উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮

Jumjournal
Last updated Nov 17th, 2020

534

featured image

উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮

( ১৯৯৮ সনের ২৪ নং আইন )

[ ৩ ডিসেম্বর, ১৯৯৮ ]উপজেলা পরিষদ নামক স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপনকল্পে প্রণীত আইন৷   

যেহেতু সংবিধানের ৫৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণের সমন্বয়ে উপজেলা পরিষদ নামক স্থানীয় শাসন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্‌দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইল :-  

 সংক্ষিপ্ত শিরোনামা ও প্রবর্তন

১৷ (১) এই আইন উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ নামে অভিহিত হইবে৷    
(২) সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে ইহা বলবৎ হইবে ।  * এস, আর, ও নং ১৫-আইন/১৯৯৯, তারিখ: ২৭ শে জানুয়ারী, ১৯৯৯ ইং দ্বারা ১৯শে মাঘ, ১৪০৫ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১লা ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৯ ইং উক্ত আইন কার্যকর হইয়াছে। 

সংজ্ঞা

২৷ বিষয় বা প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে,-   
 1[(ক) “অস্থায়ী চেয়ারম্যান” অর্থ চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;]  
(খ) “ইউনিয়ন” এবং “ইউনিয়ন পরিষদ” অর্থ The Local Government (Union Parishads) Ordinance, 1983 (LI of 1983) এর section 2 এর যথাক্রমে clauses (26) এবং (27) এ সংজ্ঞায়িত “Union” এবং “Union Parishad” ;    
(গ) “ইউনিয়ন প্রতিনিধি” অর্থ ধারা ৬ (গ) তে উল্লিখিত ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বা তাঁহার দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;   
(ঘ) “উপজেলা” অর্থ ধারা ৩ এর অধীনে ঘোষিত কোন উপজেলা;   
(ঙ) “কর” বলিতে এই আইনের অধীনে আরোপনীয় বা আদায়যোগ্য কোন রেইট, টোল, ফিস, বা অনুরূপ অন্য কোন অর্থ ও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;    
(চ) “চেয়ারম্যান” অর্থ পরিষদের চেয়ারম্যান;    
(ছ) “তফসিল” অর্থ এই আইনের কোন তফসিল;    
(জ) “পরিষদ” অর্থ এই আইনের বিধান অনুযায়ী গঠিত উপজেলা পরিষদ;    
(ঝ) “প্রবিধান” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত প্রবিধান;    
2[(ঞ) “পৌর প্রতিনিধি” অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ঘ)তে উল্লিখিত পৌরসভার মেয়র বা সাময়িকভাবে তাহার দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি;]  
(ট) “বিধি” অর্থ এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি;   
3[(ঠ) “ভাইস চেয়ারম্যান” অর্থ পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান; 
(ড) “মহিলা সদস্য” অর্থ ধারা ৬ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ঙ) তে উল্লেখিত পরিষদের সংরক্ষিত আসনে নির্বাচিত মহিলা সদস্য;  4[(ডড) ‘‘রাজনৈতিক দল’’ অর্থ Representation of the People Order, 1972 (P.O.No. 155 of 1972) এর Article 2(xixa) তে সংজ্ঞায়িত registered political party;]  
(ঢ) “সদস্য” অর্থ পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানসহ অন্য যে কোন সদস্য
5[; (ণ) ‘‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’’ অর্থ এইরূপ কোন প্রার্থী যিনি কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনয়নপ্রাপ্ত নহেন।]]

উপজেলা ঘোষণা

৩৷ (১) এতদ্‌দ্বারা প্রথম তফসিলের তৃতীয় কলামে উল্লিখিত প্রত্যেক থানার এলাকাকে উক্ত কলামে উল্লিখিত নামের উপজেলা ঘোষণা করা হইল।  

(২) এই আইন বলবৎ হইবার পর সরকার সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট এলাকা সমন্বয়ে নূতন উপজেলা ঘোষণা করিতে পারিবে।

উপজেলাকে প্রশাসনিক একাংশ ঘোষণা

৪৷ ধারা ৩ এর অধীনে ঘোষিত প্রত্যেকটি উপজেলাকে, সংবিধানের ১৫২(১) অনুচ্ছেদের সহিত পঠিতব্য ৫৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, এতদ্বারা প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক একাংশ বলিয়া ঘোষণা করা হইল৷

উপজেলা পরিষদ স্থাপন

৫৷ (১) এই আইন বলবৎ হইবার পর, যতশীঘ্র সম্ভব, প্রত্যেক উপজেলায় এই আইনের বিধান অনুযায়ী একটি উপজেলা পরিষদ স্থাপিত হইবে।    

(২) পরিষদ একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হইবে এবং ইহার স্থায়ী ধারাবাহিকতা ও একটি সাধারণ সীলমোহর থাকিবে এবং এই আইন ও বিধি সাপেক্ষে, ইহার স্থাবর ও অস্থাবর উভয় প্রকার সম্পত্তি অর্জন করার, অধিকারে রাখার ও হস্তান্তর করার ক্ষমতা থাকিবে এবং ইহার নামে ইহা মামলা দায়ের করিতে পারিবে বা ইহার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা যাইবে৷

পরিষদের গঠন

6[৬। (১) এই আইনের বিধান অনুযায়ী নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ সমন্বয়ে উপজেলা পরিষদ গঠিত হইবে, যথা :- 
(ক) চেয়ারম্যান; 
(খ) দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান, যাহার মধ্যে একজন মহিলা হইবেন; 
(গ) উপজেলার এলাকাভুক্ত প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সাময়িকভাবে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি; 
(ঘ) উপজেলার এলাকাভুক্ত প্রত্যেক পৌরসভা, যদি থাকে, এর মেয়র বা সাময়িকভাবে মেয়রের দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তি; এবং  
(ঙ) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যগণ। 

(২) উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানগণ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রণীত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ভোটারদের দ্বারা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত সময়, স্থান ও পদ্ধতিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচিত হইবেন। 

(৩) কোন উপজেলার এলাকাভুক্ত কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বাতিল হইবার কারণে উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) ও (ঘ) এর অধীন উপজেলা পরিষদের সদস্য থাকিবেন না এবং এইরূপ সদস্য না থাকিলে উক্ত উপজেলা পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না।

(৪) প্রত্যেক উপজেলার এলাকাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ এবং পৌরসভা, যদি থাকে, এর মোট সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের সম সংখ্যক আসন, অতঃপর সংরক্ষিত আসন বলিয়া উল্লিখিত, মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে, যাহারা উক্ত উপজেলার এলাকাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা, যদি থাকে, এর সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য বা কাউন্সিলরগণ কর্তৃক তাহাদের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন : তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারায় কোন কিছুই কোন মহিলাকে সংরক্ষিত আসন বহির্ভূত আসনে সরাসরি নির্বাচন করিবার অধিকারকে বারিত করিবে না। ব্যাখ্যা : এই উপ-ধারার অধীন সংরক্ষিত আসনে সংখ্যা নির্ধারণের ক্ষেত্রে, যদি উক্ত সংখ্যার ভগ্নাংশ থাকে এবং উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেক বা তদূর্ধ্ব হয়, তবে উহাকে পূর্ণ সংখ্যা বলিয়া গণ্য করিতে হইবে এবং যদি উক্ত ভগ্নাংশ অর্ধেকের কম হয়, তবে উহাকে উপেক্ষা করিতে হইবে। 

(৫) উপ-ধারা (১) এর অধীন উপজেলা পরিষদ গঠিত হইবার পর উহার অধিক্ষেত্রের মধ্যে নূতন পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হইবার কারণে উপজেলা পরিষদের পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠান না হওয়া পর্যন্ত উপ-ধারা (৪) এ উল্লিখিত আসন সংখ্যার কোন পরিবর্তন ঘটিবে না এবং এই কারণে বিদ্যমান উপজেলা পরিষদ গঠনের বৈধতা ক্ষুণ্ন হইবে না। 

(৬) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) ও (ঘ) তে উল্লিখিত ব্যক্তি এই আইনের অধীন পরিষদের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হইয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন। 

7[(৭) কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান এই তিনটি পদের মধ্যে যে কোন একটি পদসহ শতকরা ৭৫ ভাগ সদস্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইলে এবং নির্বাচিত সদস্যগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হইলে, পরিষদ, এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে, যথাযথভাবে গঠিত হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে;] 

8[(৮) উপ-ধারা (৭) এর বিধান অনুসারে পরিষদ যথাযথভাবে গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অথবা ধারা ১৪ এর বিধান অনুসারে একই সময়ে চেয়ারম্যান ও দুইজন ভাইস চেয়ারম্যান এই তিনটি পদই শূন্য হইলে বা থাকিলে পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তি বা কতৃর্পক্ষ সরকার কতৃর্ক নির্ধারিত পদ্ধতিতে পালন করিবে।]]

পরিষদের মেয়াদ 

৭৷ ধারা ৫৩ এর বিধান সাপেক্ষে, পরিষদের মেয়াদ হইবে উহার প্রথম সভার তারিখ হইতে পাঁচ বৎসর:    তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচিত নূতন পরিষদ উহার প্রথম সভায় মিলিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদ কার্য চালাইয়া যাইবে৷

চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা

9[৮। (১) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন, যদি-  
(ক) তিনি বাংলাদেশের নাগরিক হন;  
(খ) তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হয়; এবং  
(গ) তিনি ধারা ১৯ এ উল্লিখিত ভোটার তালিকাভুক্ত হন।  
(২) কোন ব্যক্তি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হইবার এবং থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি-  
(ক) বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন বা হারান;  
(খ) কোন উপযুক্ত আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষিত হন;  
(গ) দেউলিয়া ঘোষিত হন এবং দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;  
(ঘ) কোন নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাঁহার মুক্তি লাভের পর পাঁচ বৎসর অতিবাহিত না হইয়া থাকে;  
(ঙ) প্রজাতন্ত্রের বা পরিষদের অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কোন লাভজনক পদে সার্বক্ষণিক অধিষ্ঠিত থাকেন;  
(চ) তিনি জাতীয় সংসদে সদস্য বা অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বা সদস্য হন বা থাকেন;  
(ছ) কোন বিদেশী রাষ্ট্র হইতে অনুদান বা তহবিল গ্রহণ করে এইরূপ বেসরকারি সংস্থার প্রধান নির্বাহী পদ হইতে পদত্যাগ বা অবসর গ্রহণ বা পদচ্যুতির পর এক বৎসর অতিবাহিত না হইয়া থাকেন;  
(জ) কোন সমবায় সমিতি এবং সরকারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ব্যতীত, সংশ্লিষ্ট উপজেলা এলাকায় সরকারকে পণ্য সরবরাহ করিবার জন্য বা সরকার কর্তৃক গৃহীত কোন চুক্তির বাস্তবায়ন বা সেবা কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য, তাঁহার নিজ নামে বা তাঁহার ট্রাস্টি হিসাবে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের নামে বা তাঁহার সুবিধার্থে বা তাঁহার উপলক্ষে বা কোন হিন্দু যৌথ পরিবারের সদস্য হিসাবে তাঁহার কোন অংশ বা স্বার্থ আছে এইরূপ চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়া থাকেন;  ব্যাখ্যা।−উপরি-উক্ত দফা (জ) এর উল্লিখিত অযোগ্যতা কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না যেই ক্ষেত্রে-  (অ) চুক্তিটিতে অংশ বা স্বার্থ তাঁহার উত্তরাধিকারসূত্রে বা উইলসূত্রে প্রাপক, নির্বাহক বা ব্যবস্থাপক হিসাবে হস্তান্তরিত হয়, যদি না উহা হস্তান্তরিত হইবার পর ছয় মাস অতিবাহিত হয়; অথবা  (আ) কোম্পানী আইন, ১৯৯৪ (১৯৯৪ সনের ১৮ নং আইন) এ সংজ্ঞায়িত কোন পাবলিক কোম্পানীর দ্বারা বা পক্ষে চুক্তিটি সম্পাদিত হইয়াছে যাহার তিনি একজন শেয়ারহোল্ডার মাত্র, তবে উহার অধীন তিনি কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত পরিচালকও নহেন ম্যানেজিং এজেন্টও নহেন; অথবা  (ই) তিনি কোন যৌথ হিন্দু পরিবারের সদস্য হিসাবে চুক্তিটিতে তাঁহার অংশ বা স্বার্থ নাই এইরূপ কোন স্বতন্ত্র ব্যবসা পরিচালনাকালে পরিবারের অন্য কোন সদস্য কর্তৃক চুক্তি সম্পাদিত হইয়া থাকে;  
(ঝ) তাহার পরিবারের কোন সদস্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার কার্য সম্পাদনে বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হন বা ইহার জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা উপজেলার কোন বিষয়ে তাঁহার কোন প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে;  ব্যাখ্যা।−দফা (ঝ) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে ‘‘পরিবার’’ অর্থে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল তাহার পিতা, মাতা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে বুঝাইবে।  
(ঞ) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত কোন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় অনাদায়ী রাখেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত নিজস্ব বসবাসের নিমিত্ত গৃহ-নির্মাণ অথবা ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ ইহার আওতাভুক্ত হইবে না;  
(ট) এমন কোন কোম্পানীর পরিচালক বা ফার্মের অংশীদার হন যাহার কোন ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হইতে গৃহীত কোন ঋণ বা উহার কোন কিস্তি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার তারিখে পরিশোধে খেলাপী হইয়াছেন;  ব্যাখ্যা।− উপরি-উক্ত দফা (ঞ) ও (ট) এর উদ্দেশ্য সাধনকল্পে ‘‘খেলাপী’’ অর্থ ঋণ গ্রহীতা ছাড়াও যিনি বা যাঁহাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোম্পানী বা ফার্ম Banker”s Book of Account এ ঋণ খেলাপী হিসাবে চিহ্নিত আছে তাঁহাদেরকেও বুঝাইবে।  
(ঠ) পরিষদের নিকট হইতে কোন ঋণ গ্রহণ করেন এবং তাহা অনাদায়ী থাকে;  
(ড) সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী নির্ধারিত দায়কৃত অর্থ পরিষদকে পরিশোধ না করিয়া থাকেন;  (ঢ) কোন সরকারি বা আধা-সরকারি দপ্তর, কোন সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সমবায় সমিতি বা প্রতিরক্ষা কর্ম বিভাগের চাকুরী হইতে নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি, অসদাচরণ ইত্যাদি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া চাকুরীচ্যুত, অপসারিত বা বাধ্যতামূলক অবসরপ্রাপ্ত হইয়াছেন এবং তাঁহার এইরূপ চাকুরীচ্যুতি, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসরের পর পাঁচ বৎসর কাল অতিক্রান্ত না হইয়া থাকে;  
(ণ) উপজেলা পরিষদের তহবিল তসরূফের কারণে দণ্ডপ্রাপ্ত হন;  
(ত) বিগত পাঁচ বৎসরের মধ্যে যে কোন সময়ে দণ্ডবিধির ধারা ১৮৯, ১৯২, ২১৩, ৩৩২,৩৩৩ ও ৩৫৩ এর অধীন দোষী সাব্যস্ত হইয়া সাজাপ্রাপ্ত হন;  
(থ) জাতীয় বা আন্তর্জাতিক আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী হিসাবে দোষী সাব্যস্ত হন;  
(দ) কোন আদালত কর্তৃক ফেরারী আসামী হিসাবে ঘোষিত হন।  
(৩) প্রত্যেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় এই মর্মে একটি হলফনামা দাখিল করিবেন যে, উপ-ধারা
(২) এর অধীন তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের অযোগ্য নহেন।

 10[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ] ও সদস্যগণের শপথ

৯৷ (১) 11[চেয়ারম্যান,ভাইস চেয়ারম্যান] ও প্রত্যেক সদস্য তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে নিম্নলিখিত ফরমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন ব্যক্তির সম্মুখে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিবেন এবং শপথপত্র বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর দান করিবেন, যথা:-   
 

12[শপথপত্র বা ঘোষণাপত্র  

আমি………………………………………………………………………………………………… 

………পিতা/স্বামী…………………………………………………………………………………. 

………………………………………………………জেলা…………………… 

……………………………………………..উপজেলার চেয়ারম্যান/ভাইস চেয়ারম্যান/ সদস্য নির্বাচিত হইয়া সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ (বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা) করিতেছি যে, আমি ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী এবং সততা, নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিব। আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও আনুগত্য পোষণ করিব। 

স্বাক্ষর] 


13[(২) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত ব্যক্তিগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যের শপথ গ্রহণ বা ঘোষণার জন্য সরকার বা তদকতৃর্ক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, যথাযথ কারণ বিদ্যমান থাকার ক্ষেত্রে সরকার বা তদকর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ উল্লিখিত মেয়াদ অতিবাহিত হইবার পর মেয়াদ বর্ধিত করিতে পারিবে, তবে এইরূপ বর্ধিত মেয়াদ উল্লিখিত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হওয়ার তারিখ হইতে কোনক্রমেই নববই দিন অতিক্রম করিবে না।]

সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা

১০৷ 14[চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ] তাঁহার কার্যভার গ্রহণের পূর্বে তাঁহার এবং তাঁহার পরিবারের কোন সদস্যের স্বত্ব, দখল বা স্বার্থ আছে এই প্রকার যাবতীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির একটি লিখিত বিবরণ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও নির্ধারিত ব্যক্তির নিকট দাখিল করিবেন৷ ব্যাখ্যা৷- “পরিবারের সদস্য” বলিতে 15[চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের] স্বামী বা স্ত্রী এবং তাঁহার সংগে বসবাসকারী এবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল তাঁহার ছেলে-মেয়ে, পিতা-মাতা ও ভাই-বোনকে বুঝাইবে৷

16[চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান ] ও সদস্যগণের সুযোগ-সুবিধা

১১৷ 17[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও সদস্যগণের ছুটি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷

18[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্যগণের] পদত্যাগ

১২৷ (১) সরকারের উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে 19[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্যগণ] স্বীয় পদ ত্যাগ করিতে পারিবেন৷ (২) পদত্যাগ গৃহীত হইবার তারিখ হইতে পদত্যাগ কার্যকর হইবে এবং পদত্যাগকারীর পদ শূন্য হইবে৷

চেয়ারম্যান ইত্যাদির অপসারণ

20[১৩।(১) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যসহ যে কোন সদস্য তাঁহার স্বীয় পদ হইতে অপসারণযোগ্য হইবেন, যদি তিনি-  
(ক) যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে পরিষদের পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকেন;  
(খ) পরিষদ বা রাষ্ট্রের স্বার্থের হানিকর কোন কার্যকলাপে জড়িত থাকেন অথবা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালত কর্তৃক দণ্ডপ্রাপ্ত হন;  
(গ) অসদাচরণ, দুর্নীতি বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন অথবা পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পত্তির ক্ষতি সাধন বা উহার আত্মসাতের বা অপপ্রয়োগের জন্য দায়ী হন;  
(ঘ) তাঁহার দায়িত্ব পালন করিতে অস্বীকার করেন অথবা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে তাঁহার দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন;  
(ঙ) নির্বাচনের পর ধারা ৮ (২) অনুযায়ী নির্বাচনের অযোগ্য ছিলেন মর্মে প্রমাণিত হন;  
(চ) বার্ষিক ১২(বার)টি মাসিক সভার মধ্যে ন্যূনতম ৯ (নয়)টি সভায় গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতিরেকে যোগদান করিতে ব্যর্থ হন;  

21[ব্যাখ্যা।−(অ) এই উপ-ধারায় বর্ণিত ‘অসদাচরণ’ বলিতে ক্ষমতার অপব্যবহার,ধারা ১০ অনুযায়ী সম্পত্তি সম্পর্কিত ঘোষণা প্রদান না করা কিংবা অসত্য হলফনামা দাখিল করা, আইন ও বিধির পরিপন্থী কার্যকলাপ, দুর্নীতি, অসদুপায়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ, পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, ইচ্ছাকৃত অপশাসন, ইত্যাদি বুঝাইবে।  
(আ) এই উপ-ধারায় বর্ণিত ‘নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ’ বলিতে দণ্ডবিধিতে সংজ্ঞায়িত চাঁদাবাজি, চুরি, দস্যুতা, ডাকাতি, ছিনতাই, সম্পত্তি আত্মসাৎ, বিশ্বাস ভংগ, ধর্ষণ, হত্যা, খুন এবং Prevention of Corruption Act, 1947 (Act. II of 1947) এ সংজ্ঞায়িত “Criminal misconduct” ইত্যাদি বুঝাইবে।]  

(২) সরকার, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা উপ-ধারা (১) এ বর্ণিত কারণে চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা যে কোন সদস্যকে অপসারণ করিতে পারিবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করিবার পূর্বে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে, তদন্ত করিতে ও অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হইবে।  

(৩) একজন চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা যে কোন সদস্য উপ-ধারা (২) অনুসারে সরকার কর্তৃক আদেশ প্রদানের পর তাৎক্ষণিকভাবে অপসারিত হইবেন।  

(৪) চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যকে উপ-ধারা (২) অনুযায়ী তাঁহার পদ হইতে অপসারণ করা হইলে, উক্ত অপসারণ আদেশের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে তিনি সরকারের নিকট উক্ত আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করিতে পারিবেন।  

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করা হইলে উহা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উপ-ধারা (২) এ প্রদত্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত রাখিতে পারিবেন এবং আবেদনকারীকে বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদানের পর উক্ত আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখিতে পারিবেন।  

(৬) উপ-ধারা (৫) এর অধীন সরকার কর্তৃক প্রদত্ত আদেশ চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে।  

(৭) এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই ধারা অনুযায়ী অপসারিত কোন ব্যক্তি কোন পদে অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হইবার যোগ্য হইবেন না।]

অনাস্থা প্রস্তাব

22[১৩ক। (১) এ আইনের কোন বিধান লংঘন বা গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে বা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যের কারণে পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে।  

