
১৯৬৬ সালের ছয়দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের সাধারণ নির্বাচন ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ কোথায় অংশগ্রহণ করেনি পাহাড়ের মানুষ?
এমনকি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনেও সম্পৃক্ত ছিলেন অনেক পাহাড়ি নেতা, যাঁদের মধ্যে সদ্যপ্রয়াত ভাষা সৈনিক উসুয়ে হাওলাদারের কথা আমরা গর্বের সাথে উল্লেখ করতে পারি।
পূর্বে যে নামই থাক না কেন, বাংলাদেশ ভূখন্ডের সাধারণ মানুষের প্রাণের প্রতিটি দাবির সাথে সাধারণ খেটে খাওয়া পাহাড়ি জনতা সবসময় একাত্তা হয়েছে, করেছে যুদ্ধ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।
জানা যায়, ১৯৬৬ সালে লাহোরে বঙ্গবন্ধুর পেশ করা ৬ দফার দাবিতে সারা পূর্ব পাকিস্তানে যখন অসহযোগ আন্দোলন সংঘটিত হয়, তখন পাহাড়ের দোকানপাট রাস্তাঘাটগুলো অচল করে দেওয়া হয়েছিল পাহাড়ি-বাঙালি পার্বত্যবাসীদের সম্মিলিত উদ্যোগে (মঙ্গল কুমার চাকমা, ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮)।
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্খায় সর্বস্তরের জনতা মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়লে পাহাড়ের জনসাধারণও এই যুদ্ধে সামিল হয়।
মং সার্কেলের রাজা মংপ্রু সাইন তাঁর সহায়-সম্বল সবকিছু দান করে এবং নিজে সরাসরি রণক্ষেত্রে অবতীর্ন হয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
চাকমা রাজপরিবারের অন্যতম সদস্য ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কুমার কোকনাদক্ষ রায়ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন।
ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলে (ইপিআর) কর্মরত রমনী রঞ্জন চাকমা, হেমরঞ্জন চাকমা, অ্যামি মারমা, উক্যচিং মারমা (পরে বীরবিক্রম উপাধিপ্রাপ্ত এবং সদ্যপ্রয়াত), রণবিক্রম ত্রিপুরা, সুবোধ বিকাশ ত্রিপুরা, হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরা প্রমুখসহ বহু পাহাড়ি সেনা মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশগ্রহণ করে দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে অসীম সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শন করতে সক্ষম হন।
পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত বিমলেশ্বর দেওয়ান, ত্রিপুরা কান্তি চাকমাসহ বহু কর্মকর্তা ও কনস্টেবল মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।
এ ছাড়া সিভিল সার্ভিসে কর্মরত বরেন ত্রিপুরা, কৃপাসুখ চাকমা, আনন্দ বাঁশী চাকমাসহ বহু আদিবাসী কর্মকর্তা দেশত্যাগ করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে প্রবাসী সরকারে অবদান রাখেন।
শহীদ হন গৌরাঙ্গ দেওয়ান, চিত্তরঞ্জন কার্বারিসহ আরো নাম না জানা অনেকে। সম্ভ্রম হানি হয় বহু মা বোনের।
অন্যদিকে পাকিস্তান সরকারের পক্ষাবলম্বন করার দোষে দোষী সাব্যস্ত হন চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় ও বোমাং রাজা অংশুয়েপ্রু চৌধুরী, যদিও তাঁরা এ ব্যাপারে তৃণমূল জনগণকে প্রভাবিত করেছিলেন বলে কোন জোরালো তথ্য প্রমান অন্তত এই নিবন্ধের লেখকের দৃষ্টিগোচর হয়নি।
সে যাই হোক, ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে দীর্ঘ বন্দী জীবনের অবসান ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধু স্বাধীন মাতৃভূমি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। শুরু করলেন শাসনতন্ত্র প্রণয়নের প্রক্রিয়া।
এ সময় পাহাড়ের জনগণের পক্ষে তৎকালীন সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, চারু বিকাশ চাকমাসহ অনেকে কয়েক দফায় সংবিধানে পাহাড়ের জাতিসত্তাগুলোর স্বীকৃতি চেয়ে দাবি উত্থাপন করা হয়।
যে কোন কারণে হোক সেই দাবি উপেক্ষিত থেকে যায়। ১৯৭৩ সালে নতুন সংবিধানের অধীনে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু রাঙ্গামাটি সফরে গিয়ে এক জনসভায় ঘোষণা করেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদেরকে জাতিতে পদোন্নতি করা হলো। আজ থেকে সকলে বাঙ্গালি।’
এই ঘোষণা পাহাড়ি জনগণের মাঝে ভুল বার্তা পৌঁছে দেয়। যদিও এ ব্যাপারে ডাঃ এ কে দেওয়ান তাঁর লেখা ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থে বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বোঝাতে চেয়েছেন স্বাধীন বাংলাদেশে কোন জাতিভেদ থাকবে না।
একজন বাঙ্গালি নাগরিক যে অধিকার ভোগ করবে, একজন পাহাড়িও সেটি ভোগ করার অধিকার রাখবে।’
তাঁর মতে, বঙ্গবন্ধুর এই ভাষন পাহাড়ের মানুষ সঠিকভাবে বুঝতে পারেননি। ফলে তাদের মনে সন্দেহ ও অসন্তোষের সৃষ্টি করে, যা আজও বিদ্যমান রয়েছে (ডাঃ এ কে দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও বঙ্গবন্ধু, ২০১১)।
বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষনে পাহাড়িদেরকে বাঙ্গালি হয়ে যাওয়ার জন্যে আহবান জানালেও পরবর্তীতে কিছু কার্যক্রমে পার্বত্যাঞ্চলের জনগণের সার্বিক উন্নয়নের ব্যাপারে তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গীর কিছু নমুনা দেখা যায়। ডাঃ এ কে দেওয়ানের তথ্য ধার করেই বলা যায়-
চাকমা রাজা ত্রিদিব রায় সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে তাঁর কাছের মানুষগুলো নেতিবাচকভাবে বুঝিয়েছিল বটে। কিন্তু তিনি পাকিস্তান থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেই রাজা ত্রিদিব রায়কে দেশে ফেরানোর জন্য আমেরিকায় বিশেষ দূত প্রেরণ করেন।
চাকমা রাজা ফিরে না আসায় ১৯৭৩ সালে তাঁর অষ্টম শ্রেনি পড়–য়া নাবালক রাজপুত্র কুমার দেবাশীষ রায়কে সিংহাসনে অভিষেক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কোন বৈরী আচরণ তাঁর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
একই বছর জুন মাসে বঙ্গবন্ধু দেশের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের জন্যে বিশেষ কোটা ব্যবস্থা প্রবর্তনের নির্দেশ প্রদান করেন।
ফলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ৩টি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ২টি, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি, কৃষি কলেজে ২টি ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৫টি করে আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
একই বছর ১৯৭৩ সালেই পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড গঠনের রূপরেখা ঘোষণা করা হয়। এই রূপরেখা ঘোষণার সময় বঙ্গবন্ধু দেশে ছিলেন না।
তাই বলা হয়েছিল, তিনি দেশে ফিরলেই এই বোর্ডকে চূড়ান্ত রূপদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
একই বছর জুলাই মাসে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় দুইটি শিক্ষার্থীনিবাস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উক্ত দুই প্রধান শহরে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্যে। এই দুই শিক্ষার্থীনিবাসের মধ্যে ঢাকারটার দখল পাওয়া গেলেও চট্টগ্রামেরটা পাওয়া যায়নি।
একই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃত্তি দিয়ে উচ্চডিগ্রী লাভের সুযোগও সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই বৃত্তির অধীনে বহু পাহাড়ি শিক্ষার্থী ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিশিক্ষা, হাইড্রোইলেকট্রিক্ট, নার্সিংসহ বিভিন্ন উচ্চডিগ্রী লাভে সক্ষম হয়েছিলেন।
পাহাড়ের শিক্ষার্থীরা প্রথম বারের মতো সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পোল্যা-, সোভিয়েত ইউনিয়ন, হাঙ্গেরী, পূর্ব জার্মানি, ভারত ও কিউবার মতো দেশে শিক্ষা লাভের সুযোগ পান। ১৯৭৫ সনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে উপরের অধিকাংশ ইতিবাচক কর্মকান্ডই ব্যাহত হয়।
রাজা ত্রিদিব রায় ও রাজা অংশুয়ে প্রু চৌধুরীর পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করার অজুহাতে মতলববাজ ও ছিদ্রান্বেষী কিছু মানুষ পাহাড়ের সকল মানুষকে পাকিস্তানের পক্ষে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিপক্ষে হিসেবে দাঁড় করায়, যা আজও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহত রয়েছে (আজাদ মাষ্টার, ২১ ডিসেম্বর ২০১২)।
কলাম লেখক আজাদ মাষ্টারের মতে, ষাটের দশকে কাপ্তাই বাঁধ নির্মিত হওয়ার পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে এই এলাকায় ব্যক্তি উদ্যোগে বাঙ্গালি অভিবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু তখনও এটি সহনীয় পর্যায়ে ছিল।
১৯৭২ সালের ২১ মার্চ তৎকালীন পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন মোহাম্মদ জিন্নাত আলী। আজাদ মাষ্টারের মতানুসারে, জিন্নাত আলী ছিলেন প্রচ- রকমের সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির অধিকারী এক অফিসার।
তিনিই সর্বপ্রথম বাঙ্গালি অভিবাসনের এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ‘রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ’-এ রূপ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছিলেন বলে জানা যায়। তাঁর দপ্তর থেকে তিনি স্থানীয় পাহাড়ি জনগণের ব্যাপারে নানা নেতিবাচক তথ্য বঙ্গবন্ধুর কাছে পৌঁছিয়ে দিতেন বলে জানা যায়।
১৯৭৪ সালের ১৭ এপ্রিল পার্বত্যবাসীর সৌভাগ্যক্রমে এ এম আব্দুল কাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার ডিসি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি পাহাড়ের আর্থ-সামাজিক বিষয়াবলীর প্রকৃত রূপ বুঝতে পেরেছিলেন।
তাঁর সহকর্মী তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে ফজলুল হকও তাঁর মতো মানবতাবাদী ছিলেন। দুই সেকুলার অফিসার আবার বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি ছিলেন।
তাই তাঁরা বঙ্গবন্ধুর সাথে সশরীরে সাক্ষাত করে পাহাড়ের প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং পূর্বের জেলা প্রশাসকের দেওয়া বাঙ্গালি পুনর্বাসনের প্রস্তাব বাতিল করার জন্য পরামর্শ দেন। ফলে বঙ্গবন্ধু আগের জেলা প্রশাসক জিন্নাত আলীর দেওয়া বাঙ্গালি পুনর্বাসনের প্রস্তাব নাকচ করে দেন।
১৯৭৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু আবার পার্বত্য চট্টগ্রাম সফরে আসেন এবং এখানাকর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেন।
এই সভায় তিনি উপস্থিত নেতৃবৃন্দের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেন এবং পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতি অনুধাবন করার চেষ্টা করেন। এই সভার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে তিনি বাকশাল গঠনের সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য কিছু বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
পাহাড়ের জনগণের আস্থা অর্জনের লক্ষে তিনি নতুন রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে মং রাজা মংপ্রু সাইনকে খাগড়াছড়ির, বোমাং রাজা মংশুয়ে প্রু চৌধুরীকে বান্দরবান এলাকার এবং জেলা প্রশাসক এ এম আব্দুল কাদেরকে (সম্ভবত রাজা দেবাশীষ রায় নাবালক থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে) রাঙ্গামাটি জেলার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ করেন।
অন্যদিকে সেক্রেটারি হিসেবে খাগড়াছড়িতে অনন্ত বিহারী খীসা, বান্দরবানে বোমাং রাজপুত্র কে এস প্রু এবং রাঙ্গামাটিতে চারু বিকাশ চাকমাকে নিয়োগ করেন।
সম্ভবত এসব ইতিবাচক পদক্ষেপ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সমাধানের জন্যে বঙ্গবন্ধুর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসের শুরুতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অবিসম্বাদিত নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বাকশালে যোগদান করেন।
ফলে এতদিনের বিরাজমান পরস্পর অবিশ্বাস ও বঞ্চনার গ্লানি ভুলে গিয়ে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আকাঙ্খা দানা বাঁধতে শুরু করে পাহাড়ের খেটে খাওয়া মানুষের বুকে।
কিন্তু বিধি বাম! ১৯৭৫ সালের পনেরোই আগষ্ট সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করে সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত একটি দেশকে অভিভাবকহীন করে ফেলে সাম্রাজ্যবাদের পদলেহী, ক্ষমতালোভী কিছু পদস্খলিত উচ্চাভিলাষী সামরিক- বেসামরিক ষড়যন্ত্রকারী।
ভেঙ্গে চুড়মার হয়ে যায় পাহাড়ি জনতার স্বপ্ন। শুরু হয় একটি কালো অধ্যায়ের। ‘ব্যক্তিস্বার্থে লাভবান হওয়া যায়’ এমন প্রকল্প ব্যতিত বঙ্গবন্ধুর গৃহিত ও অনুমোদিত সকল প্রকল্প ও পরিকল্পনা বাতিল করে দেওয়া হয়।
সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন অফিসারদের বেছে বেছে শাস্তিমূলক বদলি হিসেবে পাহাড়ে পদায়ন করা হতে থাকে। বঙ্গবন্ধু গৃহিত সকল ক্ষমতায়নমূলক প্রকল্প ও কর্মসূচির
বিপরীতে উচ্ছেদ-উৎখাত আর কোনঠাসা করার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রচন্ড রকমের সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির অধিকারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জিন্নাত আলীর আঁস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত প্রকল্পকে ডাস্টবিন থেকে তুলে এনে স্থান দেওয়া হয় অগ্রাধিকারের তালিকায়।
পরিবর্তন হয়ে যায় পাহাড়ের ছড়া ঝরনার সাধারণ পথরেখা। স্বপ্নকাতর একজন উদাসী মানুষ হিসেবে বড়ো বেশি কল্পনা করতে ইচ্ছে করে, পঁচাত্তরে যদি পনেরোই আগষ্ট তারিখটি না থাকতো এবং সেই তারিখে যদি সেই নির্মম হত্যাকান্ডটি না ঘটতো, তাহলে কেমন হতো এই পাহাড় আর পাহাড়ের রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি আর অর্থনীতির চেহারা!…
১৫ আগষ্ট ২০১৫ উপলক্ষে খাগড়াছড়ির অপ্রথাগত সংবাদকর্মী প্রদীপ চৌধুরী সম্পাদিত বিশেষ স্মারক সংকলন ‘পিতা’য় প্রকাশিত (মূল প্রবন্ধ হতে কিছুটা সম্পাদিত)