আদিবাসী নারীর বিড়ম্বনা : প্রেক্ষাপট পার্বত্য চট্টগ্রাম
690
একদা নিসর্গের দুহিতা পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রকতির অপার সম্ভার আর অপরূপ সুষমা দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিল আগন্তক পরিবাজকদের বিস্ময়ভরা দু’চোখে। যেদিকে দুচোখ যায় গায়ে ঘন-সবুজ বনের আচ্ছাদন নিয়ে অসংখ্য ছােট-বড় পাহাড়ের আন্দোলিত বিস্তার অবলােকনে প্রতিটি সৌন্দৰ্য-পিয়াসী মানুষ হৃদয়ের গভীরে অনুক্ষণ এক অনাস্বাদিত স্বর্গীয় আনন্দের বহমান ফল্গুধারার অস্তিত্বকে অনুভব করতে পেরেছিল।
পাহাড়, নদী, অরণ্যের এমন নান্দনিক যুগলবন্ধন এ আরণ্য-জনপদকে করেছে অপরূপা। পাহাড় বেয়ে নেমে আসা ঝর্ণার অবিশ্রান্ত কলতান, অরণ্যের নৈশব্দ ভাষা, সুউচ্চ পাহাড়ের ধ্যানী মৌনতা এ পার্বত্য-প্রকৃতিকে করেছে রমণীয়, মােহনীয়।
ভােগবাদের প্রান্ত-সীমার বহু দূরে এ পার্বত্য জনপদে জীবনের আটপৌঢ়ে চাহিদায় তুষ্ট আদিবাসী জনগােষ্ঠীর হৃদয়মূলে অনাবিল শান্তি অন্তসলিলা হয়ে বহমান ছিল। চাহিদা ছিল ক্ষুদ্র, প্রাপ্তিও ছিল সামান্য। কিন্তু আনন্দ ছিল অপরিমেয়, হাসি ছিল আকর্ণ ।
কিন্তু বিষয়ী ও মতলবী মানুষের চোখ পড়তে দেরী হয়নি এ অরণ্য ভূ-খন্ডে। সাম্রাজ্যবাদ, উপনিবেশবাদ আর আধিপত্যবাদের হাত ধরে ক্ষমতাধর প্রভুদের কায়েমী স্বার্থ শিকড় গেড়েছে এখানে অনেকদিন থেকে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এ অঞ্চলের আস্তানা গুটিয়ে নিলেও অভ্যন্তরীণ উপনিবেশবাদ আর আধিপত্যবাদ সেই খালি আসনে স্থায়ী হয়েছে।
ফলে আগ্রাসন, শােষণ আর নিপীড়নের প্রক্রিয়ায় কোন ছেদ পড়েনি। বরঞ্চ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি যেখানে বনজ সম্পদ লুণ্ঠনে তাদের শােষণ প্রক্রিয়াকে সীমিত রেখেছিল সেখানে অভ্যন্তরীণ উপনিবেশবাদী ও আধিপত্যকামীরা বনজ সম্পদ ছাড়াও ভূমিগ্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলাে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের প্রান্তিক অবস্থানের দিকে যাত্রা তাই থেমে যেতে পারেনি। ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের সমাজ, অর্থনীতি ও রাজনীতি হয়েছে বিপর্যস্ত। দিন যাপনের গ্লানি হয়েছে অসহনীয়। আপন মর্যাদায় মাথা উঁচু করে চলার অধিকার হয়েছে ভূলুণ্ঠিত।
ফলে ঐশ্বৰ্য্যময়ী প্রকৃতির কোলে বেড়ে ওঠা অপাপবিদ্ধ শান্তি ক্রমান্বয়ে মুখ লুকিয়েছে সম্ভ্রম হারানাের ভয়ে। এখানকার আদিবাসী জনগােষ্ঠীর এ ত্রিশঙ্কু অবস্থার জন্য রাষ্ট্রের একচোখা নীতি অনেকাংশে দায়ী। আর এ নীতির সবচেয়ে অসহায় বলি হলাে আদিবাসী নারী।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সমাজ জুম চাষকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে শতবর্ষ ধরে। এখনও জুম চাষ এখানকার আদিবাসী অর্থনীতির একটি শক্ত খুঁটি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে। আদিবাসী গৃহস্থ পরিবারের জীবিকার একটি বড় অবলম্বন হিসেবে এখনও জুমের অবস্থানের শক্ত ভিত নড়ে যায়নি কৃষি-জগতে নানান অগ্রগতির পরেও।
জুম চাষের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বনজসম্পদও আদিবাসীদের জীবিকার একটি বড় উৎস। এই আরণ্য জনপদে শতাব্দীকাল ধরে আদিবাসী জনগােষ্ঠী পাহাড়ের বুকে ফসল বুনেছে শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহের তাগিদে। সেখানে মুনাফার কোন প্রত্যাশা ছিল না, ছিল না কোন বিলাসিতার মােহ। জীবন-নির্বাহী জীবিকার এ ব্যবস্থাতেই তারা তৃপ্ত ছিল।
আদিবাসী জীবন ও জীবিকার এ চিত্রকল্পে আদিবাসী নারীকে আমরা দ্বৈত ভূমিকায় আবিষ্কার করি- উৎপাদন এবং সংজনন। আরও সহজ করে বলতে পারি ফসল বােনা ও সন্তানের জন্ম দেয়া। এ দ্বৈত ভূমিকায় আদিবাসী নারী একদিকে সে প্রেমময়ী স্ত্রী ও স্নেহময়ী মা, অন্যদিকে একজন সক্রিয় উৎপাদনকারী।
তাকে সন্তানের জন্ম দেয়া ও তাদের লালন করা, গৃহাঙ্গনের যাবতীয় কর্ম, জুমের ফসল বােনা থেকে শুরু করে ফসল তােলার সময় পর্যন্ত জুম সংশ্লিষ্ট সকল প্রকার কাজ, বন থেকে বনজ দ্রব্য আহরণের জন্য প্রয়ােজনীয় শ্রম সবই তাকে দিয়ে যেতে হয় উদায়াস্ত। এমনকি উৎপাদিত দ্রব্য বেচা ও গৃহস্থলির জন্য অপরিহার্য দ্রব্য কিনতে তাকে বাজার পর্যন্ত চলে আসতে হয়।
বাজারে গিয়ে চতুর ব্যাপারীদের খপ্পরে পড়ে, ভাষা ভালাে না বুঝতে পেরে এই সহজ-সরল আদিবাসী গৃহবধূটি দামে প্রতারিত হয়। দিনের পর দিন অপরিসীম শ্রম ভয় উৎপাদিত ফসল কিংবা আহরিত বনজ সামগ্রী যে অমানুষিক কষ্ট স্বীকার করে তারা বাজারে নিয়ে আসে তার ন্যায্য দাম পাওয়া থেকে ক্রমাগত বঞ্চিত হয়ে চলে।
এভাবে উপার্জিত আর্থ তেল, নুন ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী কিনতে গিয়ে আবারও তাকে প্রতারিত হতে হয় বাজারের দোকানীর কাছে। প্রতারণা, বঞ্চনা এ সব খেটে খাওয়া আদিবাসী নারীদের নিত্য সঙ্গী। আবার কাজের ফাঁকে সামান্য অবসরে কাপড় বুনতে বসে যায়।
দেহের একটুখানি সুখ, যত্ন, রূপ পরিচর্যার কথা তাকে ভুলে যেতে হয়। এ সব তাে তার জন্য বিলাসিতা। ঘুর্ণাক্ষরেও কখনাে কি তার মনে এই চিন্তার উদয় হয়েছে যে, তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? তার মানবাধিকার লংঘন হয়েছে?
পুঁজির অব্যাহত বিকাশের ধারায় মূলধারার জনগােষ্ঠীর ক্রমসম্প্রসারণশীল অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রাধান্যের মুখে অসহায় আদিবাসী জনগােষ্ঠীর লােকালয়, জীবিকার উৎস বন-পাহাড়-জমি ক্রমশ সংকুচিত হয়ে তাদের জীবন ধারণ প্রক্রিয়াকে সংকটাপূর্ণ করে তুলেছে।
তাদের জীবন ধারণের সমস্ত অবলম্বনকে ভয়াবহ সংকটের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। আদিবাসীদের জীবিকার ভিত্তি, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির মধ্যে যে একটা অবিচ্ছিন্ন বন্ধন ছিল তা ক্রমশ ক্ষীণতর হয়েছে। আর এ নাজুক অবস্থার অনিবার্য বলি হলাে আদিবাসী নারী।
আদিবাসী সমাজে নারীরা স্বকীয় বৈশিষ্ট্য ও সৌকর্যমন্ডিত অলংকারে, পােষাকে-আচ্ছাদনে সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্রের মূর্ত প্রতীক। আবহমান ঐতিহ্যের ধারায় আদিবাসী নারী নিজস্ব ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীরাও নিজেদের নৃ-পরিচয় ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে এমন পরিধেয় ও ব্যবহার্য বিভিন্ন পদের কাপড় নিজস্ব তাঁতে তৈরী করে।
এ সব বেশ-ভূষা দর্শনে ঐ নারী কোন আদিবাসী জনগােষ্ঠীর তা সহজে চেনা যায়। বিভিন্ন উৎসব পার্বণাদিতে মদের ব্যবহার আদিবাসী সমাজের বৈশিষ্ট্য ও ঐতিহ্যও বটে। মদ তৈরীর বিভিন্ন কৌশল আদিবাসী নারীরাই আবহমানকাল ধরে রেখেছে। এছাড়া বিভিন্ন আদিবাসী সমাজে রন্ধন শৈলী, পীঠা-পুলি তৈরীর ধারাও ভিন্ন ভিন্ন।
কোন কোন আদিবাসী জনগােষ্ঠীর রন্ধন-কলা রীতিমত বিস্ময়কর। আদিবাসী নারী যাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই, প্রশিক্ষণ নেই, প্রচলিত কোন মশলার ব্যবহার নেই-শুধুমাত্র জুমে গজিয়ে উঠা কিছু পাতা-গুল্ম সহযােগে রান্না এত উপদেয় হতে পারে তা চেখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।
আদিবাসী নারীদের জন্য এটি একটি অহংকারের স্থান। আর সংস্কৃতির সবচেয়ে বড় ও কার্যকর বাহন ভাষাকে সন্তান সন্তুতির মাধ্যমে সঞ্চারিত করে দিচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগােষ্ঠীসমূহের মুখের ভাষা এখনও যেটুকু পর্যন্ত টিকে আছে তা এই ঐতিহ্যনুরাগী মমতাময়ী নারীদের কল্যাণে। এ অঞ্চলের প্রায় আদিবাসী জনগােষ্ঠীর নিজস্ব নৃত্যকলা, সঙ্গীত রয়েছে।
নাচে, গানে ছেলে ও মেয়েদের সমান অংশগ্রহণ থাকলেও কিন্তু এসব কাজে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অনেক বেশি স্বতঃস্ফুর্ত এবং কারণে অকারণে, কাজের ফাঁকে নাচ-গানের চর্চা মেয়েদের মধ্যেই বেশি। ফলে আদিবাসী সংস্কৃতির এই দিকটাও মূলতঃ আদিবাসী মেয়েরাই ধরে রেখেছে।
আদিবাসী সমাজে নারীরা সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত। সারাজীবন নিজেকে উজাড় করে দিয়ে পরিবারের সুখে-দুঃখে, জীবিকা সংগ্রহের কাজে যে আদিবাসী নারী উদয়াস্ত খেটে চলে তার বিনিময়ে প্রাপ্তি একবারেই শূণ্য। পিতার সংসারে না পিতৃ সম্পত্তির অংশের অধিকার, না স্বামীর সংসারে স্বামীর সম্পত্তির অংশের অধিকার।
পিতৃ সংসারে থাকলে নারীর বিয়ে না হওয়া অবধি কেবলমাত্র ভরণপােষণের অধিকার ছাড়া আর অন্য কোন সম্পদে তার কোন অধিকার নেই। আবার মায়ের সম্পত্তিতে কন্যার অধিকার থাকলেও পুরুষতান্ত্রিক সমাজে কয়টা মা এরূপ সম্পদ ধারণ করতে পারে, সে প্রশ্নও থেকে যায়।
সুতরাং পিতার কিংবা স্বামীর অবর্তমানে সন্তানরাও যদি যে যার মত আলাদা হয়ে যায় তখন সেই নারীর কি অবস্থা হবে, কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? এ প্রশ্নের কে উত্তর দেবে? পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু মারমা জনগােষ্ঠী ছাড়া প্রায় সকল আদিবাসী সমাজে সম্পত্তির উত্তরাধিকার প্রথা বৈষম্যমূলক।
পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারী পৃথিবীর আরও অনেক আদিবাসী সমাজের অনুরূপ নিগ্রহ ও বৈষম্যের শিকার হয় সাধারণত দু’ভাবে :
ক. আন্তঃ সামাজিক বৈষম্য :
বিদ্যমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামােতে নারীদের পুরুষের কর্তৃত্বাধীনে রাখা হয়েছে। এখানে নারীর ভাল-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ তার ভূত-ভবিষ্যত, লেখাপড়া, বিবাহ, স্বাস্থ্য রক্ষা, সন্তান ধারণ সবকিছুরই নিয়ন্তা পুরুষ। আহার প্রস্তুত, ভােজন ক্রিয়া ও পর্ব সম্পাদনের জন্য যা যা করণীয় সেখানে পুরুষের অংশগ্রহণ অনুপস্থিত।
যন্ত্রের মত নারী সেখানে খেটে চলেছে সেই কাক ডাকা ভাের থেকে নিশুতি রাত পর্যন্ত বিরামহীন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারী-পুরুষের মধ্যে এই বিভাজন রেখা টেনে রেখেছে। আমরা কোন বিবেকবােধ ও যুক্তির প্রয়ােগ ছাড়াই এ বিভাজন রেখাকে মেনে নিয়েছি।
মানুষ হিসেবে নারীর অধিকারকে পদদলিত করে তার বঞ্চনার পরিধিকে বৃদ্ধি করে চলেছি। মানুষ হিসেবে নারীর অধিকার যদি পদদলিত হয় তবে পুরুষও মানুষের দাবিতে সমাজে যে সমস্ত অধিকার ভােগ করে চলেছে সেই অধিকার সে দাবি করতে পারে কি? এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। পুরুষের কাছে এ প্রশ্নের কী উত্তর আছে?
খ. বর্থি-সামাজিক বৈষম্যঃ
এ বৈষম্য মূলতঃ আধিপত্যকামী সংখ্যাগুরু জনগােষ্ঠী থেকে উৎসারিত। দু’ যুগেরও বেশি সময় ধরে পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র আন্দোলন চলেছিল। ১৯৯৭ সনে পার্বত চন্ডির মাধ্যমে এ অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক ইতি টানা হলেও পরিস্থিতির তেমন কোন গুণগত পরিবর্তন হয়েছে এমনটা বােধ করি দাবি করা যাবে না বিরাজমান বাস্তবতার বিচারে।
কথিত সংঘাতে হাজার হাজার প্রাণের বলি চড়ানাে হয়েছে জিঘাংসার কৃপাণে। চরম মূল্য দিতে হয়েছে আদিবাসী নারীকে। পাশবিক লালসার শিকার হয়েছে অসংখ্য আদিবাসী রমনী। অপহৃত হয়েছে অনেকেই। জবরদস্তি পাণিপীড়ন করা হয়েছে এমন আদিবাসী নারীর সংখ্যাও মােটেই ফেলনা নয়।
আদিবাসী নারীর নাজুকতা একাধিকঃ প্রথমত, সে নারী। পুরুষ যতক্ষণ পর্যন্ত একজন নারীকে শুধ তার সামাজিক পরিচয়ে নারী রূপেই দেখবে, মানবিক পরিচয়ে মানুষ হিসেবে গণ্য করবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত ঐ পুরুষের কাছে নারী নিরাপদ নয়। এরপর দ্বিতীয় যে প্রশ্নটি উঠে আসে তা হলাে-সে কোন পক্ষের নারী। উত্তর যদি হয় প্রতিপক্ষের, তাহলে সে নারী আরও বেশি অনিরাপদ প্রতিপক্ষ ঐ পুরুষের কাছে।
দ্বিতীয়ত, সে নারী, কিন্তু আদিবাসী। অধিকার ও বঞ্চনার বিচারে তার অবস্থান প্রান্তিকে । অতএব দুর্বল, নিপীড়নের সবচেয়ে অসহায় শিকার। তদুপরি শারীরিক গঠনে, পােষাকে-আশাকে, আকারে-বিচারে ভিন-জাতির পুরুষের কাছে তার অন্যরকম আবেদন। পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগােষ্ঠী মূলধারার জনগােষ্ঠীর প্রায় ০.৭৫%।
এ নগণ্য সংখ্যক জনগােষ্ঠীর অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ করতে যখন অস্ত্রের ব্যবহারের সিদ্ধান্তে যেতে হয় তখন সেখানে বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার মত মধ্যযুগীয় সামন্ত মানসিকতা প্রাধান্য পাবে এটাই স্বাভাবিক। সামন্ত মানসিকতার কাছে মানবাধিকার, মানবিকতার মুল্য, আদিবাসী রমনীর সম্ভ্রম হারানাের বেদনার মূল্য তুচ্ছাতিতুচ্ছ।
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা আদিবাসী পুনারীদের নিরাপত্তার ঝুঁকিকে জিইয়ে রেখেছে। চুক্তি পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসিত সমতলবাসীদের দ্বারা আদিবাসী নারী নির্যাতনের হার বেড়েছে। ধর্ষণের শিকার আদিবাসী নারী শুধু শারীরিকভাবে বিধস্ত হয়নি মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়েছে। অপমান ও অবমাননার দুঃসহ স্মৃতি সারাজীবন তাদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে যা ভাষায় অপ্রকাশ্য।
অন্যান্য অনেক সমাজের মত শৈশবাবস্থাতেই আদিবাসী মেয়েদের কাজের ধারা নির্ধারিত হয়ে যায়। বােঝার বয়স হওয়ার সাথে সাথেই প্রতিটি মেয়ের ভাবনায় এ চিন্তাটাই অনবরত ঢােকানাের চেষ্টা করা হয় যে, তাকে বিয়ে করে সন্তান ধারণ, সন্তান লালন করতে হবে। এটিই নারীর ধর্ম। অন্যসব কাজকর্ম, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ সবই গৌণ।
বিপরীতে, একটি ছেলেকে প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য তৈরী করা হয়, উৎসাহ দেয়া হয়, কারণ সে রােজগেরে হবে। আর মেয়ে সন্তানকে অন্যান্য গৃহকর্ম ছাড়াও হেঁসেলে ঢুকতে হবে আহাৰ্য্য-পানীয় তৈরীর জন্য।
ফলে লিঙ্গভিত্তিক এ কর্ম-বিভাজনের কারণে অন্যান্য অনেক সমাজের অনুরূপ অনেক আদিবাসী মেয়ের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের সুযােগ হয়ে উঠে না। বিদ্যালয়ে মেয়েদের ঝড়ে পড়ার হার, অশিক্ষিত থেকে যাবার হার এ কারণে অনেক বেশি ।
শিক্ষায় মেয়েদের অধিগমনের সুযােগ কম কারণ দূর দূরান্তে মেয়ের নিরাপত্তার বিষয়টিও মেয়েকে উচ্চ শিক্ষা প্রদানে অভিভাবকদের নিরুৎসাহিত করে। সামাজিক যে দর্শনটি নারী শিক্ষার উৎসাহে রাশ টেনে ধরে তা হলাে বিয়ের পর মেয়ে পরের ঘরে চলে যাবে কিন্তু ছেলে বিয়ে করে ঘরে বউ নিয়ে আসবে, আয়-রােজগার করবে।
অতএব তাকে শিখতে হবে, বিদ্যা অর্জন করতে হবে যা নারীর প্রয়ােজন নেই। এছাড়াও বিদ্যালয়ের দূরত্ব, দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থা, ভাষক প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদিও নারী শিক্ষাকে অনেকখানি বাধাগ্রস্ত করে। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রামে বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পারিপার্শ্বিকতা আদিবাসী নারীর মানবিক অধিকারকে অনেখানি ক্ষুন্ন করেছে।
স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি প্রতিটি মানুষের অধিকার। কিন্তু নারী হওয়া সুবাদে আরও কতিপয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন যা কেবল মাত্র নারীদের জন্য প্রযোজ্য। যেমন, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা। এটি নারীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার। রাষ্ট্রীয় পরিমন্ডলে এমনিতেই নারীর অবস্থান প্রানি।
আদিবাসী নারীর অবস্থান আরও প্রান্তিক। ফলে তার অবস্থান বড় বেশি নাজুক ও ভঙ্গুর। সমাজে বিদ্যমান পারিপার্শ্বিকতার পটভূমিতে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আদিবাসী নারীর যে নিধারিত অবস্থান তা মূলধারার জনগােষ্ঠীর আর দশটি নারীর অবস্থান অপেক্ষা অনেক নীচে।
এ বৈষম্যজনিত সংকটের হাত ধরে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, ব্যবস্থাপনার অদক্ষতা, স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতা তৈরী হয়েছে যা আদিবাসী নারীর স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে সংকুচিত করেছে। অধিকার ক্ষুন্ন করা একটি সাংবিধানিক অপরাধ। স্বাস্থ্য অধিকার থেকে বঞ্চনার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী নারীদের মধ্যে রক্তশূণ্যতার ব্যাপকতা, প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যা শিশু মৃত্যুর হার রীতিমত অস্বাভাবিক।
উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকির পাশাপাশি রােগ-বালাই, অসুখ-বিসুখ বৃদ্ধির প্রবণতা কিন্তু অনেক বেশি দৃশ্যমান। পরিবারে, সমাজে উপেক্ষিত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত আদিবাসী নারী এ সব রােগ ব্যাধির সহজ শিকার।
পরিবেশের অবনয়নে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আদিবাসী নারী। বিশ্বের উষ্ণায়ন, কিছু সংখ্যক অর্থগৃধু মানুষের উদগ্র লালসার শিকার হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের উষ্ণমন্ডলীয় বিশাল বনভূমি আজ বিরাণ প্রান্তরের রূপ ধারণ করেছে। এই অরণ্য নিধন পুরুষ অপেক্ষা আদিবাসী নারীকে আঘাত করেছে বেশি।
রান্না-বান্না, পানি ও জ্বালানি সংগ্রহে তার কষ্টের পরিধি বিস্তৃত হয়েছে কারণ এগুলাের প্রাপ্তিস্থল আরও দূরে সরে গেছে। আদিবাসী জীবনের অস্তিত্ব এবং চলমানতা একান্তই প্রকৃতি প্রদত্ত সম্ভারের প্রাপ্যতার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। খাদ্য, জ্বালানি থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সব প্রয়ােজনীয় উপকরণের জন্য প্রতিটি আদিবাসীকে তার লােকালয় সংলগ্ন বন ও পাহাড়ের উপর নির্ভর করতে হয়।
আর এসব উপকরণের অধিকাংশই নারীরাই সংগ্রহ করে নিয়ে আসে বেশি। আদিবাসী নারী জানে যে প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট হলে, বন উজাড় হলে তাকেই সংকটে পড়তে হবে। তাই প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় আদিবাসী নারীর রয়েছে অনন্য ভূমিকা। এ সম্পদ রক্ষার জ্ঞান তার নিজেরই স্বার্থে তাকে আয়ত্ত্বে আনতে হয়েছে। আমরা সচরাচর যা দেখি, বনে গেলে আদিবাসী নারী কিন্তু প্রয়ােজনের অতিরিক্ত কোন কিছুই আহরণ করে না।
অতীতে পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক মৌজাতেই হেডম্যান/কার্বারীর নেতৃত্বে পাড়াবাসীদের অংশ গ্রহণে তাদের গৃহস্থালীর প্রয়ােজন মেটানাের লক্ষ্যে ‘ভিলেজ কমন ফরেস্ট’ নামে বিশাল এলাকা জড়ে প্রাকৃতিক বন সৃষ্টি করা হতাে। এখনও পার্বত্য চট্টগ্রামের কোন কোন মৌজায় এ ধরনের বনের অস্তিত লক্ষ্য করা যায়।
এ ধরনের বন থাকায় পাড়াবাসীরা যেমন তাদের প্রয়ােজনীয় আহাৰ্য্য, জ্বালানি ইত্যাদির নিশ্চয়তা পেত তেমনি তাদের পানির উৎসও রক্ষিত হতাে। এ বন সৃষ্টিতে পুরুষদের চাইতেও নারীদের ভূমিকা ছিল অনেক বেশি।
অথচ প্রাকতিক এ সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নারীর ব্যাপক ভূমিকা থাকার পরও মৌজার অন্তর্গত ‘ভিলেজ কমন ফরেস্ট’ বস্থাপনা কমিটিতে নারীদের কোন অংশগ্রহণ নেই। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্পদ ব্যবস্থাপনায় নারীর ভূমিকাকে অস্বীকার করা হয়েছে। এখানেও আদিবাসী নারীকে তার প্রাপ্য ভূমিকা পালন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের নেতৃত্বের কাঠামােতে (ঐতিহ্যবাহী, নির্বাচিত স্থানীয় ও আঞ্চলিক সংস্থা) আদিবাসী নারীর প্রতিনিধিত্বের কোন জোরালাে উপস্থিতি দেখা যায় না। কী নির্বাচিত কী ঐতিহ্যবাহী কোন সংস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আদিবাসী নারীর কোন সক্রিয় অংশগ্রহণ নেই।
যডিও পার্বত্য রাজনীতিতে সক্রিয় আদিবাসী ব্যক্তিবর্গ পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আদায়ের সশস্ত সংগ্রামে আদিবাসী নারীর অবদানের কথা অকুণ্ঠ চিত্তে স্মরণ করেন কিন্তু তার আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রতিফলন তাঁরা কার্যক্ষেত্রে দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
তার প্রমাণ নির্বাচিত স্থানীয় ও আঞ্চলিক সংস্থায় নারীদের জন্য সীমিত আসন ব্যবস্থা। আসন যেমন সীমিত তার সাথে সংগতি রেখে নারীদের ভূমিকাও অনুল্লেখযােগ্য। ২২ সদস্য সম্বলিত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও ৩৪ সদস্য সম্বলিত প্রতিটি পার্বত্য জেলা পরিষদে নারী প্রতিনিধিত্বকে মাত্র ৩ জন নারী সদস্যের মধ্যে, যেখানে ২ জন আদিবাসী নারী, সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।
অন্তবর্তীকালীন জেলা পরিষদগুলােতে ৫ জন সদস্যের মধ্যে এ যাবৎ পর্যন্ত কোন নারী সদস্যকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কেবলমাত্র বান্দরবান জেলার অন্তর্বর্তী পরিষদে ২০০১-২০০৬ মেয়দে পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন নারী আর বর্তমানে রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্বর্তী পরিষদের মনােনীত ৫ সদস্যের একজন নারী।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রতিষ্ঠানেও (রাজা, হেডম্যান, কার্বারী) দু’ একটি ব্যতিক্রম ছাড়া নারী প্রতিনিধিত্ব অনুপস্থিত। কোন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ের আলােচনায় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আদিবাসী নারীদের সম্পৃক্ত হতে সাধারণত দেখা যায় না।
এমনকি নারীদের জন্য নির্দিষ্ট ও আচরণীয় চিরায়ত পারিবারিক অনুশাসন থেকে কোন নারী নিজেকে অবমুক্ত রাখতে পারলেও স্থানীয় ক্ষমতাকাঠামােতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে পুরুষ প্রাধান্যপূর্ণ সমাজে সাধারণত অনীহা লক্ষ্য করা যায়।
আদিবাসী অর্থনীতির চাকাকে যে নারী নিজের সমস্ত শক্তি ও সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দিয়ে রাত-দিনের পরিশ্রমে সচল রেখেছে, সমাজের সার্বিক কল্যাণে তার মতামতের কোন গুরুত্ব দেয়া হবে না – সমাজের এ বিধান রীতিমত অমানবিক ও অগ্রহণযােগ্য।
এতসব আলােচনা ও বিশ্লেষণ শেষে বােধ করি শুধু একটি কথা খুব শক্ত করে বলা যায় যে, সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ নারী-তাদের অধিকার বঞ্চিত রেখে বৃহত্তর অঙ্গনে পার্বত্য চট্টগ্রামের ব্যাপক আদিবাসী জনগােষ্ঠীর জন্য আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই-সংগ্রামের গাল ভরা বুলি শুধু বাগাড়ম্বর সর্বস্ব হয়ে আমাদের গ্লানিকে ভারি করে তুলবে।
সাফল্যের সিংহদ্বার অবধি আমাদের কখনই পৌছানাে হবে না। আদিবাসী নারী কিন্তু সমাজ-অর্থনীতি-রাজনীতির প্রয়ােজনে তার পুরুষ সাথীর সহযাত্রী হয়েছে বহুযুগে বহুবার। কিন্তু তারপরেও স্ব-ভিমানী পুরুষের কাছে তার যথাযথ মূল্যায়ন হয় নি। অবলা ভেবে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চার ক্ষেত্রে তার সবলা হওয়ার সব সুযােগকে অবারিত করতে চায় নি।
স্বার্থপরের মতাে নিজেদের আধিপত্যকে। নিরঙ্কুশ করতেই বরঞ্চ সচেষ্ট থেকেছে সব সময়। জগতের বর্ণাঢ্য ইতিহাসে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা বহু কীর্তিমান পুরুষ ও অবিসংবাদিত মুক্তিসংগ্রামী নেতাদের দেখা পাই যাদের সাফল্যের গাথার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে তাদের সহধর্মিণী অনেক মহিয়সী নারীর অপরিসীম ত্যাগ, সীমাহীন তিতিক্ষা আর নিরবচ্ছিন্ন অনুপ্রেরণা।
তবে আশার কথা হল এই যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী সম্প্রদায়ের একটি অংশে, যদিও ক্ষুদ্র, তাদের অধিকার বিষয়ক ভাবনা তা সঞ্চারিত হতে শুরু করেছে। ছােট ছােট আলােচনা সভা, কর্মশালায় তাদের সরব উপস্থিতি আমাকে রীতিমতাে আন্দোলিত করে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের নারী সমাজের মানসভুবনে বঞ্চনা থেকে মুক্তির চেতনার এই উন্মেষ ক্রমে বানভাসি স্রোতের মতাে প্রবল থেকে প্রবলতর তত বৃহত্তর পরিসরে পার্বত্য আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের পথকে আরও প্রশস্ততর করবে, উৎসাহে গতি সঞ্চারিত হবে, সংগ্রামকে আরও বেগবান করে তুলবে বলেই আমার বিশ্বাস। আর পুরুষরা এখানে অনুঘটক হয়ে কাজ করুক-এই আমার ঐকান্তিক প্রার্থনা। পার্বত্য চট্টগ্রামে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কতিপয় সুপারিশমালাঃ
• পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়ােজন।
• আদিবাসী নারী শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ও সর্বাত্নক উৎসাহ দেয়া জরুরী;
• গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আদিবাসী নারীর কার্যকর ও সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা বাঞ্ছনীয়।
• পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীর আত্ব-কর্মসংস্থানমূলক/আয়বর্ধনমূলক সুযােগের সম্প্রসারণ জরুরী;
• ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় সরকার সংস্থা ও জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী নারীর ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা দরকার।
প্রবন্ধটি খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সদরে ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১১ তারিখে অনুষ্ঠিত পঞ্চম পার্বত্য নারী সম্মেলনে পঠিত।
লেখক : প্রফেসর মংসানু চৌধুরী
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।