(২) উপ-ধারা (১) অনুযায়ী অনাস্থা প্রস্তাব পরিষদের চার-পঞ্চমাংশ সদস্যের স্বাক্ষরে লিখিতভাবে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দাখিল করিতে হইবে।  

(৩) অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির পর বিভাগীয় কমিশনার অভিযোগের বিষয় সম্পর্কে তদন্ত করিবার উদ্দেশ্যে পনের কার্যদিবসের মধ্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করিবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা অভিযোগসমূহের বিষয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য দশ কার্যদিবসের সময় প্রদান করিয়া অভিযুক্ত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবেন।  

(৪) উপ-ধারা (৩) এর অধীন প্রদত্ত কারণ দর্শানোর জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হইলে তদন্ত কর্মকর্তা জবাব প্রাপ্তির অনধিক ত্রিশ কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবে যে সকল অভিযোগের বর্ণনা করা হইয়াছে, সে সকল অভিযোগ তদন্ত করিবেন।  

(৫) উপ-ধারা (৪) অনুযায়ী তদন্ত করিবার পর সংশ্লিষ্ট অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হইলে তদন্ত কর্মকর্তা অনধিক পনের কার্যদিবসের মধ্যে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যসহ ভোটাধিকার সম্পন্ন সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যের নিকট সভার নোটিশ প্রেরণ নিশ্চিতকরণপূর্বক পরিষদের বিশেষ সভা আহবান করিবেন।  

(৬) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্যানেল চেয়ারম্যান (ক্রমানুসারে) এবং কোন ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে পরিষদের চেয়ারম্যান সভায় সভাপতিত্ব করিবেনঃ  তবে শর্ত থাকে যে, চেয়ারম্যান বা প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে উপস্থিত সদস্যগণের মধ্য হইতে যেকোন একজন সদস্যকে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সভাপতি নির্বাচিত করা যাইবে।  

(৭) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা সভায় একজন পর্যবেক্ষক হিসাবে উপস্থিত থাকিবেন।  

(৮) পরিষদের মোট সদস্য সংখ্যার চার-পঞ্চমাংশ সদস্য সমন্বয়ে সভার কোরাম গঠিত হইবে।  

(৯) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্যে আহুত সভা কোরাম বা নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কোন কারণ ব্যতিরেকে স্থগিত করা যাইবে না এবং সভা আরম্ভ হইবার তিন ঘণ্টার মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব না হইলে অনাস্থা প্রস্তাবটির উপর গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করিতে হইবে।  

(১০) সভার সভাপতি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে কোন প্রকাশ্য মতামত প্রকাশ করিবেন না, তবে তিনি ব্যালটের মাধ্যমে উপ-ধারা (৯) অনুযায়ী ভোট প্রদান করিতে পারিবেন, কিন্তু তিনি নির্ণায়ক বা দ্বিতীয় ভোট প্রদান করিতে পারিবেন না।  

(১১) অনাস্থা প্রস্তাবটি পরিষদের কমপক্ষে চার-পঞ্চমাংশ সদস্য কর্তৃক ভোটে গৃহীত হইতে হইবে।  

(১২) উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা সভা শেষ হইবার পর অনাস্থা প্রস্তাবের কপি, ব্যালট পেপার, ভোটের ফলাফলসহ সভার কার্যবিবরণী প্রস্তুত করিয়া আনুষঙ্গিক কাগজপত্র সরকারের নিকট প্রেরণ করিবেন।  

(১৩) সরকার উপযুক্ত বিবেচনা করিলে অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন অথবা অননুমোদন করিবে। এই ক্ষেত্রে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাবটি অনুমোদিত হইলে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যের আসনটি সরকার গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা শূন্য বলিয়া ঘোষণা করিবে।  

(১৪) অনাস্থা প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটে গৃহীত না হইলে অথবা কোরামের অভাবে সভা অনুষ্ঠিত না হইলে উক্ত তারিখের পর ছয় মাস অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের বিরুদ্ধে অনুরূপ কোন অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।  

(১৫) পরিষদের কোন চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্য দায়িত্বভার গ্রহণের ছয় মাসের মধ্যে তাহার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করা যাইবে না।

চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যগণের বা অন্যান্য সদস্যগণের সাময়িক বরখাস্তকরণ

১৩খ। (১) যেই ক্ষেত্রে কোন পরিষদের চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের বিরুদ্ধে ধারা ১৩ অনুসারে অপসারণের জন্য কার্যক্রম আরম্ভ করা হইয়াছে অথবা উপযুক্ত আদালত কর্তৃক কোন ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র গৃহীত হইয়াছে সেই ক্ষেত্রে সরকারের বিবেচনায় উক্ত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্য কর্তৃক ক্ষমতা প্রয়োগ জনস্বার্থের পরিপন্থী হইলে, সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করিতে পারিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে আদেশ প্রাপ্তির তিন দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ধারা ১৫ এর বিধানমতে নির্বাচিত প্যানেল চেয়ারম্যানের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করিবেন এবং উক্ত প্যানেল চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চেয়ারম্যান অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।  

(৩) উপ-ধারা (১) এর অধীন উপজেলা পরিষদের কোন ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যকে সাময়িকভাবে বরখাস্তের আদেশ প্রদান করা হইলে উক্ত ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্যের বিরুদ্ধে আনীত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত অথবা উক্ত ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য অপসারিত হইলে তাঁহার স্থলে নতুন ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে অপর একজন ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য উক্ত দায়িত্ব পালন করিবেন।  সদস্যপদ পুনর্বহাল১৩গ। উপজেলা পরিষদের কোন নির্বাচিত চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান বা মহিলা সদস্য বা অন্য কোন সদস্য এই আইনের বিধান অনুযায়ী অপসারিত হইয়া সদস্যপদ হারাইবার পর সরকার কর্তৃক পুনর্বিবেচনার পর উক্তরূপ অপসারণ আদেশ, বাতিল বা প্রত্যাহার হইলে, তাঁহার সদস্যপদ পুনর্বহাল হইবে এবং তিনি অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য স্বপদে পুনর্বহাল হইবেন।] 

চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্য ও সদস্য পদ শূন্য হওয়া, ইত্যাদি

23[১৪। (১) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান বা কোন মহিলা সদস্যের পদ শূন্য হইবে, যদি তিনি-  
(ক) ধারা ৯ (২) এ নির্ধারিত বা বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে উক্ত ধারায় নির্ধারিত শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা করিতে ব্যর্থ হন; বা  
(খ) ধারা ৮ এর অধীন তাঁহার পদে থাকার অযোগ্য হইয়া যান; বা  
(গ) ধারা ১২ এর অধীন তাঁহার পদ ত্যাগ করেন; বা  (ঘ) ধারা ১৩ এর অধীন তাঁহার পদ হইতে অপসারিত হন; বা  
(ঙ) ধারা ১৩ক অনুযায়ী তাঁহার বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক অনাস্থা প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়; বা  
(চ) মৃত্যুবরণ করেন।  

(২) কোন ব্যক্তি যদি ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌর প্রতিনিধি বা মহিলা সদস্য হন, এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভার চেয়ারম্যান বা মেয়র বা সদস্য বা কাউন্সিলর না থাকেন তাহা হইলে পরিষদে তাহার সদস্য পদ শূন্য হইবে।]

অস্থায়ী চেয়ারম্যান ও প্যানেল

24[১৫। (১) পরিষদ গঠিত হইবার পর প্রথম অনুষ্ঠিত সভার এক মাসের মধ্যে ভাইস চেয়ারম্যানগণ তাহাদের নিজেদের মধ্য হইতে অগ্রাধিকারক্রমে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি চেয়ারম্যানের প্যানেল নির্বাচিত করিবেন। 

(২) অনুপস্থিতি, অসুস্থতাহেতু বা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হইলে তিনি পুনরায় স্বীয় দায়িত্ব পালনে সমর্থ না হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন। 

(৩) পদত্যাগ, অপসারণ, মৃতু্যজনিত অথবা অন্য যে কোন কারণে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে নতুন চেয়ারম্যানের কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত চেয়ারম্যানের প্যানেল হইতে অগ্রাধিকারক্রমে একজন ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন। 

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী চেয়ারম্যানের প্যানেলভুক্ত ভাইস চেয়ারম্যানগণ অযোগ্য হইলে অথবা ব্যক্তিগত কারণে দায়িত্ব পালনে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলে পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে সদস্যগণের মধ্য হইতে নতুন চেয়ারম্যানের প্যানেল তৈরী করা যাইবে। 

(৫) উপ-ধারা (১) ও (৪) অনুযায়ী চেয়ারম্যান প্যানেল নির্বাচিত না হইলে সরকার প্রয়োজন অনুসারে চেয়ারম্যান প্যানেল তৈরী করিতে পারিবে।]

আকস্মিক পদশূন্যতা পূরণ

25[১৬। পরিষদের মেয়াদ শেষ হইবার তারিখের-  
(ক) একশত আশি দিন বা তদপেক্ষা বেশী সময় পূর্বে চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হইলে; বা  
(খ) একশত বিশ দিন বা তদপেক্ষা বেশী সময় পূর্বে কোন মহিলা সদস্যের পদ শূন্য হইলে,  উক্ত পদটি শূন্য হওয়ার নব্বই দিনের মধ্যে বিধি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে উক্ত শূন্য পদ পূরণ করিতে হইবে, এবং যিনি উক্ত পদে নির্বাচিত হইবেন তিনি পরিষদের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য উক্ত পদে বহাল থাকিবেন।]

নির্বাচনে অংশগ্রহণ

26[১৬ক। ধারা ৮ এর বিধান সাপেক্ষে, কোন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশ গ্রহণের জন্য কোন ব্যক্তিকে কোন রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হইতে হইবে।]

নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়

১৭৷ নিম্নবর্ণিত সময়ে 27[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও মহিলা সদস্যগণের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হইবে, যথা:- 
28[(ক) প্রথম তফসিলভুক্ত উপজেলাসমূহের ক্ষেত্রে, এই আইন বলবৎ হওয়ার পর তিনশত ত্রিশ দিনের মধ্যে:    তবে শর্ত থাকে যে, কোন দৈবদূর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ অনিবার্য কারণে উক্ত সময়সীমার মধ্যে প্রথম তফসিলভূক্ত কোন বিশেষ বা সকল উপজেলার ক্ষেত্রে, নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে 29[সরকার,] সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা উক্ত সময়সীমার পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে;]    
30[(খ) ধারা ৩(২) এর অধীনে ঘোষিত নতুন উপজেলার ক্ষেত্রে, উক্তরূপ ঘোষণার তিনশত ত্রিশ দিনের মধ্যে:    তবে শর্ত থাকে যে, কোন দৈবদূর্বিপাকজনিত বা অন্যবিধ অনিবার্য কারণে উক্ত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হইলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত সময়সীমার পরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক তারিখ নির্ধারণ করিতে পারিবে;]    
(গ) পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার ক্ষেত্রে, উক্ত মেয়াদ শেষ হইবার তারিখের পূর্ববর্তী 31[একশত আশি] দিনের মধ্যে; এবং    
(ঘ) পরিষদ ধারা ৫৩ এর অধীনে বাতিল হওয়ার ক্ষেত্রে, বাতিলাদেশ জারীর অনধিক একশত বিশ দিনের মধ্যে৷

পরিষদের প্রথম সভা আহবান 

১৮৷ ধারা ৯ এর অধীনে শপথ অনুষ্ঠানের পরবর্তী ত্রিশ দিনের মধ্যে পরিষদের প্রথম সভা বিধি দ্বারা নির্ধারিত ব্যক্তি আহবান করিবেন৷

ভোটার তালিকা ও ভোটাধিকার

১৯৷ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত আপাততঃ বলবৎ ভোটার তালিকার যে অংশ সংশ্লিষ্ট উপজেলাভুক্ত এলাকা সংক্রান্ত, ভোটার তালিকার সেই অংশ- 
32[(ক) চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা হইবে; এবং 
(খ) কোন ব্যক্তির নাম যে উপজেলার ভোটার তালিকায় আপাততঃ লিপিবদ্ধ থাকিবে, তিনি সেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যনের নির্বাচনে ভোট প্রদান করিতে পারিবেন এবং চেয়ারম্যান বা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হইতে পারিবেন।]

নির্বাচন পরিচালনা

২০৷ (১) সংবিধান অনুযায়ী গঠিত নির্বাচন কমিশন, অতঃপর নির্বাচন কমিশন বলিয়া উল্লিখিত, এই আইন ও বিধি অনুযায়ী 33[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও মহিলা সদস্যদের 34[নির্বাচন পরিচালনা করিবে]৷ 

(২)35[নির্বাচন কমিশন], সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা 36[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও মহিলা সদস্যদের নির্বাচনের জন্য বিধি প্রণয়ন করিবে এবং অনুরূপ বিধিতে নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যে কোন বিষয়ে বিধান করা যাইবে; যথা:-
(ক) নির্বাচন পরিচালনার উদ্দেশ্যে রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার নিয়োগ এবং তাঁহাদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব;    
(খ) মহিলা সদস্য নির্বাচনের জন্য এলাকা নির্ধারণ, ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং মহিলা সদস্য নির্বাচন পদ্ধতি;    
37[(গ) প্রার্থী মনোনয়ন, মনোনয়নের ক্ষেত্রে হলফনামা দাখিল, মনোনয়নের ক্ষেত্রে আপত্তি এবং মনোনয়নপত্র বাছাই;]  38[(গগ) রাজনৈতিক দল কর্তৃক মনোনীত বা স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়;]   
(ঘ) প্রার্থীগণ কর্তৃক প্রদেয় জামানত এবং উক্ত জামানত ফেরত প্রদান বা বাজেয়াপ্তকরণ;    
(ঙ) প্রার্থীপদ প্রত্যাহার;    
(চ) প্রার্থীগণের এজেন্ট নিয়োগ;    
(ছ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে নির্বাচন পদ্ধতি;    
(জ) ভোট গ্রহণের তালিকা, সময় ও স্থান এবং নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয়;    
(ঝ) ভোট দানের পদ্ধতি;    
(ঞ) ব্যালট পেপার এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্রের হেফাজত ও বিলিবন্টন;    
(ট) যে অবস্থায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা যায় এবং পুনরায় ভোট গ্রহণ করা যায়;    (ঠ) নির্বাচন ব্যয়;    
(ড) নির্বাচনে দুর্নীতিমূলক বা অবৈধ কার্যকলাপ ও অন্যান্য নির্বাচনী অপরাধ এবং উহার দণ্ড;    
(ঢ) নির্বাচন বিরোধ, নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও 39[নির্বাচন আপীল ট্রাইব্যুনাল গঠন], নির্বাচনী দরখাস্ত দায়ের, নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে উক্ত ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা ও অনুসরণীয় পদ্ধতিসহ আনুষংগিক বিষয়াদি; এবং    
(ণ) নির্বাচন সম্পর্কিত আনুষংগিক অন্যান্য বিষয়৷    (৩) উপ-ধারা (২)
(ড) এর অধীন প্রণীত বিধিতে কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়বিধ দণ্ডের বিধান করা যাইবে, তবে কারাদণ্ডের মেয়াদ 40[সাত বৎসরের] অধিক হইবে না।

41[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও মহিলা সদস্যগণের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ

২১৷ 42[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও মহিলা সদস্য হিসাবে নির্বাচিত সকল ব্যক্তির নাম নির্বাচনের পর যথাশীঘ্র সম্ভব, নির্বাচন কমিশন সরকারী গেজেটে প্রকাশ করিবে৷

43[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও সদস্যগণ কর্তৃক কার্যভার গ্রহণ

২২৷ 44[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও অন্যান্য সদস্যগণ পরিষদের সভায় প্রথম যে তারিখে যোগদান করিবেন সেই তারিখে তাঁহার স্বীয় পদের কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে৷

নির্বাচন বিরোধ, নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ইত্যাদি

45[২২ক৷ (১) এই আইনের অধীন কোন নির্বাচন বা নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পর্কে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ব্যতীত কোন আদালত বা অন্য কোন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না৷    

(২) এই আইনের অধীন নির্বাচন সম্পর্কিত বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশন, সাব-জজ পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় একজন কর্মকর্তা সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল এবং একজন জেলা জজ পদমর্যাদার বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাচন আপীল ট্রাইব্যুনাল গঠন করিতে পারিবে৷    

(৩) কোন নির্বাচনের জন্য মনোনীত প্রার্থী সেই নির্বাচনের কোন বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন ও প্রতিকার প্রার্থনা করিয়া নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে দরখাস্ত করিতে পারিবেন; অন্য কোন ব্যক্তি এইরূপ দরখাস্ত করিতে পারিবে না৷

নির্বাচনী দরখাস্ত বা আপীল বদলীকরণের ক্ষমতা

২২খ৷ নির্বাচন কমিশন নিজ উদ্যোগে অথবা পক্ষগণের কোন এক পক্ষ কর্তৃক এতদুদ্দেশ্যে পেশকৃত আবেদনের প্রেক্ষিতে যে কোন পর্যায়ে একটি নির্বাচনী দরখাস্ত এক নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল হইতে অন্য ট্রাইব্যুনালে অথবা একটি আপীল ট্রাইব্যুনাল হইতে অপর একটি আপীল ট্রাইব্যুনালে বদলী করিতে পারিবে; এবং যে ট্রাইব্যুনালে বা আপীল ট্রাইব্যুনালে তাহা বদলী করা হয় সেই ট্রাইব্যুনাল বা আপীল ট্রাইব্যুনাল উক্ত দরখাস্ত বা আপীল যে পর্যায়ে বদলী করা হইয়াছে সেই পর্যায় হইতে উহার বিচারকার্য চালাইয়া যাইবে:  তবে শর্ত থাকে যে, নির্বাচনী দরখাস্ত যে ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হইয়াছে সেই ট্রাইব্যুনাল উপযুক্ত মনে করিলে ইতিপূর্বে পরীক্ষিত কোন সাক্ষী পুনরায় তলব বা পুনরায় পরীক্ষা করিতে পারিবে এবং অনুরূপভাবে আপীল ট্রাইব্যুনালও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে৷

বিধি অনুযায়ী নির্বাচনী দরখাস্ত, আপীল নিষ্পত্তি ইত্যাদি

২২গ৷ নির্বাচনী দরখাস্তের পক্ষ, নির্বাচনী দরখাস্ত ও নির্বাচন আপীল দায়েরের পদ্ধতি নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও নির্বাচনী আপীল ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক নির্বাচন বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে অনুসরণীয় পদ্ধতি, উক্ত ট্রাইব্যুনাল সমূহের এখ্‌তিয়ার ও ক্ষমতা, সংশ্লিষ্ট পক্ষকে প্রদেয় প্রতিকার এবং আনুষংগিক সকল বিষয় বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷]

পরিষদের কার্যাবলী

২৩৷ (১) দ্বিতীয় তফসিলে উল্লিখিত কার্যাবলী পরিষদের কার্যাবলী হইবে এবং পরিষদ উহার তহবিলের সংগতি অনুযায়ী এই কার্যাবলী সম্পাদন করিবে৷    

(২) সরকার প্রয়োজনবোধে পরিষদ ও অন্যান্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কার্যাবলীর বিবরণ সুনির্দিষ্টকরণের জন্য সরকারী প্রজ্ঞাপন জারী করিয়া প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারিবে৷

সরকার ও পরিষদের কার্যাবলী হস্তান্তর ইত্যাদি

২৪46[(১) এ আইন অথবা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার, উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী গঠিত কমিটির পরামর্শক্রমে,-  
(ক) পরিষদে ন্যস্ত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্ম সরকারের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণে; এবং  
(খ) তৃতীয় তফসিলে বর্ণিত বা তৃতীয় তফসিল বহির্ভূত এবং সরকার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট উপজেলা এলাকায় পরিচালিত কোন প্রতিষ্ঠান বা কর্ম, উক্ত প্রতিষ্ঠান বা কর্মের সহিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ এবং আনুষংগিক বিষয়াদি পরিষদের ব্যবস্থাপনায় ও নিয়ন্ত্রণে, হস্তান্তর করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে।]    

(২) হস্তান্তরিত বিষয়ে দায়িত্বপালনরত কর্মকর্তাদের বার্ষিক কার্যক্রম প্রতিবেদন (Annual Performance Report) 47[চেয়ারম্যান] কর্তৃক এবং তাঁহার বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কর্তৃক লেখা হইবে৷    

(৩) উপজেলা পরিষদের কাছে সরকারের যে সকল বিষয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও তাঁহাদের কর্মকর্তা/কর্মচারী হস্তান্তর করা হইবে, নতুন প্রেক্ষিতে তাঁহাদের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও উপদেশ প্রদান ও নির্দেশিকা জারীর জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা হইবে এবং কমিটির সামগ্রিক দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপর ন্যস্ত থাকিবে৷

পরিষদের উপদেষ্টা

48[২৫। (১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর অধীন একক আঞ্চলিক এলাকা হইতে নির্বাচিত সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য পরিষদের উপদেষ্টা হইবেন এবং পরিষদ উপদেষ্টার পরামর্শ গ্রহণ করিবে। 

(২) সরকারের সহিত কোন বিষয়ে পরিষদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পরিষদকে উক্ত বিষয়টি সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যকে অবহিত রাখিতে হইবে।]

নির্বাহী ক্ষমতা

২৬৷ (১) এই আইনের অধীন যাবতীয় কার্যাবলী যথাযথভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করিবার ক্ষমতা পরিষদের থাকিবে৷ 

49[(২) এ আইন বা তদধীন প্রণীত বিধিতে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যানের উপর ন্যস্ত হইবেঃ  তবে শর্ত থাকে যে, পরিষদ ইহার সকল বা যে কোন নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়োগ করিবার জন্য কোন ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য বা কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে।] 

(৩) পরিষদের নির্বাহী বা অন্য কোন কার্য পরিষদের নামে গৃহীত হইয়াছে বলিয়া প্রকাশ করা হইবে এবং উহা বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রমাণীকৃত হইতে হইবে৷    

কার্যাবলী নিষ্পন্ন

২৭৷ (১) পরিষদের কার্যাবলী বিধি দ্বারা নির্ধারিত সীমার মধ্যে ও পদ্ধতিতে উহার সভায় বা কমিটিসমূহের সভায় অথবা উহার 50[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] , সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কর্তৃক নিষ্পন্ন করা হইবে৷ 

(২) পরিষদের সকল সভায় চেয়ারম্যান, এবং তাঁহার অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী চেয়ারম্যান সভাপতিত্ব করিবেন৷    

(৩) পরিষদের কোন সদস্য পদ শূন্য রহিয়াছে বা উহার গঠনে কোন ত্রুটি রহিয়াছে কেবল এই কারণে কিংবা পরিষদের বৈঠকে উপস্থিত হইবার বা ভোট দানের বা অন্য কোন উপায়ে উহার কার্যধারায় অংশগ্রহণের অধিকার না থাকা সত্বেও কোন ব্যক্তি অনুরূপ কার্য করিয়াছেন, কেবল এই কারণে পরিষদের কোন কার্য বা কার্যধারা অবৈধ হইবে না৷ 

(৪) পরিষদ প্রত্যেক সভার কার্যবিবরণীর একটি করিয়া অনুলিপি সভা অনুষ্ঠিত হইবার তারিখের ১৪ (চৌদ্দ) দিনের মধ্যে সরকারের 51[ও সংশ্লিষ্ট এলাকার সংসদ সদস্যের] নিকট প্রেরণ করিতে হইবে৷

পরিষদের সভার কর্মকর্তা ইত্যাদির উপস্থিতি

২৮৷ (১) পরিষদের সভায় আলোচ্য বা নিষ্পত্তিযোগ্য কোন বিষয় সম্পর্কে মতামত প্রদান বা পরিষদকে অন্যবিধভাবে সহায়তা করার জন্য উপজেলা বা থানা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থাকিবেন এবং আলোচনায় অংশ গ্রহণ করিতে ও তাঁহার মতামত ব্যক্ত করিতে পারিবেন, তবে তাঁহার কোন ভোটাধিকার থাকিবে না৷    

(২) পরিষদ প্রয়োজনবোধে যে কোন বিষয়ে মতামত প্রদানের উদ্দেশ্যে উহার সভায় যে কোন ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানাইতে, উপস্থিত থাকিবার এবং মতামত ব্যক্ত করিবার সুযোগ দিতে পারিবে৷

কমিটি গঠন ইত্যাদি

52[২৯। (১) পরিষদ উহার কার্যাবলী সুচারুরূপে সম্পাদন করিবার জন্য পরিষদ গঠিত হইবার পর ভাইস চেয়ারম্যান বা সদস্য বা মহিলা সদস্যগণ সমন্বয়ে নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির প্রত্যেকটি সম্পর্কে একটি করিয়া কমিটি গঠন করিবে, যাহার মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই বৎসর ছয় মাস হইবে, যথাঃ-  
(ক) আইন-শৃঙ্খলা;  
(খ) যোগাযোগ ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন;  
(গ) কৃষি ও সেচ;  
(ঘ) মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা;  
(ঙ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা;  
(চ) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ;  
(ছ) যুব ও ক্রীড়া উন্নয়ন;  
(জ) মহিলা ও শিশু উন্নয়ন;  
(ঝ) সমাজকল্যাণ;  
(ঞ) মুক্তিযোদ্ধা;  
(ট) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ;  
(ঠ) পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়;  
(ড) সংস্কৃতি;  
(ঢ) পরিবেশ ও বন;  
(ণ) বাজার মূল্য পর্যবেক্ষণ, মনিটরিং ও নিয়ন্ত্রণ;  
(ত) অর্থ, বাজেট, পরিকল্পনা ও স্থানীয় সম্পদ আহরণ;  
(থ) জনস্বাস্থ্য, স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ।  

(২) পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্য হইতে কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হইবেন।  

(৩) সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপজেলা অফিসার এই ধারার অধীন গঠিত কমিটির সদস্য-সচিব হইবেন এবং পরিষদে হস্তান্তরিত নয় এমন বিষয় সম্পর্কিত কমিটির সদস্য-সচিব হিসাবে একজন কর্মকর্তাকে উপজেলা পরিষদ নির্ধারণ করিবে।  

(৪) কমিটি অন্যূন ৫ (পাঁচ) জন এবং অনূর্ধ্ব ৭ (সাত) জন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে এবং কমিটি, প্রয়োজনবোধে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তিকে সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত (Co-opt)করিতে পারিবে।  

(৫) কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত সদস্য (Co-opt member)এবং সদস্য-সচিবের কোন ভোটাধিকার থাকিবে না।  

(৬) প্রত্যেক কমিটির সভা প্রতি দুই মাসে অন্যূন একবার অনুষ্ঠিত হইবে।  

(৭) নিম্নলিখিত কারণে পরিষদ কোন কমিটি ভাঙ্গিয়া দিতে পারিবে, যথাঃ-  
(ক) উপ-ধারা (৬) অনুযায়ী নিয়মিত সভা অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হইলে; এবং  
(খ) এই আইন বা তদ্‌ধীন প্রণীত বিধির বিধান বহির্ভূত কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিলে বা কাজ করিলে।]

চুক্তি

৩০৷ (১) পরিষদ কর্তৃক বা উহার পক্ষে সম্পাদিত সকল চুক্তি-    
(ক) লিখিত হইতে হইবে এবং পরিষদের নামে সম্পাদিত হইবে;    
(খ) বিধি অনুসারে সম্পাদিত হইতে হইবে৷    

(২) কোন চুক্তি সম্পাদনের অব্যবহিত পরে অনুষ্ঠিত পরিষদের সভায় চেয়ারম্যান চুক্তিটি উপস্থাপন করিবেন এবং এই চুক্তির উপর সকল সদস্যের আলোচনার অধিকার থাকিবে৷    

(৩) পরিষদ প্রস্তাবের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চুক্তি সম্পাদনের জন্য পদ্ধতি নির্ধারণ করিতে পারিবে এবং চেয়ারম্যান চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে উক্ত প্রস্তাব অনুযায়ী কাজ করিবেন৷    

(৪) এই ধারার খেলাপ সম্পাদিত কোন চুক্তির দায়িত্ব পরিষদের উপর বর্তাইবে না৷

নির্মাণ কাজ

৩১৷ সরকার, সরকারী গেজেটের মাধ্যমে, নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সাধারণ নীতিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথা:-    
(ক) পরিষদ কর্তৃক সম্পাদিতব্য সকল নির্মাণ কাজের পরিকল্পনা এবং আনুমানিক ব্যয়ের হিসাব প্রণয়ন;    
(খ) উক্ত পরিকল্পনা ও ব্যয় কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক এবং কি শর্তে প্রযুক্তিগতভাবে এবং প্রশাসনিকভাবে অনুমোদিত হইবে, তাহা নির্ধারণ;    
(গ) উক্ত পরিকল্পনা ও ব্যয়ের হিসাব কাহার দ্বারা প্রণয়ন করা হইবে এবং উক্ত নির্মাণ কাজ কাহার দ্বারা সম্পাদন করা হইবে, তাহা নির্ধারণ৷

নথিপত্র, প্রতিবেদন ইত্যাদি

৩২৷ পরিষদ-    
(ক) উহার কার্যাবলীর নথিপত্র সংরক্ষণ করিবে;    
(খ) বিধিতে উল্লিখিত বিষয়ের উপর সাময়িক প্রতিবেদন ও বিবরণী প্রণয়ন ও প্রকাশ করিবে;    
(গ) উহার কার্যাবলী সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় বা সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্দেশিত অন্যান্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করিতে পারিবে৷

পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা

53[৩৩। (১) উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হইবেন এবং তিনি পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করিবেন।  

(২) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক শৃংখলা প্রতিপালন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা সম্পাদন করিবেন।]

পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ

৩৪৷ (১) পরিষদের কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের নিমিত্ত পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিভিন্ন শ্রেণীর কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে বিধি অনুযায়ী নিয়োগ করিতে পারিবে৷    

(২) পরিষদ কর্তৃক নিয়োগযোগ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চাকুরীর শর্তাদি বিধি দ্বারা নির্ধারিত হইবে৷  

54[(৩) উপ-ধারা (১) ও (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের একজন সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা থাকিবেন, যিনি সরকার বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিযুক্ত হইবেন।]]

পরিষদের তহবিল গঠন

৩৫৷ (১) সংশ্লিষ্ট উপজেলার নাম সম্বলিত প্রত্যেক উপজেলা পরিষদের একটি তহবিল থাকিবে৷    

(২) পরিষদের তহবিলে নিম্নলিখিত অর্থ জমা হইবে, যথা:-    
(ক) পরিষদ কর্তৃক ধার্যকৃত কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য দাবী বাবদ প্রাপ্ত অর্থ;    
(খ) পরিষদের উপর ন্যস্ত এবং তৎকর্তৃক পরিচালিত সকল সম্পত্তি হইতে প্রাপ্ত আয় বা মুনাফা;    
(গ) ধারা ২৪ এর অধীনে পরিষদের নিকট হস্তান্তরিত প্রতিষ্ঠান বা কর্ম পরিচালনাকারী জনবলের বেতন ভাতা এবং এতদ্‌সংক্রান্ত অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ বাবদ সরকার প্রদত্ত অর্থ;    
(ঘ) সরকার বা অন্যান্য কর্তৃপক্ষের অনুদান;    
(ঙ) কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;    
(চ) পরিষদের অর্থ বিনিয়োগ হইতে মুনাফা;   
 (ছ) পরিষদ কর্তৃক প্রাপ্ত অন্য কোন যে কোন অর্থ;    
(জ) পরিষদের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ;    
(ঝ) সরকারের নির্দেশে পরিষদের উপর ন্যস্ত অন্যান্য আয়ের উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ৷

পরিষদের তহবিল সংরক্ষণ, বিনিয়োগ ও বিশেষ তহবিল

৩৬৷ (১) পরিষদের তহবিলে জমাকৃত অর্থ কোন সরকারী ট্রেজারীতে বা সরকারী ট্রেজারীর কার্য পরিচালনাকারী কোন ব্যাংকে অথবা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন প্রকারে জমা রাখা হইবে৷    

(২) পরিষদ উহার তহবিলের কিছু অংশ, যাহা বিধি দ্বারা নির্ধারিত হয় তাহা, বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও খাতে বিনিয়োগ করিতে পারিবে৷    

(৩) পরিষদ ইচ্ছা করিলে কোন বিশেষ উদ্দেশ্যে আলাদা তহবিল গঠন করিতে পারিবে এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উক্ত-তহবিল পরিচালনা করিবে৷

পরিষদের তহবিলের প্রয়োগ

৩৭৷ (১) পরিষদের তহবিলের অর্থ নিম্নলিখিত খাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ব্যয় করা যাইবে, যথা:-    
প্রথমতঃ পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা প্রদান;    
দ্বিতীয়তঃ এই আইনের অধীন পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;    
তৃতীয়তঃ এই আইন বা আপাততঃ বলবৎ অন্য কোন আইন দ্বারা ন্যস্ত পরিষদের সম্পাদন এবং কর্তব্য পালনের জন্য ব্যয়;    
চতুর্থতঃ সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিষদ কর্তৃক ঘোষিত পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;    
পঞ্চমতঃ সরকার কর্তৃক ঘোষিত পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়৷    

(২) পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে, যথা:-    
(ক) পরিষদের চাকুরীতে নিয়োজিত কোন সরকারী কর্মচারীর জন্য দেয় অর্থ;    
(খ) কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক পরিষদের বিরুদ্ধে প্রদত্ত কোন রায়, ডিক্রী বা রোয়েদাদ কার্যকর করিবার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ;    
(গ) সরকার কর্তৃক দায়যুক্ত বলিয়া নির্ধারিত অন্য যে কোন ব্যয়৷    

(৩) পরিষদের তহবিলের উপর দায়যুক্ত কোন ব্যয়ের খাতে যদি কোন অর্থ অপরিশোধিত থাকে, তাহা হইলে যে ব্যক্তির হেফাজতে উক্ত তহবিল থাকিবে সে ব্যক্তিকে সরকার আদেশ দ্বারা উক্ত তহবিল হইতে, যতদূর সম্ভব, ঐ অর্থ পরিশোধ করিবার জন্য আদেশ দিতে পারিবে৷

বাজেট

৩৮৷ (১) প্রতি অর্থ বৎসর শুরু হইবার অন্ততঃ ষাট দিন পূর্বে পরিষদ উক্ত বৎসরের আয় ও ব্যয় সম্বলিত বিবরণী, অতঃপর বাজেট বলিয়া উল্লিখিত, সরকার প্রণীত নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রণয়ন করিয়া উহার অনুলিপি পরিষদের নোটিশ বোর্ডে অন্ততঃ পনের দিন ব্যাপী জনসাধারণের অবগতি, মন্তব্য ও পরামর্শের জন্য লটকাইয়া রাখিবে৷  

(২) উপ-ধারা (১) অনুসারে প্রদর্শিত বাজেট সম্পর্কে জনগণের মন্তব্য ও পরামর্শ বিবেচনাক্রমে পরিষদ সংশ্লিষ্ট অর্থ বৎসর শুরু হওয়ার ত্রিশ দিন পূর্বে বাজেটটি অনুমোদন করিয়া উহার একটি অনুলিপি জেলা প্রশাসন ও সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে৷  

(৩) কোন অর্থ বৎসর শুরু হইবার পূর্বে পরিষদ ইহার বাজেট অনুমোদন করিতে না পারিলে সরকার উক্ত বৎসরের জন্য একটি আয়-ব্যয় বিবরণী প্রস্তুত করাইয়া উহা প্রত্যয়ন করিবে এবং এইরূপ প্রত্যয়নকৃত বিবরণী পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে৷  

(৪) উপ-ধারা (১) এর অধীনে বাজেটের অনুলিপি প্রাপ্তির পনের দিনের মধ্যে সরকার আদেশ দ্বারা, বাজেটটি সংশোধন করিতে পারিবে এবং অনুরূপ সংশোধিত বাজেটই পরিষদের অনুমোদিত বাজেট বলিয়া গণ্য হইবে৷  

(৫) কোন অর্থ বৎসর শেষ হইবার পূর্বে যে কোন সময় সেই অর্থ বৎসরের জন্য, প্রয়োজন হইলে, পরিষদ একটি সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন করিতে পারিবে এবং উক্ত সংশোধিত বাজেটের ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী, যতদূর সম্ভব, প্রযোজ্য হইবে৷  

(৬) এই আইন মোতাবেক গঠিত পরিষদ প্রথম বার যে অর্থ বৎসরে দায়িত্ব গ্রহণ করিবে সেই অর্থ বৎসরের বাজেট উক্ত দায়িত্বভার গ্রহণের পর অর্থ বৎসরটির বাকী সময়ের জন্য প্রণীত হইবে এবং উক্ত বাজেটের ক্ষেত্রেও এই ধারার বিধানাবলী যতদূর সম্ভব প্রযোজ্য হইবে।

হিসাব

৩৯৷ (১) পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও ফরমে রক্ষণ করা যাইবে৷    

(২) প্রতিটি অর্থ বৎসর শেষ হইবার পর পরিষদ একটি বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের হিসাব প্রস্তুত করিবে এবং পরবর্তী অর্থ বৎসরের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে উহা সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে৷    

(৩) উক্ত বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাবের একটি অনুলিপি জনসাধারণের পরিদর্শনের জন্য পরিষদ কার্যালয়ের কোন প্রকাশ্য স্থানে স্থাপন করিতে হইবে এবং উক্ত হিসাব সম্পর্কে জনসাধারণের আপত্তি বা পরামর্শ পরিষদ বিবেচনা করিবে৷

হিসাব নিরীক্ষা 

৪০৷ (১) পরিষদের আয়-ব্যয়ের হিসাব বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের দ্বারা নিরীক্ষিত হইবে৷ 

(২) নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ পরিষদের সকল হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় বহি ও অন্যান্য দলিল দেখিতে পারিবে এবং প্রয়োজনবোধে পরিষদের 55[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও যে কোন সদস্য, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করিতে পারিবে৷ 

(৩) হিসাব-নিরীক্ষার পর নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ সরকারের নিকট একটি নিরীক্ষা প্রতিবেদন পেশ করিবে এবং উহাতে, অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে, নিম্নবর্ণিত বিষয়াদির উল্লেখ থাকিবে, যথা:-    
(ক) অর্থ আত্মসাৎ;    
(খ) পরিষদ তহবিলের লোকসান, অপচয় এবং অপপ্রয়োগ;    
(গ) হিসাব রক্ষণে অনিয়ম;    
(ঘ) নিরীক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের মতে যাহারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উক্ত আত্মসাৎ, লোকসান, অপচয়, অপপ্রয়োগ ও অনিয়মের জন্য দায়ী তাঁহাদের নাম।

পরিষদের সম্পত্তি

৪১৷ (১) সরকার বিধি দ্বারা-    
(ক) পরিষদের উপর বা উহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত বা উহার মালিকানাধীন সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য বিধান করিতে পারিবে;    
(খ) উক্ত সম্পত্তির হস্তান্তরের নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবে৷    

(২) পরিষদ-    
(ক) উহার মালিকানাধীন বা উহার উপর বা উহার তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত যে কোন সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও উন্নয়ন সাধন করিতে পারিবে;    
(খ) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে উক্ত সম্পত্তি কাজে লাগাইতে পারিবে;    
56[(গ) সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে দান, বিক্রয়, বন্ধক, ইজারা বা বিনিময়ের মাধ্যমে বা অন্য কোন পন্থায় যে কোন সম্পত্তি অর্জন বা হস্তান্তর করিতে পারিবে।]

উন্নয়ন পরিকল্পনা

৪২৷ (১) পরিষদ উহার এখ্‌তিয়ারভুক্ত যে কোন বিষয়ে উহার তহবিলের সংগতি অনুযায়ী পাঁচসালা পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করিতে পারিবে এবং এইরূপ পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে পরিষদের এলাকাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ বা উক্ত এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে জড়িত বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ বা কোন ব্যক্তি বিশেষের পরামর্শ বিবেচনা করিতে পারিবে৷    

(২) উক্ত পরিকল্পনায় নিম্নলিখিত বিষয়ের বিধান থাকিবে, যথা:-    
(ক) কি পদ্ধতিতে পরিকল্পনার অর্থ যোগান হইবে এবং উহার তদারক ও বাস্তবায়ন হইবে;    
(খ) কাহার দ্বারা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হইবে;    
(গ) পরিকল্পনা সম্পর্কিত অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়৷    

(৩) পরিষদ উহার প্রতিটি উন্নয়ন পরিকল্পনার 57[বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যের সুপারিশ গ্রহণপূর্বক] একটি অনুলিপি উহার বাস্তবায়নের পূর্বে সরকারের নিকট প্রেরণ করিবে এবং জনসাধারণের অবগতির জন্য পরিষদের বিবেচনায় যথাযথ পদ্ধতিতে প্রকাশ করিতে বা ক্ষেত্র বিশেষে তাঁহাদের মতামত বা পরামর্শ বিবেচনাক্রমে উক্ত পরিকল্পনা সম্পর্কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে৷

পরিষদের নিকট চেয়ারম্যান ইত্যাদির দায়

৪৩৷ পরিষদের 58[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] অথবা উহার কোন সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারী অথবা পরিষদ প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বা পরিষদের পক্ষে কর্মরত কোন ব্যক্তির প্রত্যক্ষ গাফিলতি বা অসদাচরণের কারণে পরিষদের কোন অর্থ বা সম্পদের লোকসান অপচয় বা অপপ্রয়োগ হইলে উহার জন্য তিনি দায়ী থাকিবেন এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে সরকার তাঁহার এই দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করিবে এবং যে টাকার জন্য তাঁহাকে দায়ী করা হইবে সেই টাকা সরকারী দাবী (Public Demand) হিসাবে তাঁহার নিকট হইতে আদায় করা হইবে৷

পরিষদ কর্তৃক আরোপনীয় কর ইত্যাদি

৪৪৷ পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, চতুর্থ তফসিলে উল্লিখিত সকল অথবা যে কোন কর, রেইট, টোল এবং ফিস বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে আরোপ করিতে পারিবে৷

কর সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপন ইত্যাদি

৪৫৷ (১) পরিষদ কর্তৃক আরোপিত সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রজ্ঞাপিত হইবে এবং সরকার ভিন্নরূপ নির্দেশ না দিলে উক্ত আরোপের বিষয়টি আরোপের পূর্বে প্রকাশ করিতে হইবে৷    

(২) কোন কর, টোল, রেইট বা ফিস আরোপের বা উহার পরিবর্তনের কোন প্রস্তাব অনুমোদিত হইলে সরকার যে তারিখ নির্ধারণ করিবে সেই তারিখে উহা কার্যকর হইবে৷

কর সংক্রান্ত দায়

৪৬৷ কোন ব্যক্তি বা জিনিসপত্রের উপর কর, রেইট, টোল বা ফিস আরোপ করা যাইবে কিনা উহা নির্ধারণের প্রয়োজনে পরিষদ, নোটিশের মাধ্যমে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করিতে বা দলিলপত্র, হিসাব বহি বা জিনিসপত্র হাজির করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে৷

কর আদায়

৪৭৷ (১) এই আইনে ভিন্নরূপ বিধান না থাকিলে, পরিষদের সকল কর, রেইট, টোল এবং ফিস বিধি দ্বারা নির্ধারিত ব্যক্তির দ্বারা এবং পদ্ধতিতে আদায় করা হইবে৷    

(২) পরিষদের প্রাপ্য অনাদায়ী সকল প্রকার কর রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য অর্থ সরকারী দাবী (Public Demand) হিসাবে আদায়যোগ্য হইবে৷

কর ইত্যাদি নির্ধারণের বিরুদ্ধে আপত্তি

৪৮৷ বিধি দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত পন্থায় এবং সময়ের মধ্যে পেশকৃত লিখিত দরখাস্ত ছাড়া অন্য পন্থায় এই আইনের অধীন ধার্যকৃত কোন কর, রেইট, টোল বা ফিস বা এতদ্‌সংক্রান্ত কোন সম্পত্তির মূল্যায়ন অথবা কোন ব্যক্তির উহা প্রদানের দায়িত্ব সম্পর্কে কোন আপত্তি উত্থাপন করা যাইবে না৷

কর বিধি

৪৯৷ (১) পরিষদ কর্তৃক ধার্যকৃত সকল কর, রেইট, টোল বা ফিস এবং অন্যান্য দাবী বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে ধার্য আরোপ এবং নিয়ন্ত্রণ করা যাইবে৷    

(২) এই ধারায় উল্লিখিত বিষয় সম্পর্কিত বিধি অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে কর দাতাদের করণীয় এবং কর ধার্যকারী ও আদায়কারী কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বিধান থাকিবে৷

পরিষদের উপর তত্ত্বাবধান

৫০৷ এই আইনের উদ্দেশ্যের সহিত পরিষদের কার্যকলাপের সামঞ্জস্য সাধনের নিশ্চয়তা বিধানকল্পে সরকার পরিষদের উপর সাধারণ তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগ করিবে৷

পরিষদের কার্যাবলীর উপর নিয়ন্ত্রণ

৫১৷ (১) সরকার যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, পরিষদ কর্তৃক বা পরিষদের পক্ষে কৃত বা প্রস্তাবিত কোন কাজকর্ম আইনের সহিত সংগতিপূর্ণ নহে অথবা জনস্বার্থের পরিপন্থী, তাহা হইলে সরকার আদেশ দ্বারা-    
(ক) পরিষদের উক্ত কার্যক্রম বাতিল করিতে পারিবে;    
(খ) পরিষদ কর্তৃক গৃহীত কোন প্রস্তাব অথবা প্রদত্ত কোন আদেশের বাস্তবায়ন সাময়িকভাবে স্থগিত করিতে পারিবে;    
(গ) প্রস্তাবিত কোন কাজকর্ম সম্পাদন নিষিদ্ধ করিতে পারিবে;    
(ঘ) পরিষদকে আদেশে উল্লিখিত কোন কাজ করিবার নির্দেশ দিতে পারিবে৷    

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আদেশ প্রদত্ত হইলে পরিষদ আদেশ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে উহা পুনঃবিবেচনার জন্য 59[সরকারের নিকট আবেদন] করিতে পারিবে৷    

(৩) উক্ত আবেদন প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকার উক্ত আদেশটি হয় বহাল রাখিবে নতুবা সংশোধন অথবা বাতিল করিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে পরিষদকে উহা অবহিত করিবে৷    

(৪) যদি কোন কারণে উল্লিখিত সময়ের মধ্যে সরকার উক্ত আদেশ বহাল অথবা সংশোধন না করে তাহা হইলে উহা বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে৷

পরিষদের বিষয়াবলী সম্পর্কে তদন্ত 

৫২৷ (১) সরকার, স্বেচ্ছায় অথবা কোন ব্যক্তির আবেদনের ভিত্তিতে, পরিষদের বিষয়াবলী সাধারণভাবে অথবা তৎসম্পর্কিত কোন বিশেষ ব্যাপার সম্বন্ধে তদন্ত করিবার জন্য কোন কর্মকর্তাকে ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে এবং উক্ত তদন্তের রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহীতব্য প্রয়োজনীয় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার জন্যও নির্দেশ দিতে পারিবে।    

(২) উক্ত তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তের প্রয়োজনে সাক্ষ্য গ্রহণ এবং সাক্ষীর উপস্থিতি ও দলিল উপস্থাপন নিশ্চিতকরণের জন্য Code of Civil Procedure, 1908 (Act V of 1908) এর অধীন এতদ্‌সংক্রান্ত বিষয়ে দেওয়ানী আদালতের যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবে৷

পরিষদ বাতিলকরণ

৫৩৷ (১) যদি প্রয়োজনীয় তদন্তের পর সরকার এইরূপ অভিমত পোষণ করে যে, পরিষদ-    
(ক) উহার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ অথবা ক্রমাগতভাবে উহার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হইয়াছে;    
(খ) উহার প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্ব পালনে অসমর্থ;   
(গ) সাধারণতঃ এমন কাজ করে যাহা জনস্বার্থ বিরোধী;    
(ঘ) অন্য কোনভাবে উহার ক্ষমতার সীমা লংঘন বা ক্ষমতার অপব্যবহার করিয়াছে বা করিতেছে;    তাহা হইলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা, পরিষদকে বাতিল করিতে পারিবে:    তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত আদেশ প্রদানের পূর্বে পরিষদের সদস্যগণকে প্রস্তাবিত বাতিলকরণের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ দিতে হইবে৷    

(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন আদেশ প্রকাশিত হইলে –  
(ক) পরিষদের 60[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও অন্যান্য সদস্যগণ তাহাদের পদে বহাল থাকিবেন না; 
(খ) বাতিল থাকাকালীন সময়ে পরিষদের যাবতীয় দায়িত্ব সরকার কর্তৃক নিয়োজিত কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষ পালন করিবে৷    
(৩) বাতিলাদেশ সরকারী গেজেটে জারীর একশত বিশ দিনের মধ্যে এই আইন ও বিধি মোতাবেক পরিষদ পুনর্গঠিত হইবে৷

যুক্ত কমিটি

৫৪৷ পরিষদ অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহিত একত্রে উহাদের সাধারণ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ের জন্য যুক্ত কমিটি গঠন করিতে পারিবে এবং অনুরূপ কমিটিকে উহার যে কোন ক্ষমতা প্রদান করিতে পারিবে৷

পরিষদ ও অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বিরোধ

৫৫৷ পরিষদ এবং অন্য কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোন বিরোধ দেখা দিলে বিরোধীয় বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সরকারের নিকট প্রেরিত হইবে এবং এই ব্যাপারে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷

অপরাধ

৫৬৷ পঞ্চম তফসিলে বর্ণিত কোন করণীয় কাজ না করা এবং করণীয় নয় এই প্রকার কাজ করা এই আইনের অধীন দণ্ডনীয় অপরাধ হইবে৷

দণ্ড

৫৭৷ এই আইনের অধীন কোন অপরাধের জন্য অনধিক পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা যাইবে এবং এই অপরাধ যদি অনবরতভাবে ঘটিতে থাকে, তাহা হইলে প্রথম দিনের অপরাধের পর পরবর্তী প্রত্যেক দিনের জন্য অপরাধীকে অতিরিক্ত অনধিক পাঁচশত টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাইবে৷

অপরাধ আমলে নেওয়া

৫৮৷ চেয়ারম্যান বা পরিষদ হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোন আদালত এই আইনের অধীন কোন অপরাধ বিচারের জন্য আমলে লইতে পারিবেন না৷      

অভিযোগ প্রত্যাহার ও আপোষ নিষ্পত্তি

৫৯৷ চেয়ারম্যান বা এতদুদ্দেশ্যে পরিষদ হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন অপরাধ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ প্রত্যাহার বা অভিযুক্ত ব্যক্তির সহিত আপোষ নিষ্পত্তি করিতে পারিবেন৷

অবৈধ অনুপ্রবেশ বা অবস্থান

৬০৷ (১) জনপথ ও সর্বসাধারণের ব্যবহার্য কোন স্থানে কোন ব্যক্তি কোন প্রকারে অবৈধ অনুপ্রবেশ করিবেন না৷    ব্যাখ্যা৷- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, কোন ব্যক্তির অবৈধ অনুপ্রবেশ বলিতে তাঁহার নিয়ন্ত্রণাধীন বা তাঁহার তত্ত্বাবধানে রহিয়াছে এমন কোন ব্যক্তি বা জীব-জন্তুর অনুপ্রবেশ বা কোন বস্তু বা কাঠামোর অবস্থানও অন্তর্ভুক্ত হইবে৷    

(২) পরিষদের নিয়ন্ত্রণভুক্ত বা এখ্‌তিয়ারাধীন জনপথে বা স্থানে উক্তরূপ অবৈধ অনুপ্রবেশ করিলে পরিষদ নোটিশ দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত ব্যক্তিকে তাঁহার অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধ করিবার জন্য নির্দেশ দিতে পারিবে এবং উক্ত সময়ের মধ্যে যদি তিনি এই নির্দেশ মান্য না করেন তাহা হইলে পরিষদ অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করিবার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উক্তরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্ত হইলে সেইজন্য তাঁহাকে কোন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হইবে না৷    

(৩) অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করার প্রয়োজনে গৃহীত ব্যবস্থার জন্য যে ব্যয় হইবে তাহা উক্ত অনুপ্রবেশকারীর উপর এই আইনের অধীন ধার্যকর বলিয়া গণ্য হইবে৷

আপীল

৬১৷ এই আইন বা কোন বিধি বা প্রবিধানের অধীনে পরিষদ বা উহার চেয়ারম্যান অথবা পরিষদের বা চেয়ারম্যানের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির কোন আদেশের দ্বারা কোন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হইলে তিনি উক্ত আদেশ প্রদানের ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকারের নিকট বা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট উহার বিরুদ্ধে আপীল করিতে পারিবেন এবং এই আপীলের উপর সরকারের বা উক্ত কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷

পরিষদ ও সরকারের কার্যাবলীর সমন্বয় সম্পর্কে আদেশ

৬২৷ সরকার, প্রয়োজন হইলে, আদেশ দ্বারা পরিষদ এবং সরকারী কর্তৃপক্ষের কার্যাবলীর মধ্যে কাজের সমন্বয় করিতে পারিবে৷

বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা

৬৩৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে৷    

(২) বিশেষ করিয়া, এবং উপরি-উক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, অনুরূপ বিধিতে নিম্নবর্ণিত সকল অথবা যে কোন বিষয়ে বিধান করা যাইবে, যথা:- 
61[***] 
(গ) 62[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও সদস্যগণের ক্ষমতা ও কার্যাবলী; 
(ঘ) পরিষদের পক্ষে চু্‌ক্তি সম্পাদনের বিধানাবলী;    
(ঙ) পরিষদের কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিধানাবলী;    
(চ) পরিষদের রেকর্ডপত্র, প্রতিবেদন ইত্যাদি রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রকাশনা সংক্রান্ত;    
(ছ) পরিষদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগ ও চাকুরীর শর্তাবলী সংক্রান্ত বিষয়;    
(জ) পরিষদের তহবিল রক্ষণ পরিচালনা, নিয়ন্ত্রণ, বিনিয়োগ;    
(ঝ) হিসাব নিরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদি;    
(ঞ) পরিষদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়াদি;   
(ট) নির্মাণ কাজ এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি;    
(ঠ) পরিষদের সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আচরণ সংক্রান্ত বিষয়;    
(ড) কর সংক্রান্ত বিষয়;    
(ঢ) পরিষদের আদেশের বিরুদ্ধে আপীল সংক্রান্ত বিষয়;    
(ণ) বিশেষ সভা আহ্বান এবং 63[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] বা অন্য কোন সদস্য সংক্রান্ত অপসারণের বিষয়; 
(ত) বাজেট প্রণয়ন ও অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়াবলী;    
(থ) এই আইনের বিধানাবলী পালনের জন্য সম্পৃক্ত অন্যান্য বিষয়াদি৷  

64[(৩) নির্বাচন কমিশন নিম্নবর্ণিত বিষয়ে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে, যথাঃ-  
(ক) চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা সদস্য নির্বাচন ও তৎসংক্রান্ত কার্যাবলী;  
(খ) নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ও আপীল ট্রাইব্যুনাল নিয়োগ, উহাদের ক্ষমতা, নির্বাচনী দরখাস্ত দাখিল এবং নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়াদি।]

প্রবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা

৬৪৷ (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে পরিষদ, সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, এই আইনের বা কোন বিধির সহিত অসমঞ্জস না হয় এইরূপ প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে৷    

(২) বিশেষ করিয়া, এবং উপরি-উক্ত ক্ষমতার সামগ্রিকতাকে ক্ষুণ্ন না করিয়া, অনুরূপ প্রবিধানে নিম্নরূপ সকল অথবা যে কোন বিষয়ে বিধান করা যাইবে, যথা:-    
(ক) পরিষদের কার্যাবলী পরিচালনা;    
(খ) পরিষদের সভার কোরাম নির্ধারণ;    
(গ) পরিষদের সভায় প্রশ্ন উত্থাপন;    
(ঘ) পরিষদের সভা আহবান;    
(ঙ) পরিষদের সভার কার্যবিবরণী লিখন;    
(চ) পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবের বাস্তবায়ন;    
(ছ) সাধারণ সীলমোহরের হেফাজত ও ব্যবহার;    
(জ) পরিষদের কোন কর্মকর্তাকে চেয়ারম্যানের ক্ষমতা অর্পণ;    
(ঝ) পরিষদের অফিসের বিভাগ ও শাখা গঠন এবং উহাদের কাজের পরিধি নির্ধারণ;    
(ঞ) কার্যনির্বাহ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়;    
(ট) এই আইনের অধীন প্রবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিতে হইবে বা করা যাইবে এইরূপ যে কোন বিষয়৷    

(৩) পরিষদের বিবেচনায় যে প্রকারে প্রকাশ করিলে কোন প্রবিধান সম্পর্কে জনসাধারণ ভালভাবে অবহিত হইতে পারিবে সেই প্রকারে প্রত্যেক প্রবিধান প্রকাশ করিতে হইবে৷    

(৪) সরকার নমুনা প্রবিধান প্রণয়ন করিতে পারিবে এবং এইরূপ কোন নমুনা প্রণীত হইলে পরিষদ উহা অনুসরণ করিবে৷

সরকার কর্তৃক ক্ষমতা অর্পণ

৬৫৷ সরকার এই আইনের অধীন ইহার সকল অথবা যে কোন ক্ষমতা সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোন ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষকে অর্পণ করিতে পারিবে৷

পরিষদের পক্ষে ও বিপক্ষে মামলা

৬৬৷ (১) পরিষদের বিরুদ্ধে বা পরিষদ সংক্রান্ত কোন কাজের সূত্রে উহার কোন সদস্য বা কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করিতে হইলে মামলা দায়ের করিতে ইচ্ছুক ব্যক্তিকে মামলার কারণ এবং বাদীর নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করিয়া একটি নোটিশ-    
(ক) পরিষদের ক্ষেত্রে, পরিষদের কার্যালয়ে প্রদান করিতে হইবে বা পৌঁছাইয়া দিতে হইবে;    
(খ) অন্যান্য ক্ষেত্রে, সংশ্লিষ্ট সদস্য, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিকট ব্যক্তিগতভাবে বা তাঁহার অফিস বা বাসস্থানে প্রদান করিতে হইবে বা পৌঁছাইয়া দিতে হইবে৷    

(২) উক্ত নোটিশ প্রদান বা পৌঁছানোর পর ত্রিশ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের করা যাইবে না, এবং মামলার আরজীতে উক্ত নোটিশ প্রদান করা বা পৌঁছানো হইয়াছে কিনা উহার উল্লেখ থাকিতে হইবে৷

নোটিশ এবং উহা জারীকরণ

৬৭৷ (১) এই আইন, বিধি বা প্রবিধান পালনের জন্য কোন কাজ করা বা না করা হইতে বিরত থাকা যদি কোন ব্যক্তির কর্তব্য হয় তাহা হইলে কোন সময়ের মধ্যে ইহা করিতে হইবে বা ইহা করা হইতে বিরত থাকিতে হইবে তাহা উল্লেখ করিয়া তাঁহার উপর একটি নোটিশ জারী করিতে হইবে৷    

(২) এই আইনের অধীন প্রদেয় কোন নোটিশ গঠনগত ত্রুটির কারণে অবৈধ হইবে না৷    

(৩) ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে এই আইনের অধীন প্রদেয় সকল নোটিশ উহার প্রাপককে হাতে হাতে প্রদান করিয়া অথবা তাঁহার নিকট 65[ডাকযোগে প্রেরণ করিয়া অথবা তাহার পরিবারের কোন সদস্যকে প্রদান করিয়া বা তাহার বাসস্থান বা] কর্মস্থলের কোন বিশিষ্ট স্থানে আঁটিয়া দিয়া জারী করিতে হইবে৷    

(৪) যে নোটিশ সর্বসাধারণের জন্য তাহা পরিষদ কর্তৃক নির্ধারিত কোন প্রকাশ্য স্থানে অঁটিয়া দিয়া জারী করা হইলে উহা যথাযথভাবে জারী হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে৷

প্রকাশ্য রেকর্ড

৬৮৷ এই আইনের অধীন প্রস্তুতকৃত এবং সংরক্ষিত যাবতীয় রেকর্ড এবং রেজিষ্টার Evidence Act, 1872 (I of 1872) তে যে অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) অভিব্যক্তিটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে প্রকাশ্য রেকর্ড (Public document) বলিয়া গণ্য হইবে এবং বিপরীত প্রমাণিত না হইলে, উহাকে বিশুদ্ধ রেকর্ড বা রেজিষ্টার বলিয়া গণ্য করিতে হইবে৷

নাগরিক সনদ প্রকাশ

66[৬৮ক। (১) এই আইনের অধীন গঠিত প্রতিটি উপজেলা নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক বিভিন্ন প্রকারের নাগরিক সেবা প্রদানের বিবরণ, সেবা প্রদানের শর্তসমূহ এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেবা প্রদান নিশ্চিত করিবার বিবরণ প্রকাশ করিবে যাহা নাগরিক সনদ (Citizen Charter) বলিয়া অভিহিত হইবে।  

(২) সরকার পরিষদের জন্য আদর্শ নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে। 

(৩) নাগরিক সনদ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রণয়নে নিম্নবর্ণিত বিষয়সহ অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকিবে, যথাঃ-  
(ক) পরিষদ প্রদত্ত প্রতিটি সেবার নির্ভুল ও স্বচ্ছ বিবরণ;  
(খ) পরিষদ প্রদত্ত সেবা প্রদানের মূল্য;  
(গ) সেবা গ্রহণ ও দাবি সংক্রান্ত যোগ্যতা ও প্রক্রিয়া;  
(ঘ) সেবা প্রদানের নির্দিষ্ট সময়সীমা;  
(ঙ) সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে নাগরিকদের দায়িত্ব;  
(চ) সেবা প্রদানের নিশ্চয়তা;  
(ছ) সেবা প্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া।  

উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার ও সুশাসন

৬৮খ। (১) প্রত্যেক উপজেলা পরিষদ সুশাসন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে উন্নততর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করিবে।  

(২) উপ-ধারা (১) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকার আর্থিক ও কারিগরি সাহায্যসহ অন্যান্য সহায়তা প্রদান করিবে।  

(৩) উপজেলা পরিষদ নাগরিক সনদে বর্ণিত আধুনিক সেবা সংক্রান্ত বিষয়সহ সরকারিভাবে প্রদত্ত সকল সেবার বিবরণ উন্নততর তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিকদের জ্ঞাত করিবার ব্যবস্থা করিবে।    

তথ্য প্রাপ্তির অধিকার

৬৮গ। (১) তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ (২০০৯ সনের ২০ নং আইন) এর বিধানাবলী সাপেক্ষে, বাংলাদেশের যে কোন নাগরিকের উপজেলা সংক্রান্ত যে কোন তথ্য, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, প্রাপ্তির অধিকার থাকিবে।  

(২) সরকার, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এলাকার জনসাধারণের নিকট সরবরাহযোগ্য তথ্যাদির একটি তালিকা প্রকাশের জন্য উপজেলা পরিষদকে আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।]

পরিষদের 67[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান], সদস্য ইত্যাদি জনসেবক (Public servant) গণ্য হইবেন

৬৯৷ পরিষদের 68[চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান] ও উহার অন্যান্য সদস্য এবং উহার কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ এবং পরিষদের পক্ষে কাজ করার জন্য যথাযথভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অন্যান্য ব্যক্তি Penal Code (Act XLV of 1860) এর Section 21 এ যে অর্থে জনসেবক (Public servant) অভিব্যক্তিটি ব্যবহৃত হইয়াছে সেই অর্থে জনসেবক (Public servant) বলিয়া গণ্য হইবেন৷

সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম রক্ষণ

৭০৷ এই আইন, বিধি বা প্রবিধান এর অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজের ফলে কোন ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলে বা তাঁহার ক্ষতিগ্রস্ত হইবার সম্ভাবনা থাকিলে তজ্জন্য সরকার, পরিষদ বা উহাদের নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলা বা অন্য কোন আইনগত কার্যক্রম গ্রহণ করা যাইবে না৷

নির্ধারিত পদ্ধতিতে কতিপয় বিষয়ের নিষ্পত্তি

৭১৷ এই আইনে কোন কিছু করিবার জন্য বিধান থাকা সত্ত্বেও যদি উহা কোন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বা কি পদ্ধতিতে করা হইবে তৎসম্পর্কে কোন বিধান না থাকে তাহা হইলে উক্ত কাজ সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে প্রকাশিত আদেশ অনুসারে সম্পন্ন করা হইবে৷

অসুবিধা দূরীকরণ

৭২৷ এই আইনের বিধানাবলী কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে উক্ত বিধানে কোন অস্পষ্টতার কারণে অসুবিধা দেখা দিলে সরকার উক্ত অসুবিধা দূরিকরণার্থে সরকারী গেজেটে প্রকাশিত আদেশ দ্বারা প্রয়োজনীয় যে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবে৷ 

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা