরি-উক্ত স্থায়ী কমিটি ব্যতীত প্রতি পৌরসভা প্রয়োজনের অতিরিক্ত স্থায়ী কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং বিশেষ করিয়া বেসরকারি সংস্থার সহিত সমন্বয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বাজার ব্যবস্থাপনা, নারী উন্নয়ন, দারিদ্র্ নিরসন ও বস্তি উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, পানি ও স্যানিটেশন, আবর্জনা অপসারণ ও হস্তান্তর ইত্যাদি বিষয়ক স্থায়ী কমিটি গঠন করা যাইতে পারে৷  

(৩) পরিষদের স্থায়ী কমিটিতে সর্বাধিক ৫ জন সদস্য থাকিবেন এবং উক্ত কমিটির সভাপতি ও সদস্যগণ পরিষদের সভায় কাউন্সিলরগণের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, মেয়র কোন স্থায়ী কমিটির সভাপতি হইতে পারিবে না; তবে আরো শর্ত থাকে যে, কোন কাউন্সিলর পরিষদের সিদ্ধান্ত ব্যতীত একের অধিক কমিটির সভাপতি হইতে পারিবে না।  

(৪) যে সকল পৌরসভার নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার স্বল্পতাহেতু এই ধারায় প্রণীত সকল বিষয়ে পৃথক পৃথক স্থায়ী কমিটি কার্যকর করা সম্ভব হইবে না, সেই সকল পৌরসভার ক্ষেত্রে একাধিক বিষয়ে একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করা যাইবে৷  

(৫) প্রতিটি স্থায়ী কমিটিতে অন্যূন শতকরা ৪০ ভাগ মহিলা সদস্য রাখা যাইবে৷  

(৬) সকল স্থায়ী কমিটিতে মেয়র পদাধিকার বলে সদস্য থাকিবেন এবং মেয়র আইন-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি থাকিবেন৷  

(৭) স্থায়ী কমিটির সভাপতি অথবা সদস্য লিখিতভাবে কমিটির পদ হইতে পদত্যাগ করিতে পারিবেন এবং এই সংক্রান্ত পদত্যাগপত্র মেয়রকে সম্বোধন করিয়া দিতে হইবে এবং এইরূপ পত্র প্রাপ্তির তারিখ হইতেই পদত্যাগ কার্যকর হইবে৷  

(৮) কোন স্থায়ী কমিটির সভাপতি বা সদস্য অনিবার্য কারণবশত দুই মাসের অধিক অনুপস্থিত থাকিবার সম্ভাবনা থাকিলে পরিষদ উহার সভায় অন্য কোন কাউন্সিলরকে উক্ত স্থায়ী কমিটির সংশ্লিষ্ট পদের দায়িত্ব প্রদানের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবে৷  

(৯) স্থায়ী কমিটি ইহার কাজের সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কোন একজন ব্যক্তিকে কমিটির সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত (CO-OPT) করিতে পারিবেন। 

(১০) স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত সদস্য (co-opt member)এর কোন ভোটাধিকার থাকিবে না।

স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী

৫৬। (১) স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী উপ-আইন দ্বারা নির্ধারিত হইবে, তবে উপ-আইন প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সাধারণ সভায় স্থায়ী কমিটির কার্যাবলী নির্ধারণ করা যাইবে৷  

(২) স্থায়ী কমিটির সুপারিশ পরিষদের পরবর্তী সভায় বিবেচিত হইবে এবং কোন সুপারিশ পৌর পরিষদে গৃহীত না হইলে তাহার যথার্থতা ও কারণ লিখিতভাবে স্থায়ী কমিটিকে জানাইতে হইবে৷  

(৩) স্থায়ী কমিটির সকল কার্যধারা পরিষদের সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে চূড়ান্ত হইবে৷

সভায় নাগরিকগণের উপস্থিতি

৫৭। কোন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি বা কোন নাগরিক বা নাগরিকবৃন্দ ইচ্ছা প্রকাশ করিলে তাহাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পরিষদ বা ইহার স্থায়ী কমিটি বা অন্য কোন কমিটি সংশ্লিষ্ট সভায় উপস্থিত থাকিবার অনুমতি দিতে পারিবে এবং কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে তাহাদের মতামত গ্রহণ করিয়া যথাযথ হইলে উক্ত মতামতের আলোকে সিদ্ধান্ত বা সুপারিশমালা গ্রহণ করিতে পারিবে।

পৌরসভার মেয়র এবং কাউন্সিলরগণের স্বার্থজনিত বিষয়াদি

৫৮। (১) পরিষদের স্থায়ী কমিটি বা অন্য কোন কমিটির সদস্য হিসাবে যে সকল বিষয় বা ক্ষেত্রে উক্ত সদস্যের আচরণ অথবা আর্থিক সংশ্লিষ্টতা রহিয়াছে ঐ সকল বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সদস্য উক্ত সভায় অংশ গ্রহণ করিতে পারিবেন না।  

(২) পরিষদ অথবা স্থায়ী কমিটি অথবা অন্য কোন কমিটির প্রতি সভার আলোচনা ও সিদ্ধান্তসমূহ লিপিবদ্ধ ও সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং উপস্থিত প্রত্যেক কাউন্সিলর অথবা সদস্যের স্বাক্ষর গ্রহণ করিয়া সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং লিপিবদ্ধ কার্যবিবরণী মেয়র বা সভাপতি কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইবে এবং ক্ষেত্রমত পরবর্তী (যেক্ষেত্রে যাহা প্রযোজ্য) সভায় অনুসমর্থনের জন্য উহা উপস্থাপিত হইবে।  

(৩) উপ-ধারা (২) এ বর্ণিত কার্যবিবরণী সভা অনুষ্ঠানের পরবর্তী অনধিক চৌদ্দ কার্যদিবসের মধ্যে লিপিবদ্ধ করিয়া পৌর পরিষদ অথবা সংশ্লিষ্ট সদস্যগণের জ্ঞাতার্থে সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং যে কোন ব্যক্তি পৌরসভা কর্তৃক নির্ধারিত ফিস পরিশোধ সাপেক্ষে কার্যবিবরণীর কপি সংগ্রহ করিতে পারিবেন।

পৌর এলাকার সমন্বিত উন্নয়ন

৫৯। পৌর এলাকার সংশ্লিষ্ট জনগণের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ অন্যান্য বিষয়ে সমন্বয় নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে এক বা একাধিক কমিটি গঠিত হইবে, যাহার গঠন ও কার্যপরিধি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

পূর্ত কাজ

৬০। সরকার বিধি দ্বারা পৌরসভা কর্তৃক করণীয় পূর্ত কাজের পরিকল্পনা, প্রাক্কলন, অনুমোদন প্রক্রিয়া, বাস্তবায়ন ইত্যাদি বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে।

নথিপত্র, প্রতিবেদন, ইত্যাদি সংরক্ষণ

৬১। পৌরসভা-  (ক) ইহার কার্যাবলীর সমুদয় নথিপত্র নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করিবে;  
(খ) মেয়াদী প্রতিবেদন এবং বিবরণী প্রণয়ন ও প্রকাশ করিবে;  
(গ) পৌরসভার কার্যাবলী সংক্রান্ত বিষয়ে সরকার সময় সময় যেইরূপ নির্ধারণ করিবে সেইরূপ তথ্যাবলী প্রকাশ করিবে৷

তৃতীয় অধ্যায়

নির্বাহী ক্ষমতা এবং কার্য পরিচালনা

নির্বাহী ক্ষমতা ও কার্য পরিচালনা

৬২। (১) এই আইনের অধীন যাবতীয় কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করিবার ক্ষমতা পরিষদের থাকিবে।  

(২) পৌরসভার নির্বাহী ক্ষমতা পরিষদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত মেয়র, কাউন্সিলর বা অন্য কোন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রযুক্ত হইবে।  

(৩) সকল কার্য পৌরসভার নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশিত হইবে।  

(৪) পৌরসভার দৈনন্দিন সেবামূলক দায়িত্ব ত্বরান্বিত করিবার লক্ষ্যে উপ-ধারা (২) এর অধীন নির্বাহী ক্ষমতা বিভাজনের প্রস্তাব পৌরসভা দ্বারা অনুমোদিত হইবে এবং প্রয়োজনবোধে সময়ে সময়ে ইহা সংশোধনের এখতিয়ার পৌরসভার থাকিবে, যাহা একটি বিশেষ সভার মাধ্যমে চূড়ান্ত করিতে হইবে।

পরিষদের সভা ও কার্য সম্পাদন

৬৩। (১) পরিষদ প্রতি মাসে ন্যুনতম একটি সভা অনুষ্ঠান করিবে এবং পরিষদের সভায় মেয়র বা ক্ষেত্রমত, প্যানেল মেয়র সভাপতিত্ব করিবেন।  

(২) সাধারণতঃ মেয়র পরিষদের সভা আহবান করিবেন এবং মেয়রের অনুপস্থিতে প্যানেল মেয়র সভা আহবান করিতে পারিবেন৷  

(৩) ন্যুনতম ৫০% কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে কোরাম গঠিত হইবে; যদি কোন সভায় কোরাম না হয়, তাহা হইলে ঐ সভার সভাপতি এইরূপ সভা মুলতবী করিবেন অথবা যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়া প্রয়োজনীয় কোরাম হইলে সভা পরিচালনা করিবেন৷  

(৪) উপ-ধারা (৩) এর ক্ষেত্রে সভা স্থগিত হইলে পরবর্তী সভায় একই আলোচ্যসূচি সম্পর্কে আলোচনা করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে, ইহার জন্য কোন কোরামের প্রয়োজন হইবে না৷  

(৫) সভার আলোচ্যসূচি সম্পর্কে এই আইনে কোন ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, সভায় উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে এবং কোন প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহীত হইয়াছে বা হয় নাই তাহা সভাপতি উক্ত সভায় স্পষ্ট করিয়া জানাইয়া দিবেন৷  

(৬) সভায় উপস্থিত কাউন্সিলরগণ হাত তুলিয়া প্রস্তাব সম্পর্কে সম্মতি জ্ঞাপন করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, পৌরসভা যদি কোন বিষয় গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রয়োজন মনে করেন, তাহা হইলে উহা অনুসরণ করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে৷  

(৭) সভার আলোচ্যসূচিতে কারিগরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোন বিশেষজ্ঞের মতামত প্রয়োজন হইলে, পরিষদ উক্ত বিষয় বা বিষয়সমূহে মতামত প্রদানের জন্য এক বা একাধিক বিশেষজ্ঞকে সভায় আমন্ত্রণ জানাইতে পারিবে৷

স্থায়ী কমিটির মতামত ও সিদ্ধান্ত বিবেচনা

৬৪। পৌরসভার বাজেট প্রণয়ন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিভুক্ত প্রকল্প গ্রহণ, মাস্টার প্লান তৈরী, জনবল নিয়োগ, বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন, ইত্যাদি বিষয় সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির মতামত ও সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে হইবে৷

কাউন্সিলরগণের ব্যক্তিগত আর্থিক সংশ্লিষ্টতা বিষয়ক

৬৫। (১) যদি কোন কাউন্সিলরের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সভার আলোচ্যসূচির সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ব্যক্তিগত আর্থিক বিষয়ে লাভবান হইবার সম্ভাবনা থাকে, অথবা অন্য কোন ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িত থাকে, তাহা হইলে সংশ্লিষ্ট আলোচ্যসূচি আলোচিত হইবার পূর্বেই উক্ত কাউন্সিলর বিষয়টি সভাকে অবহিত করিবেন এবং সভার উক্ত আলোচ্যসূচিতে তিনি অংশগ্রহণ করিবেন নাঃ  তবে শর্ত থাকে যে, পৌরসভার কর ধার্যকরণ অথবা পৌরসভার অন্যান্য সেবামূলক বিষয়ের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না৷  

(২) কোন কাউন্সিলর নিজে অথবা তাহার পরিবারের নির্ভরশীল কোন সদস্য যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অথবা কোন ব্যক্তির অধীনে চাকুরিরত থাকেন এবং উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যক্তি পৌরসভার সহিত কোন চুক্তির মাধ্যমে লাভবান হইবার সম্ভাবনা থাকে, তাহা হইলে তিনি সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানাইবেন।  

(৩) সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়টি অন্য সকল কাউন্সিলরের জ্ঞাতার্থে সরবরাহ ও সংরক্ষণ করিবেন৷

সচিব বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সভায় অংশগ্রহণ

৬৬। সচিব বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা তদকর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্য কোন কর্মকর্তা পৌরসভার অথবা পৌরসভা সংক্রান্ত কমিটির সভায় সহায়ক কর্মকর্তা হিসাবে অংশগ্রহণ করিবেন।

জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা

৬৭। (১) কোন কাউন্সিলর জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করিবার জন্য সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত নোটিশ প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং কি বিষয়ে আলোচনা দরকার হইবে তাহাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করিবেন।  

(২) এই ধরনের নোটিশ অন্যূন অন্য দুই জন কাউন্সিলর দ্বারা সমর্থিত হইতে হইবে এবং যে তারিখে বিষয়টি আলোচনা করিবার প্রস্তাব দেওয়া হইয়াছে তাহার অন্ততঃ ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে নোটিশটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিতে হইবে এবং এইরূপ নোটিশপ্রাপ্তির পর সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উহা অবিলম্বে মেয়রের নিকট পেশ করিবেন।  

(৩) মেয়রের নিকট প্রস্তাবিত আলোচনা যথেষ্ট জনগুরুত্বপূর্ণ মনে হইলে, তিনি উহা আলোচনার ব্যবস্থা করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, উপস্থিত অধিকাংশ (৫১%) সদস্য যদি বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন, তাহা হইলে বিষয়টি আলোচিত হইবে।  

(৪) দুইটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বেশি একই সভায় আলেচিত হইতে পারিবে না।

কাউন্সিলরগণের তথ্য জানিবার অধিকার

৬৮। (১) কোন কাউন্সিলর পৌরসভার উন্নয়ন কার্যক্রম ও প্রশাসন সংক্রান্ত কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে তথ্য গ্রহণ করিবার অধিকারী হইবে এবং নির্ধারিত তথ্য সংগ্রহ করিবার জন্য সভা অনুষ্ঠিত হইবার অন্যূন চব্বিশ ঘন্টা পূর্বে এই বিষয়ে সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর নোটিশ পাঠাইবেন।  

(২) মেয়র এই বিষয়ে একই দিনে তথ্য বিষয়ক প্রাথমিক বক্তব্য প্রদান করিবেন অথবা পরবর্তী কোন তারিখে এতদ্‌বিষয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিবেন।

সভার কার্যবিবরণী লিপিবদ্ধকরণ, সংরক্ষণ ইত্যাদি

৬৯। (১) পরিষদের এবং বিভিন্ন কমিটির সভার কার্যবিবরণীর মধ্যে উপস্থিত কাউন্সিলরগণের নাম উল্লেখ করিতে হইবে এবং কার্যবিবরণী একটি বাঁধাই করা বহিতে সংরক্ষণ করিতে হইবে এবং প্রতিটি কার্যবিবরণী পরবর্তী সভায় অনুমোদিত হইতে হইবে এবং অনুমোদনের চৌদ্দ দিনের মধ্যে সভার কার্যবিবরণী সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।  

(২) পরিষদের প্রত্যেকটি সভার কার্যবিবরণী কাউন্সিলরগণের মধ্যে যথাসময়ে বিতরণ করিতে হইবে এবং গোপনীয় না হইলে পৌরসভা কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত স্থানে প্রদর্শন করিতে হইবে।  

(৩) গোপনীয় ব্যতীত অন্যান্য কার্যবিবরণীর কপি নির্ধারিত ফিস এর বিনিময়ে যে কোন নাগরিককে প্রদান করা যাইবে।  

(৪) পরিষদের প্রত্যেকটি সভার কার্যবিবরণী উক্ত উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে।

কার্যসম্পাদন সংক্রান্ত বিধি

৭০। সরকার পৌরসভা অথবা ইহার কমিটির কার্য সম্পাদন সংক্রান্ত বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

গৃহীত সিদ্ধান্তের বৈধতা

৭১।(১) পরিষদ অথবা ইহার কমিটির কোন সিদ্ধান্ত বা কার্যবিবরণী নিম্নবর্ণিত কারণে অবৈধ হইবে না-  
(ক) কোন পদ শূন্য থাকিলে অথবা পরিষদ অথবা ইহার কমিটির গঠন প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক বা পরবর্তী পর্যায়ে কোন ত্রুটি;  
(খ) এই আইনের বিধান লংঘন করিয়া যদি কোন কাউন্সিলর ভোট প্রদান বা সভায় অংশগ্রহণ করিয়া থাকেন;  
(গ) কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে যে কোন ত্রুটি বা অনিয়ম যাহা সিদ্ধান্তের বৈধতাকে ক্ষুন্ন করে না৷  

(২) এই আইনের ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, পরিষদ অথবা ইহার কমিটির সিদ্ধান্ত এই আইনের বিধান অনুযায়ী গৃহীত হইবার পর ইহাতে কোন ত্রুটি বা অনিয়ম হয় নাই বলিয়া বিবেচিত হইবে৷  

(৩) কোন পদ শূন্য ছিল অথবা পৌরসভা গঠন প্রক্রিয়ায় কোন ত্রুটি ছিল অথবা কোন সদস্যের পরিষদের কোন সভায় অংশগ্রহণ বা ভোটদানের যোগ্যতা ছিল না কেবল এই কারণে পৌরসভার কোন কাজ বা কোন সভার কার্যবিবরণী অবৈধ হইবে না৷

চতুর্থ অধ্যায়

পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ভবিষ্য তহবিল ইত্যাদি

পৌরসভার চাকুরী

৭২। (১) পৌরসভার জন্য পৌরসভার সার্ভিস নামে একটি সার্ভিস থাকিবে এবং উক্ত সার্ভিস নির্ধারিত শর্তে ও পদ্ধতিতে গঠিত হইবে।  

(২) সরকার, সময়ে সময়ে, পৌরসভার শ্রেণী বিন্যাস অনুযায়ী, জনবল কাঠামো নির্ধারণ এবং চাকুরীর পদসমূহ নির্দিষ্ট করিতে পারিবে, যাহা পৌরসভা সার্ভিসে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিবর্গ দ্বারা পূরণ করিতে হইবে।

পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারী

৭৩। (১) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কোন পৌরসভার জন্য উহার জনবল কাঠামো অনুযায়ী বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতি ও শর্তে একজন সচিব এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবে, যাঁহারা এই আইন অনুযায়ী পৌরসভায় তাঁহাদের উপর ন্যস্ত যাবতীয় দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(২) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ যেরূপ প্রয়োজন মনে করিবে, এই আইনের অধীন কোন পৌরসভা, নির্ধারিত শর্তে উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পন্ন করিবার জন্য, অনুমোদিত সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী বিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে, সেইরূপ সংখ্যক কর্মচারী নিয়োগ করিতে পারিবে।  

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২)-এ বর্ণিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরীর শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে।  

(৪) এই আইন এবং তদ্‌ধীন প্রণীত বিধির বিধানাবলী সাপেক্ষে-  
(ক) পৌরসভাসমূহের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১)-এর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে সাময়িক বরখাস্ত, অপসারণ, পদচ্যুত বা অন্য কোন শাস্তি প্রদান করিতে পারিবে;  
(খ) পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিধি অনুযায়ী উপ-ধারা (২)-এর অধীন নিয়োগপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে সাময়িক বরখাস্ত, অপসারণ, পদচ্যুত বা অন্য কোন শাস্তি প্রদান করিতে পারিবে।  

(৫) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীনে নিয়োগপ্রাপ্ত যে কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রশাসনিক প্রয়োজনে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ তাহার এখতিয়ারাধীন এক পৌরসভা হইতে অন্য পৌরসভায় বদলী করিতে পারিবে।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা

৭৪। (১) ধারা ৭২ এ যাহা কিছু থাকুক না কেন, সরকার তদ্‌কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন পৌরসভার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ করিতে পারিবেন।    

(২) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শর্তে নিযুক্ত হইবেন।    

(৩) কোন পৌরসভার জন্য উপ-ধারা (১) এর অধীন কর্মকর্তা নিয়োগ করা হইলে তিনি ঐ পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী তাহার অধীনস্থ হইবেন।    

(৪) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভার যে কোন কমিটির সভায় উপস্থিত থাকিবার এবং সভার আলোচনায় অংশগ্রহণের অধিকার থাকিবে এবং অনুরূপ কোন সভায়, তিনি সভাপতির অনুমতিক্রমে কোন বিষয় বিবৃতি প্রদান বা ব্যাখ্যা প্রদান এবং আইন বা বিধি পরিপন্থী সম্পর্কে সভাকে অবহিত করিবেন এবং উক্তরূপ সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাহার ভোটদানের বা প্রস্তাব উত্থাপনের কোন অধিকার থাকিবেনা।

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের পৌরসভায় ন্যস্তকরণে সরকারের ক্ষমতা

৭৫। (১) নির্ধারিত শর্তে পৌরসভার সাধারণ বা বিশেষ কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে সরকার সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণকে নির্ধারিত সময়ের জন্য পরিষদে ন্যস্ত করিতে পারিবে, উক্তরূপে স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ সংশ্লিষ্ট পৌরসভার তত্ত্বাবধানে ও সাধারণ নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করিবেন৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন হস্তান্তরিত বা ন্যস্তকৃত কোন সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন মনে করিলে পৌরসভা এই বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান করিয়া সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন প্রেরণ করিবে৷  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন পরিষদে স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ তাহাদের উপর অর্পিত সাধারণ দায়িত্ব ছাড়াও পৌরসভা কর্তৃক সময়ে সময়ে পৌরসভার কর্মকর্তা বা কর্মচারীর ন্যায় নির্ধারিত অন্যান্য দায়িত্ব পালন করিবেন৷  

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন স্থানান্তরিত বা ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণ পৌরসভার নিকট এই আইন বা বিধি অনুযায়ী স্থানান্তরিত নহে এইরূপ সরকারি প্রকল্প, পরিকল্পনা, ইত্যাদি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(৫) সংশ্লিষ্ট পৌরসভা কর্তৃক ব্যয়ভার বহনের ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত, উপ-ধারা (১) অনুযায়ী স্থানান্তরিত কর্মকর্তা বা কর্মচারীগণের বেতন ভাতা ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা সরকার কর্তৃক প্রদেয় হইবে৷

ভবিষ্য তহবিল, ইত্যাদি

৭৬। (১) পৌরসভা ভবিষ্য-তহবিল গঠন ও সংরক্ষণ করিতে পারিবে এবং এইরূপ তহবিলে উহার যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে অংশগ্রহণের নির্দেশ প্রদান করিবে এবং নির্দেশিতভাবে উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারী সেইরূপ উপায়ে ও পরিমাণে উহাতে চাঁদা প্রদান করিবে৷  

(২) পৌরসভা সরকারের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের অবসর গ্রহণের পর আনুতোষিক প্রদান করিবে এবং আনুতোষিক তহবিলের অর্থ কেবল কর্মচারীগণের পাওনা পরিশোধ করিবার জন্যই বিধি অনুযায়ী ব্যয় করা যাইবে৷  

(৩) পৌরসভা, সরকারের পূর্ব অনুমোদনক্রমে, দাপ্তরিক দায়িত্ব পালনকালে রোগে মৃত্যুবরণকারী অথবা আহত অথবা ক্ষতিগ্রস্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পরিবারকে বিশেষ আনুতোষিক প্রদান করিতে পারিবে৷  

(৪) পৌরসভা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের জন্য সামাজিক বীমা প্রকল্প পরিচালনা করিতে এবং উহাতে চাঁদা প্রদানে নির্দেশ দিতে পারিবে৷  

(৫) পৌরসভা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কল্যাণ তহবিল গঠন ও পরিচালনা করিবে যাহা হইতে উপ-ধারা (৩) এর অধীন মঞ্জুরীকৃত কোন বিশেষ আনুতোষিক বা নির্দেশিত অন্য কোন সহায়তা প্রদান করা যাইবে৷  

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীনে গঠিত ও রক্ষিত তহবিলে পৌরসভা সরকার কর্তৃক যেরূপ নির্দেশিত হইবে সেইরূপ অংশ বা সেই পরিমাণ টাকা চাঁদা প্রদান করিবে৷

চাকুরি সংক্রান্ত বিষয়াদি নির্ধারণ

৭৭। সরকার বিধি দ্বারা –  
(ক) পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের চাকুরির শর্তাবলী নির্ধারণ করিতে পারিবে;  
(খ) পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের বেতনের গ্রেড নির্ধারণ করিতে পারিবে;  
(গ) পৌরসভায় যে সংখ্যক জনশক্তি নিযুক্ত হইবে তাহা সংস্থাপন তফসিলে প্রবর্তনমূলক নির্ধারণ করিবে;  
(ঘ) পৌরসভার অধীন বিভিন্ন পদের যোগ্যতা নির্ধারণ করিবে;  
(ঙ) পৌরসভার বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের ক্ষেত্রে যে নীতিমালা অনুসৃত হইবে তাহা নির্ধারণ করিবে;  
(চ) পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের বিরুদ্ধে আনীত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তদন্ত অনুষ্ঠান পদ্ধতি নির্ধারণ এবং শাস্তি আরোপ আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের ব্যবস্থা রাখিতে পারিবে; এবং  
(ছ) পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ কর্তৃক পূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়াদির ব্যবস্থা রাখিতে পারিবে৷

পৌরসভার নির্বাচিত প্রতিনিধি ও পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারীগণের সম্পর্ক

৭৮। (১) পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের আইনগত অধিকার ও পেশাগত স্বাধীনতা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে, সরকার নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা পরিষদে ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ বিষয়ক একটি আচরণ বিধি প্রণয়ন করিবে৷  

(২) পরিষদের যে কোন সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাগণের মতামত সভার কার্যবিবরণীতে উল্লেখ থাকিতে হইবে৷  

(৩) পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং পরিষদের নিয়ন্ত্রণাধীন বা পরিষদে ন্যস্তকৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ পারস্পারিক সম্মান প্রদর্শন করিবেন এবং যে কোন প্রকার অশোভন আচরণ পরিহার করিবেন৷  

(৪) সরকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আচরণ বিধি বহির্ভূত যে কোন অভিযোগ বিবেচনা করিবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রনণ করিবে।  

(৫) পৌরসভা নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে কোন কার্য সম্পাদনের জন্য মৌখিক নির্দেশনা প্রদান করিলেও সংশ্লিষ্ট কাজটি বাস্তবায়নের পূর্বে লিখিতভাবে জানাইতে হইবে৷

পঞ্চম অধ্যায়

টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ

টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইত্যাদি নিবন্ধিকরণ

৭৯৷ (১) এই আইন কার্যকর হইবার তারিখে বা তৎপরবর্তীতে কোন পৌর এলাকায় পৌরসভার নিবন্ধন ব্যতীত বেসরকারিভাবে বা ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিক, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট চালু করা যাইবে না।  

(২) পৌরসভা, সরকার কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিধি-বিধান বা আদেশ অনুসরণপূর্বক, উহার পৌর এলাকায় টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইত্যাদি নিবন্ধন করিতে পারিবে৷  

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন আবেদন প্রাপ্তির পর, পৌরসভা প্রয়োজনীয় তদন্ত করিয়া সন্তোষজনক বিবেচিত হইলে উহা নিবন্ধন করিবে এবং মাসিক ফিস নির্ধারণ করিয়া দিবে৷  

(৪) এই আইন প্রবর্তনের সময় যে সকল টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইত্যাদি থাকিবে, সে সকল প্রতিষ্ঠান সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করিলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিবন্ধিত বলিয়া গণ্য হইবে৷  

(৫) উপ-ধারা (৩) ও (৪) এর অধীন নিবন্ধিত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন প্রত্যেক বৎসর নির্ধারিত ফিস প্রদানপূর্বক নবায়ন করিতে হইবে৷

নিবন্ধিকরণে ব্যর্থতার দণ্ড

৮০। কোন ব্যক্তি পৌরসভার নিবন্ধন ব্যতীত কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল বা প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট স্থাপন বা পরিচালনা করিলে অথবা উক্তরূপ প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল বা ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করিবার পরও তাহা পরিচালনা অব্যাহত রাখিলে পঁচিশ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং উক্ত জরিমানা দণ্ড আরোপের তারিখের পরেও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা হাসপাতাল পরিচালনা বন্ধ না করিলে দুই বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রতিদিনের জন্য এক হাজার টাকা হারে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হইবে৷

পৌরসভা কর্তৃক ফিস আদায়

৮১। সরকার ইহার এখতিয়ারাধীন এলাকায় নিবন্ধিত ও পরিচালিত টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট, ইত্যাদির নিকট হইতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হারে বাৎসরিক ফিস আদায় করিতে পারিবে৷

পুনঃনিবন্ধিকরণ

৮২। (১) কোন টিউটোরিয়াল স্কুল, কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট হাসপাতাল, প্যারামেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ইত্যাদির নিবন্ধন ধারা ৭৯ (৪) এর শর্তাংশে বর্ণিত অনিয়ম ব্যতীত, নিজস্ব ব্যত্যয়ের কারণে বাতিল হইয়া ধারা ৮০ অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত হইলে জরিমানা প্রদানের ছয়মাসের মধ্যে দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানাসহ পুনঃনিবন্ধিকরণের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে কারণ উল্লেখপূর্বক আবেদন করিতে পারিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন দাখিলকৃত আবেদন তদন্তপূর্বক সন্তোষজনক বিবেচিত হইলে পৌরসভা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে পুনঃনিবন্ধন করিতে পারিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, কোন প্রতিষ্ঠান এই ধারার অধীনে পুনঃনিবন্ধনের সুযোগ একবারের বেশি গ্রহণ করিতে পারিবে না।

৪র্থ ভাগ

প্রথম অধ্যায়

নথিপত্র তলব, পরিদর্শন, ইত্যাদি

নথিপত্র তলব করিবার ক্ষমতা

৮৩৷ সরকার যে কোন সময় পৌর কর্তৃপক্ষের নিকট হইতে –  
(ক) কোন দলিল বা অন্য কোন নথিপত্র;  
(খ) বিবরণী, পরিকল্পনা, প্রাক্কলন, লিখিত বক্তব্য, হিসাব অথবা পরিসংখ্যান;  
(গ) অন্য কোন প্রতিবেদন;  তলব করিতে পারিবে এবং পৌর কর্তৃপক্ষ এই নির্দেশ পালন করিতে বাধ্য থাকিবে৷

সরকারের নির্ধারিত কর্মকর্তার পরিদর্শনের ক্ষমতা

৮৪। সরকার, পৌরসভার কোনো বিভাগ, সেবামূলক ও উন্নয়ন কার্যক্রম, নির্মাণ কাজ অথবা সম্পত্তি উহার কর্মকর্তা দ্বারা পরিদর্শনের মাধ্যমে প্রতিবেদন গ্রহণ করিতে পারিবে।

সরকার কর্তৃক পৌরসভাকে নির্দেশ প্রদানের ক্ষমতা

৮৫। (১) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে,সরকার যে কোন পৌরসভা অথবা পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি অথবা কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে যে কোন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে নির্দেশ দিতে পারিবে।  

(২) সরকার উপযুক্ত তদন্তের পর যদি মনে করেন যে, উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত কোন নির্দেশ পালনে কোন পৌরসভা বা ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হইয়াছে, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে, অনুরূপ নির্দেশ কার্যকর করিবার জন্য, নিয়োগ করিতে পারিবে এবং এতদ্সংক্রান্ত ব্যয় নির্বাহের জন্য পৌরসভাকে নির্দেশ দিতে পারিবে।  

(৩) এইরূপ ব্যয়ের খরচাদি পরিশোধ করা না হইলে, নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ আদেশ দ্বারা পৌরসভা তহবিলে জমা অর্থ হেফাজতকারীকে উক্ত ব্যয় পরিশোধ করিবার অথবা তাহা হইতে সম্ভাব্য পরিমাণ কিস্তিতে পরিশোধের নির্দেশ দিতে পারিবে।

পৌরসভার কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত ক্ষমতা প্রয়োগ

৮৬। (১) সরকার যদি মনে করে যে, কোন পৌরসভা অথবা ইহার পক্ষ হইতে সম্পাদিত কোন কার্য অথবা সম্পাদনের জন্য নির্বাচিত কোন কার্য আইনের সহিত সঙ্গতিপূর্ণ নহে অথবা যাহা জনস্বার্থের পরিপন্থী, তাহা হইলে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ আদেশ দ্বারা-  
ক) কার্য বাতিল করিতে পারিবে;  
খ) পৌরসভা কর্তৃক গৃহীত কোন প্রস্তাব বাস্তবায়ন বা প্রদত্ত আদেশ মূলতবী রাখিতে পারিবে;  
গ) প্রস্তাবিত কোন কার্যের বাস্তবায়ন নিষিদ্ধ করিতে পারিবে;  
ঘ) পৌরসভাকে এই সকল ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারিবে৷  

(২) নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আদেশ প্রদান করিলে, সংশ্লিষ্ট পৌরসভা উক্ত আদেশ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করিতে পারিবে এবং সরকার উক্ত আদেশ বহাল বা সংশোধন অথবা বাতিল করিতে পারিবে৷

সরকারের দিক নির্দেশনা প্রদান এবং তদন্ত করিবার ক্ষমতা

৮৭৷ (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার রাষ্ট্রীয় নীতিমালার সহিত সংগতি রাখিয়া যে কোন পৌরসভার আর্থিক ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যবস্থাপনা, বিভিন্ন প্রকার প্রকল্প প্রণয়ন ও প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচন, পৌরসভা ও ওয়ার্ডসমূহের কার্যক্রম পরিচালনা, ইত্যাদি বিষয়ে দিক- নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে এবং পৌরসভা উক্তরূপ দিক- নির্দেশনা আবশ্যিকভাবে অনুসরণ করিবে৷  

(২) কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন বা কোনরূপ আর্থিক অনিয়ম বা পৌরসভার অন্য যে কোন অনিয়মের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগ সরকার কর্তৃক নিযুক্ত এক বা একাধিক কর্মকর্তা তদন্ত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট পৌরসভা উক্ত তদন্ত কার্য পরিচালনায় সহযোগিতা করিবে৷  

(৩) উপ-ধারা (২) এর অধীন তদন্ত সম্পাদনের পর, সরকার প্রয়োজন মনে করিলে, এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, দায়ী ব্যক্তি বা কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা পৌরসভার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে৷

পৌরসভাকে কোন বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ

৮৮। ধারা ৮৩ বা ধারা ৮৪ এর অধীন প্রদত্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বা অন্য কোন সূত্রে প্রাপ্ত কোন তথ্যের ভিত্তিতে, যদি সরকার মনে করে যে, পৌরসভা কর্তৃক গৃহীত কোন কার্যক্রম অবৈধ অথবা অনিয়মে দুষ্ট অথবা এই আইনের অধীনে কোন কার্যক্রম অযৌক্তিকভাবে করা হইয়াছে অথবা আদৌ করা হয় নাই, অথবা, এই আইনে প্রদত্ত দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থান করা হয় নাই, তাহা হইলে সরকার অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ পৌরসভাকে অবৈধ অথবা অনিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা হইতে বিরত থাকিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইনসিদ্ধ ব্যবস্থা গ্রহণ বা আর্থিক সংস্থানের জন্য, সরকার পৌরসভাকে নির্দেশ দিতে পারিবে :  তবে শর্ত থাকে যে, জরুরি ভিত্তিতে উপরি-উক্ত কার্যক্রম বন্ধ করিবার যৌক্তিকতা না থাকিলে, সরকার পৌরসভাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান করিবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

আর্থিক ব্যবস্থাপনা, বাজেট ও হিসাব

তহবিলের উৎস

৮৯। (১) প্রত্যেক পৌরসভার পৌরসভা তহবিল নামে একটি তহবিল থাকিবে৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে গঠিত পৌরসভা তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ জমা করিতে হইবে-  
(ক) এই আইন কার্যকর হইবার কালে পৌরসভার সম্পূর্ণ এখতিয়ারে উদ্বৃত্ত তহবিল;  
(খ) এই আইনের অধীনে পৌরসভা কর্তৃক ধার্যকৃত সকল কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস ও অন্যান্য দাবি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;  
(গ) পৌরসভার উপর ন্যস্ত অথবা তদকর্তৃক ব্যবস্থিত সম্পত্তি হইতে সকল খাজনা এবং আয়, যাহা পৌরসভার নিকট পরিশোধ অথবা জমাযোগ্য;  
(ঘ) এই আইনের অধীনে অথবা আপাততঃ বলবৎ অন্য যে কোন আইনের অধীনে পৌরসভার কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য পৌরসভা কর্তৃক প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ;  
(ঙ) কোন ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় যে কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত দানের সমুদয় অর্থ;  
(চ) পৌরসভার অধীনে পরিচালিত ট্রাস্ট হইতে (যদি থাকে) জমাকৃত সমুদয় আয়;  
(ছ) সরকার এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত সকল অনুদান;  
(জ) বিনিয়োগ হইতে প্রাপ্ত সমুদয় লভ্যাংশ; এবং  (ঝ) সরকারের নির্দেশে পৌরসভার সম্পূর্ণ অধিকারে ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস হইতে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ।

আরোপিত ব্যয়

৯০। (১) পৌরসভা তহবিলের উপর আরোপিত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে, যথাঃ-  
(ক) পৌরসভার কর্মে নিয়োজিত যে কোন সরকারি কর্মচারী অথবা স্থানীয় পরিষদ সার্ভিসের যে কোন সদস্যকে অথবা তাহার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রদেয় সমুদয় অর্থ; 
 (খ) নির্বাচন পরিচালনায় অবদান, পৌরসভার সার্ভিসসমূহ রক্ষণাবেক্ষণ, হিসাব নিরীক্ষা এবং এইরূপ অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনে সময়ে সময়ে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত পৌরসভা কর্তৃক প্রদেয় সমুদয় অর্থ; 

 (গ) কোন আদালত অথবা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক পৌরসভার বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রি অথবা রোয়েদাদ কার্যকর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোন অর্থ এবং সরকার কর্তৃক ঘোষিত এইরূপ আরোপযোগ্য যে কোন ব্যয়৷ 

 (২) পৌরসভার উপর আরোপিত কোন ব্যয় যদি পরিশোধ না করা হইয়া থাকে, তাহা হইলে পৌরসভার তহবিল হেফাজতকারী ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিগণকে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ, সময়ে সময়ে আদেশ দ্বারা, পৌরসভার উদ্ধৃত্ত তহবিল হইতে ঐ অর্থ পরিশোধ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে৷

সংরক্ষণ, বিনিয়োগ এবং বিশেষ তহবিল গঠন

৯১। (১)পৌরসভা তহবিলের জমাকৃত টাকা সরকারি ট্রেজারির কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে অথবা সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্দেশিত অন্য কোন পদ্ধতিতে জমা রাখিতে হইবে৷  

(২) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৌরসভা উহার তহবিলের যে কোন অংশ বিনিয়োগ করিতে পারিবে৷  

(৩) পৌরসভা কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে পৃথক তহবিল গঠন এবং সংরক্ষণ করিতে পারিবে, যাহা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হইবে৷  

(৪) পৌরসভার তহবিলে সময়ে সময়ে জমাকৃত অর্থ নিম্নরূপ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রয়োগ করিতে হইবেঃ-  
(ক) পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের বেতন ও ভাতা প্রদান;  
(খ) এই আইনের অধীন পৌরসভার তহবিলের উপর আরোপিত ব্যয় মিটানো;  
(গ) পূর্ব অনুমোদনক্রমে, পৌরসভা কর্তৃক ঘোষিত পৌরসভা তহবিলের উপর আরোপিত যথোপযুক্ত ব্যয় মিটানো; এবং  
(ঘ) সরকার কর্তৃক ঘোষিত পৌরসভা তহবিলের উপর আরোপিত ব্যয় মিটানো৷

বাজেট

৯২। (১) প্রতি অর্থবৎসর শুরু হইবার পূর্বে, পৌরসভা উক্ত বৎসরের সম্ভাব্য আয় ও ব্যয় সম্বলিত বিবরণী, অতঃপর প্রাক্কলিত বাজেট বলিয়া উল্লিখিত, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রণয়ন ও অনুমোদন করিবে এবং উহার একটি করিয়া অনুলিপি বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রাক্কলিত বাজেট সম্পর্কে জনগণের মন্তব্য ও পরামর্শ বিবেচনাক্রমে পৌরসভা সংশ্লিষ্ট অর্থবৎসর শুরু হইবার ত্রিশ দিন পূর্বে বাজেট অনুমোদন করিয়া উহার একটি অনুলিপি বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করিবে৷  

(৩) কোন অর্থবৎসর শুরু হইবার পূর্বে, বিশেষ পরিস্থিতিতে, পৌরসভা ইহার বাজেট অনুমোদন করিতে না পারিলে, সরকার উক্ত বৎসরের জন্য একটি আয়-ব্যয় বিবরণী প্রস্তুত করাইয়া উহা প্রত্যয়ন করিবে এবং এইরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী পৌরসভার অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে৷  

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীন বাজেটের অনুলিপি প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকার, আদেশ দ্বারা, বাজেটটি সংশোধন করিতে পারিবে এবং অনুরূপ সংশোধিত বাজেটই পৌরসভার অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে;  

(৫) কোন অর্থবৎসর সমাপ্ত হইবার পূর্বে, সেই অর্থবৎসরের যে কোন সময়, পৌরসভা সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করিতে পারিবে এবং উক্ত সংশোধিত বাজেটের ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে৷

হিসাব

৯৩। (১) পৌরসভার আয় ও ব্যয়ের হিসাব নির্ধারিত ফরম এবং পদ্ধতিতে রক্ষিত হইবে৷  

(২) প্রতি অর্থবৎসরের শেষে বার্ষিক হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করিতে হইবে৷  

(৩) বার্ষিক হিসাব বিবরণীর একটি প্রতিলিপি জনসাধারণের দর্শনের জন্য উহার কার্যালয়ের প্রকাশ্য কোন স্থানে প্রদর্শন করিবে এবং জনসাধারণের নিকট হইতে হিসাব সংক্রান্ত সকল আপত্তি অথবা পরামর্শ পৌরসভা কর্তৃক বিবেচিত হইবে৷

নিরীক্ষা

৯৪। (১) পৌরসভার হিসাব উপযুক্ত নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত প্যানেল হইতে নিয়োজিত অন্য কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরীক্ষিত হইবে।  

(২) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের ব্যবধানে প্রত্যেক পৌরসভার হিসাব নিরীক্ষিত হইবে।

(৩) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট পৌরসভার হিসাব সংক্রান্ত সকল বহি এবং অন্যান্য দলিলাদি দেখিতে পারিবে এবং পৌরসভার মেয়র অথবা কোন কাউন্সিলর অথবা কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে।  

(৪) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষা সমাপনান্তে প্রতিবেদন দাখিল করিবেন, যাহাতে অন্যান্য বিষয়ের সহিত উল্লেখ থাকিবে-  
(ক) তহবিল তসরুফের ঘটনা;  
(খ) পৌরসভা তহবিলের ক্ষতি, অপচয়, অথবা অপপ্রয়োগের ঘটনা;  
(গ) হিসাব রক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যান্য অনিয়ম;  
(ঘ) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের মতে যে সকল ব্যক্তি উপ-ধারায় (ক), (খ) ও (গ) এ বর্ণিত অনিয়মের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী তাহাদের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকিতে ইহবে।  

(৫) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ, নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কপি পৌরসভাকে প্রদান করিয়া, তাহার অনুলিপি সরকার এবং কমিশনের নিকট প্রেরণ করিবে।  

(৬) নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক চিহ্নিত অনিয়ম সংক্রান্ত সকল বিষয়ে, পৌরসভা দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং গৃহীত ব্যবস্থা নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষ এবং সরকারকে অবহিত করিবে।

(৭) পৌরসভার আয় ও ব্যয়ের হিসাব ইহার নিরীক্ষা ও হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি প্রতি বৎসরে একবার নিরীক্ষা করিবে এবং এতদ্‌সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ইহার সাধারণ সভায় উপস্থাপন করিবে।

তৃতীয় অধ্যায়

অবকাঠামোগত সেবা

অবকাঠামোগত সেবামূলক প্রকল্প

৯৫৷ (১) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পরিবেশ, উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা, প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত অন্যান্য আইনের বিধান সাপেক্ষে, এবং সার্বিকভাবে এই আইনের দ্বারা অর্পিত দায়িত্ব পালনকল্পে পৌরসভা কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহিত অংশীদারিত্ব চুক্তির মাধ্যমে, কোন প্রকল্পের অর্থায়ন, বাস্তবায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন বিষয়ে সেবামূলক কার্যাবলী সম্পাদন করিতে পারিবে৷

বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত চুক্তির ধরণ বা প্রকার

৯৬। (১) পৌর অবকাঠামোগত সেবা নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে পৌরসভা বেসরকারি খাতের সহিত চুক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্পাদন করিতে পারিবে৷  

(২) পৌরসভা ইতিপূর্বে বর্ণিত ধারার উদ্দেশ্য অক্ষুন্ন রাখিয়া, নিম্নবর্ণিত ধরণের চুক্তি করিতে পারিবে, যথাঃ-  
(ক) নির্মাণ, স্বত্বাধিকারী ও হস্তান্তর;  
(খ) নির্মাণ, স্বত্বাধিকারী, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ;  
(গ) নির্মাণ ও হস্তান্তর;  
(ঘ) নির্মাণ, ইজারা ও হস্তান্তর;  
(ঙ) নির্মাণ, হস্তান্তর ও পরিচালনা;  
(চ) ইজারা ও ব্যবস্থাপনা;  
(ছ) ব্যবস্থাপনা;  
(জ) পুনর্বাসন, পরিচালনা ও হস্তান্তর;  
(ঝ) পুনর্বাসন, স্বত্ব্বাধিকার ও পরিচালনা;  
(ঞ) সেবা প্রদান চুক্তি;  
(ট) সরবরাহ, পরিচালনা ও হস্তান্তর৷

পৌরসভা বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলী

৯৭। পানি সরবরাহ, পানি নিষ্কাশন ও পয়ঃনিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট এবং বাণিজ্যিক অবকাঠামো সংক্রান্ত যে সকল কার্য পৌর পরিবেশ অবকাঠামোর সহিত সম্পৃক্ত পৌরসভা সেই সকল প্রকল্প পৌর নাগরিকগণের স্বার্থে বাস্তবায়ন করিতে নিম্নবর্ণিত দুইটি পদ্ধতি গ্রহণ করিতে পারিবে  
(ক) পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে, অথবা  
(খ) সরকারি অথবা বেসরকারি অংশীদারিত্বমূলক চুক্তির মাধ্যমে৷

চতুর্থ অধ্যায়

পৌর কর আরোপণ

পৌর করারোপণ

৯৮। পৌরসভা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত সকল অথবা যে কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল ও ফিস, ইত্যাদি আরোপ করিতে পারিবে :  তবে শর্ত থাকে যে, নূতন কোন করারোপের ক্ষেত্রে পৌরসভা সরকারের অনুমতি গ্রহণ করিবে।

প্রজ্ঞাপন ও কর প্রবর্তন

৯৯। সরকার কর্তৃক ভিন্নরূপ নির্দেশনা না থকিলে, পৌরসভা কর্তৃক আরোপিত সকল কর, উপ-কর, রেইট, টোল এবং ফিস ইত্যাদি প্রাক-প্রকাশনা সাপেক্ষে, সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইবে এবং যেই তারিখ হইতে ইহা কার্যকর হইবে পৌরসভা তাহা উল্লেখ করিবে।

আদর্শ কর তফসিল

১০০। সরকার আদর্শ কর তফসিল প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং এই আদর্শ কর তফসিলে উল্লিখিত করের পরিমাণ সকল পৌরসভার জন্য নমুনা হিসাবে গণ্য হইবে।

কর আরোপের ক্ষেত্রে নির্দেশনাবলী

১০১। সরকার যে কোন পৌরসভাকে –  
(ক) ধারা ৯৮ এর অধীনে কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস ইত্যাদি আরোপ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে; অথবা  
(খ) এইরূপ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস ইত্যাদি নির্ধারণ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে; অথবা  
(গ) এইরূপ কোন কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস ইত্যাদি আরোপ হইতে কোন ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিবর্গকে অথবা কোন সম্পত্তি অথবা শ্রেণীভুক্ত সম্পত্তিতে অব্যাহতি দেওয়ার অথবা এইরূপ কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস ইত্যাদি আরোপ স্থগিত অথবা বিলোপ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।

কর সংক্রান্ত দায়

১০২। (১) ব্যক্তি, পণ্য অথবা জীবজন্তুর কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস, ইত্যাদির দায় অথবা তাহা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে পৌরসভা যে কোন ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিবার, রেকর্ড অথবা হিসাব উপস্থাপন করিবার অথবা কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস, ইত্যাদি আরোপযোগ্য পণ্য অথবা জীবজন্তু হাজির করিবার নোটিশ প্রদান করিতে পারিবে৷  

(২) এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পৌরসভার যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী যথাযথ নোটিশ প্রদানের পর, ইমারত অথবা ঘর-বাড়ির কর, দায় মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে এইরূপ যে কোন ইমারত অথবা ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করিতে পারিবে অথবা সেইখানে অবস্থিত করারোপযোগ্য যে কোন পণ্য অথবা জীবজন্তু পরিদর্শন করিতে পারিবে৷  

(৩) এতদুদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পৌরসভার যে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোন পণ্যের উপর প্রাপ্য নগর-শুল্ক, সীমা-কর অথবা টোল অনাদায়ে, তাহা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, আটক এবং হস্তান্তর করিতে পারিবে৷

কর সংগ্রহ ও আদায়

১০৩। (১) এই আইনের অধীনে আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস, ইত্যাদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংগ্রহ করিতে হইবে।  

(২) এই আইনের অধীনে পৌরসভা কর্তৃক দাবিযোগ্য সকল কর, উপ-কর, রেইট, টোল এবং ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারি দাবি হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে।  

(৩) উপ-ধারা (২) এর বিধানাবলী সত্ত্বেও, এই আইনের অধীনে সরকার যে কোন পৌরসভা কর্তৃক দাবিযোগ্য কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য বকেয়া অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মালিকানাধীন অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয়ের মাধ্যমে অথবা তাহার স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক এবং বিক্রয়ের মাধ্যমে আদায় করিবার জন্য পৌরসভাকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।

মূল্যায়ন, কর নির্ধারণ, ইত্যাদির বিরুদ্ধে দরখাস্ত

১০৪। (১) কর, উপ-কর, রেইট, টোল অথবা ফিস অথবা এতদ্সংক্রান্ত কোন মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তির উপর অনুরূপভাবে আরোপিত করের দায় সম্পর্কে যে কোন আপত্তি মেয়র বরাবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করা যাইবে৷  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আপত্তি পাইবার পর মেয়র উহা এতদসংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির নিকট প্রেরণ করিবেন এবং স্থায়ী কমিটি প্রয়োজনীয় শুনানি গ্রহণ করিয়া দ্রুত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত দিবেন এবং এই বিষয়ে কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে৷

বেতনাদি হইতে কর কর্তন

১০৫। পৌরসভা যদি কোন পেশা, ব্যবসা অথবা বৃত্তির উপর করারোপ করিতে চায়, তাহা হইলে এইরূপ কর প্রদানের জন্য দায়ী ব্যক্তির নিয়োগকর্তার নিকট উক্ত ব্যক্তিকে প্রদেয় বেতন অথবা মজুরি হইতে কর কর্তনের জন্য পৌরসভা দাবি জানাইতে পারিবে এবং এইরূপ অধিযাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বেতন অথবা মজুরি হইতে প্রাপ্য পরিমাণ কর কর্তন করিতে হইবে এবং পৌরসভার তহবিলে জমা করিতে হইবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত কর্তনের পরিমাণ কোনভাবেই বেতন অথবা মজুরির দশ শতাংশের বেশি হইবে না৷

পঞ্চম অধ্যায়

অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, অপরাধ ও শাস্তি

যৌথ কমিটি

১০৬। কোন পৌরসভা, যে কোন অভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের জন্য অন্য যে কোন পৌরসভা অথবা পৌরসভাসমূহের সহিত কোন স্থানীয় পরিষদ অথবা পরিষদসমূহের সহিত অথবা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অথবা কর্তৃপক্ষসমূহের সহিত যৌথ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যৌথ কমিটি গঠন করিতে পারিবে।

পৌরসভা ও স্থানীয় পরিষদের মধ্যে বিরোধ

১০৭। যদি দুই বা ততোধিক পৌরসভা অথবা কোন পৌরসভা এবং কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তাহা হইলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য-  
(ক) যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ একই বিভাগীয় হয়, তবে বিভাগীয় কমিশনারের নিকট পাঠাইতে হইবে; এবং  
(খ) যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহ ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের হয় অথবা একটি পক্ষ ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হয়, তাহা হইলে সরকারের নিকট পাঠাইতে হইবে এবং, ক্ষেত্রমত, বিভাগীয় কমিশনার অথবা সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হইবে।

অপরাধ

১০৮। চতুর্থ তফসিলে বর্ণিত প্রত্যেকটি কার্য এই আইনের অধীন একটি অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে৷

শাস্তি

১০৯। এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের শাস্তি হিসাবে অনধিক দুই হাজার টাকা জরিমানা করা যাইবে এবং অপরাধটি পুনরাবৃত্তি ঘটিলে প্রথমবার অপরাধ সংঘটনের পর ঐ অপরাধের সহিত পুনরায় জড়িত থাকিবার সময়কালে প্রতিদিনের জন্য অনধিক দুইশত টাকা জরিমানা করা যাইবে।

অপরাধের আপোষ রফা

১১০। মেয়র অথবা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাধারণভাবে অথবা বিশেষভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীনে কোন অপরাধের আপোষ মীমাংসা করিতে পারিবেন।

অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ

১১১। পৌরসভা অথবা কোন ব্যক্তির নিকট হইতে লিখিত কোন অভিযোগ ব্যতীত, কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করিবে না।

ষষ্ঠ অধ্যায়

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

১১২। (১) প্রচলিত আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে, বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকের পৌরসভা সংক্রান্ত যে কোন তথ্য, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রাপ্তির অধিকার থাকিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার জনস্বার্থে এবং স্থানীয় প্রশাসনিক নিরাপত্তার স্বার্থে গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন রেকর্ড বা নথিপত্র নোটিফাইড রেকর্ড হিসাবে বিশেষ শ্রেণীভুক্ত করিতে পারিবে।  

(৩) উক্তরূপ বিশেষ শ্রেণীভুক্ত রেকর্ড ও নথিপত্রের তথ্যাদি জানিবার আবেদন অগ্রাহ্য করা যাইবে।  

(৪) সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এলাকার জনসাধারণের নিকট সরবরাহযোগ্য তথ্যাদির একটি তালিকা প্রকাশের জন্য পৌরসভাকে আদেশ দিতে পারিবে।

৫ম ভাগ

প্রথম অধ্যায়

আইন-শৃঙ্খলা

পৌরসভাকে পুলিশের সহযোগিতা

১১৩। (১) পৌরসভা এলাকার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং অন্যান্য অধস্তন কর্মকর্তা ও কর্মচারী-  
(ক) পৌরসভা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করিবার জন্য পঞ্চম তফসিলে উল্লিখিত বিধান অনুযায়ী পৌরসভাকে সহযোগিতা করিবে;  
(খ) এই আইনের বিধান অনুযায়ী নিয়োগকৃত কোন ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ পালনের জন্য পৌরসভাকে সহযোগিতা করিবে;  

(২) প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্ব হইবে-  
(ক) এই আইনে বর্ণিত কোন অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা বা অপরাধ সংঘটনের খবর সম্পর্কে অনতিবিলম্বে মেয়র এবং সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা;  
(খ) মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তার লিখিত অনুরোধের ভিত্তিতে আইন সঙ্গত দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।  

(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এর অধীন দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে তাহা প্রচলিত আইন ও বিধি বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হইবে।

পৌর পুলিশ নিয়োগ

১১৪। (১) সরকার সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, কোন পৌর এলাকায় পৌর পুলিশ গঠন করিতে পারিবে এবং তাহাদের নিয়োগ, প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা এবং অন্যান্য চাকুরীর শর্ত বিধি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইবে এবং পৌর পুলিশ পরিচালনার জন্য সরকার একজন উপযুক্ত পদমর্যাদার কর্মকর্তা প্রেষণে নিয়োগ করিবে।  

(২) পৌর পুলিশ এই আইনের পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিবে এবং এতদ্‌ব্যতীত স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর সহিত ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে এলাকার আইন শৃঙ্খলার উপর নজরদারী করিবে।  

(৩) এই আইনসহ অন্যান্য আইনের বিধান ভঙ্গের অপরাধসমূহ দমনের প্রয়োজনে, সরকার, ক্ষেত্রমত, সচিব বা ক্ষেত্রমত, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতা প্রদান বা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রেষণে নিয়োগ দান করিতে পারিবে।  

(৪) মেয়র পৌর এলাকার কোন ওয়ার্ড বা ওয়ার্ডের অংশের জন নিরাপত্তা নিশ্চিত করিবার আশু প্রয়োজন হইলে ঐ এলাকায় সক্ষম এবং প্রাপ্তবয়স্ক এবং সুস্থ যে কোন পুরুষকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঐ এলাকায় টহল দিবার লিখিত নির্দেশ প্রদান করিতে পারিবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়

বিবিধ

পৌর এলাকার জনগণের সহিত মতবিনিময়

১১৫। (১) প্রতি পৌরসভায় নির্বাচিত পৌরসভা সেবামূলক ও অন্যান্য কার্যে জনগণের মতামত গ্রহণের উদ্দেশ্যে কমিটি গঠন করিবে যাহার সদস্য সংখ্যা সর্বোচ্চ পঞ্চাশ (৫০) হইতে পারিবে।    

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন গঠিত কমিটির সভায় কর ধার্যকরণ ও আদায়সহ বিভিন্ন সেবা ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্পর্কে সদস্যগণের মতামত ব্যক্ত করিবার সুযোগ থাকিবে।

প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান

১১৬। (১) সরকার পৌর এলাকার স্থানীয় সরকার এবং আনুষঙ্গিক বিষয়ে গবেষণার উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের প্রশিক্ষণের জন্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা প্রতিষ্ঠা করিতে পারিবে।  

(২) পৌরসভা উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, উক্তরূপ প্রতিষ্ঠান পরিচালনা, মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণের প্রশিক্ষণ, উক্ত প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা, পরীক্ষা গ্রহণ এবং কৃতকার্য প্রার্থীদের মধ্যে ডিপ্লোমা ও সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করিবার লক্ষ্যে উপ-আইন প্রণয়ন করিতে পারিবে।  

(৩) বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উপ-ধারা (১) এর অধীনে স্থাপিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের ব্যয় পৌরসভা তহবিল হইতে নির্বাহ করা যাইবে।

সীমানা লংঘন

১১৭। (১) কোন ব্যক্তি কোন পৌরসভার জায়গা, সড়ক রেখা, ইমারত রেখা অথবা নর্দমার উপর অথবা ভিতরে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে অন্যায় দখল করিতে পারিবেন না৷  

(২) পৌরসভা নোটিশ প্রদানের মাধ্যমে, উল্লিখিত সীমানা লংঘনকারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উল্লিখিত স্থানসমূহ হইতে তাহার সম্পদ বা সম্পত্তি অপসারণ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাহা অপসারণ না করা হয়, তাহা হইলে পৌরসভা স্বীয় সংস্থার মাধ্যমে তাহা অপসারণের ব্যবস্থা করিবে এবং এই বাবদ খরচের অর্থ এই আইন অনুসারে সীমানা লংঘনের জন্য দায়ী ব্যক্তির উপর পৌরসভার পাওনা হিসাবে ধার্য হইবে৷  

(৩) অন্য কোন আইনে যাহাই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুসারে অপসারিত অথবা অপসারণযোগ্য কোন অন্যায় দমনের জন্য কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হইবে না৷

আপিল আদেশ

১১৮। (১) এই আইন, বিধি, প্রবিধান বা উপ-আইন অনুসারে প্রদত্ত কোন পৌরসভা বা উহার মেয়রের কোন আদেশ দ্বারা সংক্ষুদ্ধ কোন ব্যক্তি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট আপিল করিতে পারিবেন।  

(২) আপিলের আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং এই আদেশের বিরুদ্ধে কোন আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।

স্থায়ী আদেশ

১১৯। সরকার, সময়ে সময়ে, স্থায়ী আদেশ দ্বারা-  

(ক) পৌরসভাসমূহের মধ্যে এবং স্থানীয় পরিষদ ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে;  
(খ) পৌরসভা ও সরকারি দপ্তরসমূহের কার্যাবলীর সমন্বয় সাধন করিতে পারিবে;  
(গ) পৌরসভাকে আর্থিক সহায়তা প্রদানসহ, বিশেষ শর্তে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে, মজুরি প্রদান করিতে পারিবে;  
(ঘ) এক পৌরসভা কর্তৃক অন্য পৌরসভাকে অথবা স্থানীয় অন্য কোন কর্তৃপক্ষকে চাঁদা প্রদানের ব্যবস্থা করিতে পারিবে; এবং  
(ঙ) এই আইনের উদ্দেশ্যপূরণকল্পে পৌরসভাকে সাধারণ নির্দেশনা প্রদান করিতে পারিবে।

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

১২০। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে-  
(ক) সরকার দফা (খ) এর বিধান সাপেক্ষে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে;  
(খ) নির্বাচন কমিশন মেয়র ও পৌর কাউন্সিলরের নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের আচরণ, নির্বাচন বিরোধ, নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধ, উক্তরূপ অপরাধের দন্ড, প্রয়োগ এবং এতদ্‌সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, সরকার ষষ্ঠ তফসিলে বর্ণিত বিষয়সমূহের যে কোন বিষয়ে বা সকল বিষয়ে এবং যে সকল বিষয় প্রাসঙ্গিক ও পরিপূরক হয় সেই সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

১২১। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, পৌরসভা সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে এবং সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনের বা বিধির সহিত অসমাঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে।  

(২) বিশেষত এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, অনুরূপ প্রবিধানে সপ্তম তফসিলে উল্লিখিত সকল বা যে কোন বিষয় থাকিবে।

উপ-আইন প্রণয়নের ক্ষমতা

১২২। (১) পৌরসভা, এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, অষ্টম তফসিলে বর্ণিত বিষয় সম্পর্কে উপ-আইন প্রণয়ন করিতে পারিবে।  

(২) বিশেষত এবং পূর্ববর্তী ক্ষমতার সামগ্রিকতা ক্ষুণ্ন না করিয়া এইরূপ উপ-আইন অষ্টম তফসিলে বর্ণিত যে কোন অথবা সকল বিষয়ে এবং প্রাসঙ্গিক ও পরিপূরক সকল বিষয়ে বিধান করিতে পারিবে।

ক্ষমতা অর্পণ

১২৩। (১) সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এই আইনে বা বিধিসমূহে বর্ণিত যে কোন দায়িত্ব ও ক্ষমতা বিভাগীয় কমিশনার বা তাঁহার অধঃস্তন কোন কর্মকর্তাকে অর্পণ করিতে পারিবে।  

(২) বিভাগীয় কমিশনার, প্রয়োজনবোধে, অর্পিত ক্ষমতা তাহার অধঃস্তন অন্য কোন কর্মকর্তাকে পুনঃঅর্পণ করিতে পারিবে।

লাইসেন্স ও অনুমোদন

১২৪। (১) এই আইন, বিধি, প্রবিধান বা উপ-আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, পৌরসভার অনুমতি বা অনুমোদন প্রদানের প্রয়োজন হইলে, উহা লিখিত আকারে প্রদান করিতে হইবে।  

(২) পৌরসভা কর্তৃক অথবা পৌরসভার কর্তৃত্বের অধীনে প্রদত্ত সকল লাইসেন্স অনুমোদন মেয়র কর্তৃক অনুমোদনক্রমে ক্ষমতাপ্রাপ্ত পৌরসভার কোন কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হইবে।

প্রকাশ্য রেকর্ড

১২৫। এই আইনের অধীনে প্রস্তুতকৃত সকল রেকর্ড অথবা সংরক্ষিত সকল রেজিস্টার Evidence Act, 1872 (Act No. I of 1872) এ ব্যবহৃত অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড হিসাবে গণ্য হইবে এবং বিপরীত প্রমাণিত না হইলে তাহা বিশুদ্ধ বলিয়া গণ্য হইবে৷

জনসেবক

১২৬। পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, এবং পৌরসভার পক্ষে কাজ করিবার জন্য যথাযথ ক্ষমতাপ্রাপ্ত বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি দণ্ডবিধির ধারা ২১ এ জনসেবক (Public servant) কথাটি যে অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক বলিয়া গণ্য হইবেন৷

সরল বিশ্বাসে কৃতকার্য রক্ষণ

১২৭। এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধি বা প্রবিধান বা উপ-আইন বা আদেশের অধীন দায়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কার্যের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে, তজ্জন্য সংশ্লিষ্টের বিরুদ্ধে কোন মামলা দায়ের, অভিযোগ পেশ অথবা অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না।

তৃতীয় অধ্যায়

ক্রান্তিকালীন এবং অস্থায়ী বিধানাবলী

প্রথম নির্বাচনের জন্য পৌরসভা ও ওয়ার্ডসমূহ

১২৮। সরকার ভিন্নরূপ নির্দেশ প্রদান না করিলে, এই আইন প্রবর্তনের অব্যবহিত পূর্বে বিদ্যমান পৌরসভাসমূহ ধারা ৪ সাপেক্ষে, পৌরসভা হিসেবে গণ্য হইবে।

নির্ধারিত কতিপয় বিষয়

১২৯। এই আইনের অধীন কোন বিষয়ে সুর্নিদিষ্ট কোন বিধান না থাকিলে, কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা কি পদ্ধতিতে তাহা করিতে হইবে তাহার বিধান না থাকিলে, অথবা যথেষ্ট বিধান না থাকিলে, তাহা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে সম্পাদিত হইবে।

অসুবিধা দূরীকরণ

১৩০। এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে, কোনো অসুবিধা দেখা দিলে উক্ত অসুবিধা দূরীকরণার্থ, আদেশ দ্বারা প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, এই আইন বলবৎ হইবার সময় হইতে দুই বৎসর অতিক্রান্ত হইবার পর অনুরূপ কোন আদেশ দেওয়া যাইবে না।

রহিতকরণ ও হেফাজত

১৩১। (১) এই আইন প্রবর্তনের সাথে সাথে Paurashava Ordinance, 1977 (Ord. No XXVI of 1977) অতঃপর উক্ত আইন বলিয়া উল্লিখিত, রহিত হইবে।  

(২) উক্ত আইন রহিত হইবার পর-  
(ক) এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইনের অধীনে পৌরসভাসমূহ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত-  (অ) এইরূপ রহিতকরণের অব্যবহিত পূর্বে পৌরসভাসমূহ যে সকল কার্য সম্পাদন করিত তাহা অব্যাহত থাকিবে এবং এই আইনের অধীনে পৌরসভা গঠিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;  (আ) এইরূপ রহিতকরণের পূর্বে কোন পৌরসভার প্রশাসক পদে কর্মরত ব্যক্তি তাঁহার পদে বহাল থাকিবেন;  


(খ) এইরূপ রহিত হইবার পূর্বে, উক্ত আইন এর অধীনে প্রণীত সকল বিধি, প্রবিধান, উপ-আইন অথবা আদেশ, জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অথবা বিজ্ঞপ্তি অথবা মঞ্জুরীকৃত লাইসেন্স অথবা অনুমতি, এই আইনের বিধানাবলীর সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হইলে, এই আইনের বিধানবলীর অধীনে রহিত অথবা সংশোধিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে এবং এই আইনের অধীনে প্রণীত, জারিকৃত অথবা মঞ্জুরীকৃত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;  


(গ) এইরূপ রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে, বিদ্যমান পৌরসভার সকল সম্পদ, অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং সকল স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, তহবিল, বিনিয়োগ এবং এইরূপ সম্পিত্তিতে অথবা তাহা হইতে উদ্ভূত সকল অধিকার এবং স্বার্থ উত্তরাধিকারী পৌরসভার নিকট হস্তান্তরিত ও ন্যস্ত হইবে;  


(ঘ) এইরূপ রহিত হইবার পূর্বের পৌরসভার সকল ঋণ, দায় এবং দায়িত্ব এবং ইহার দ্বারা বা সহিত অথবা ইহার পক্ষে সম্পাদিত সকল চুক্তি, সকল বিষয় উত্তরাধিকারী পৌরসভার উপর বর্তাইবে এবং ইহার দ্বারা বা সহিত অথবা ইহার পক্ষে সম্পাদিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;  

(ঙ) এইরূপ রহিত হইবার পূর্বের পৌরসভা কর্তৃক প্রণীত সকল প্রাক্কলিত বাজেট, কর নির্ধারণ, মূল্যায়ন, প্রকল্প অথবা পরিকল্পনা এই আইনের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ না হইলে, ইহার বিধানাবলীর অধীনে সংশোধিত অথবা রহিত না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে এবং এই আইনের বিধানাবলীর অধীনে উত্তরাধিকারী পৌরসভা কর্তৃক প্রণীত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে;  


(চ) এইরূপ রহিত হইবার পূর্বের পৌরসভার প্রাপ্য সকল কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ এই আইনের অধীনে উত্তরাধিকারী পৌরসভার বলিয়া গণ্য হইবে;  


(ছ) এইরূপ রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বের পৌরসভা কর্তৃক আরোপিত সকল কর, উপ-কর, রেইট, টোল, ফিস ও অন্যান্য দাবি এই আইনের অধীনে উত্তরাধিকারী পৌরসভা কর্তৃক পরিবর্তন না করা পর্যন্ত যেই হারে পূর্বে আরোপ করা হইয়াছিল সেই একই হারে আরোপিত হইতে থাকিবে;  


(জ) পৌরসভার সকল কর্মকর্তা এবং কর্মচারী উত্তরাধিকারী পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারী হিসাবে বদলী হইবেন এবং রহিত হইবার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল শর্তে পৌরসভায় যেই পদে অথবা কর্মে নিয়োজিত ছিলেন পৌরসভা কর্তৃক সেই সকল শর্ত যথাযথ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত একইভাবে বহাল থাকিবেন;  


(ঝ) এইরূপ রহিত হইবার পূর্বে, পৌরসভা কর্তৃক অথবা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলা, অভিযোগ এবং অন্যান্য বৈধ কার্যাবলী পৌরসভা কর্তৃক অথবা ইহার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা, অভিযোগ এবং কার্যাবলী বলিয়া গণ্য হইবে এবং তদানুসারে চলিতে থাকিবে অথবা অন্যবিধ ব্যবস্থা গৃহীত হইবে।  

(৩) উপ-ধারা (২) এর উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, কোন একটি পৌরসভাকে উত্তরাধিকারী পৌরসভা হিসাবে গণ্য করা হইবে যাহার জন্য পৌরসভা গঠন করা হইয়াছে অথবা গঠিত বলিয়া গণ্য করা হইয়াছে।  

(৪) স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) অধ্যাদেশ, ২০০৮ (২০০৮ সনের ১৭নং অধ্যাদেশ), অতঃপর রহিত অধ্যাদেশ বলিয়া উল্লিখিত, এতদদ্বারা রহিত করা হইল।  

(৫) রহিত অধ্যাদেশের অধীন প্রদত্ত আদেশ, কৃত কাজ-কর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা ও অনুষ্ঠিত নির্বাচন এই আইন এর অধীন প্রদত্ত আদেশ, কৃত কাজ-কর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা ও অনুষ্ঠিত নির্বাচন বলিয়া গণ্য হইবে।

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা