ককবরক সঙ্গীত অতীত ও ভবিষ্যৎ
1266
ককবরক সঙ্গীত অতীত ও ভবিষ্যৎ
হারুংলে হাকৗচাং কায়ৗই রীজাগৗই
বুবার বাবৗরাই চাখা
বৗথই মৗখারা চাখা
হাইলে কীরাইয়া তখা থাইচুমু
হাদুক দুক কলক কায়ৗই রৗখৗলাই
বুবারলে সিকলা কানখামু
বৗথাই চৗরায়রগ থৗঙখামু
খব’ খচাখা ফুতাসা
সুব’ সুবজাখা তাংরাইসা
খাজুঅ ফানতকয়া তেই উ ইসা
হাইবসে মৗছংগৗই তংখামু
নকব’ নক বাইচিং
হুকব’ হুক বাইচিং
খানিলে বিসিংব খা বাইচিংয়াদে
হাইলে কৗরাইয়া তখা থাইচুমু।
ভাবানুবাদ :
অনুচ্চ টিলায় গাছ লাগানোয় ফুলের পাপড়িগুলো ঝরে গেছে আর ফলগুলো বানরে খেয়ে ফেলেছে। তবে মাকাল ফল ঝরে পড়েনি।
যদি পথের ধারে গাছ লাগানো হত তবে নবীনা সে ফুল স্পর্শ করত, আর ফলগুলো নিয়ে শিশুরা খেলা করত।
সাজি ভরা ফুল তোলা হয়েছে, তা দিয়ে একছড়া মালাও গাথা হয়েছে যা যোড়শীর খোঁপা বেস্টন করে শোভা পাচ্ছে। বাড়ী যেমন গ্রামের শেষ প্রান্তে তেমনি জুমও শেষ প্রান্তে।
আর মনেরও শেষ চাওয়া। এক ফালি জুম ক্ষেতে যোড়শী আগাছা বাছসে আর দয়িতকে উদ্দেশ্য করে গীত এই গান বাতাসে তরঙ্গায়িত হচ্ছে।
আশপাশের গাছ গাছালি যদি কথা বলতে পারত তবে তারা কী উত্তর দিত। খুমপুই এর গল্পে বর্ণিত অজগররূপী মানুষের মতোই কোন রূপ ধারণ করে কোন দয়িত পাশে এসে দাড়াত কী না কে জানে!
আমাদের ককবরক সঙ্গীতের ফুল এই ধরনেরই বনের ধারে। সুশীতল অনুচ্চ পাহাড়ী বনানীতে ফুটে, সৌরভ ছড়ায়। কেউ দেখেনা। কেউ জানেনা। আপন আনন্দেই উদ্বেলিত।
বিশ্বের বিভিন্ন জাতির গান শুনেছি, আমাদের জাদুনী গানের স্বাদ, গন্ধই আলাদা। কারোর গড়া বা তৈরী নয়। বনের ফুল যেমনি আপনি ফুটে তেমনি তার সুরের ধারাও।
প্রাচীন ককবরক গান বিশ্বের অন্যান্য গানের মতো নয়। এ প্রসঙ্গে প্রাচীন ককবরক গান বলতে জাদুনী গানকে বোঝায়। জাদুনী গানের নানা নাম রয়েছে।
বর্তমান সময়ে এটাকে পুনরায় স্মরণে আনা প্রয়োজন বলে মনে করি। জাদুনী গানকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা:- ১) কাজের গান ২) দোলনায় ঘুম পারানোর গান। ৩) হৃদয় বিদারক গান। ৪) রেসের খাগড়া অথবা এসের খাগড়া এবং ৫) মামিতার গান।
কাজের সঙ্গীত আবার নানা শাখা প্রশাখায় বিভক্ত। জানা মতে এগুলো হল, উত্তর রাগিনি, দক্ষিনি রাগিনি, দাসপা রাগিনি, দুনা রাগিনি, বেরি রাগিনি প্রভৃতি। মন দিয়ে না শুনলে উল্লিখিত রাগিনিগুলোকে একই ধাচের বলে মনে হবে। আর গভীর মনোযোগে শুনলে এর পার্থক্য বোঝা যায়।
আমাদেব সারিন্দা, সুমুই (বাঁশি) চংপ্রেং গুলো হল স্বর চয়নের বাদ্যযন্ত্র, আর খাম, ওয়াখপ ইত্যাদি হল ধীর বা দ্রুত তালে তাল মিলিয়ে বাজার বাদ্যযন্ত্র।
এছাড়া দাংদু বলে একটি বাদ্য যন্ত্র রয়েছে যা অতীতে যুবতীরা বাজাত। স্বর চয়ন করে বা ধীর অথবা দ্রুত তালে তাল মিলিয়েও এটাকে বাজানো যায়।
আমাদের বাদ্যযন্ত্র গুলোর মধ্যে মুরি নামে একটি বাদ্যযন্ত্রও ছিল, তবে ককবরক ভাষীরা অনেক আগেই এটাকে হারিয়ে ফেলেছে। সারিন্দা মূলত রাগিনি অনুসরন করে বাজানো হয়।
এছাড়াও এ..হু.হু. রবে হর্ষোল্লাস, বন্য পশুপাখীর ডাক, মোরগের ডাক, এই বাদ্যযন্ত্রে হুবহু বাজানো যায়।
শিকারে লব্দ বস্তুর বন্টন, যৌবনের জন্য, পাহাড়ে চড়া, চড়কা কাটা, দোলনায় শিশুকে ঘুমপাড়ানো ইত্যাদি চংপ্রেং বাদ্যযন্ত্রে বাজানো হয়ে থাকে। তবে ঘুম পাড়ানোর গীত আর চংপ্রেং-এর ঘুম পাড়ানোর জন্য তোলা সুর এক রকম নয়।
আমাদের ককবরক সঙ্গীতের রীতিতে আরো একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বহির্দেশের ”ব্যালাড” সঙ্গীতের মতো গানের মাধ্যমে একটি কাহিনী বিবৃত হয়।
গানের মাধ্যমে কাহিনীর অবতারনায় শ্রোতারা কখনো হাসিতে ফেটে পড়েন আবার কখনো বিষাদে কেঁদে ফেলেন।
গানের মাধ্যমে বিবৃত কাহিনীগুলো শেষ হতে কখনো কখনো সপ্তাহ লেগে যেত বলে অনেকে বলে থাকেন।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে সিকাম (কুকি) রাজ্যের উচু পাহাড় আরাহন, স্বর্গের ফুল পারিজাতসম খেরেংবার ফুল চয়ন, মামলা মৗসা চামানি অর্থাৎ বাঘের মুখে নিহত ভালবাসা।
কাটা বহুল বেত গাছ কাটা ইত্যাদি হৃদয় বিদারক কাহিনী। দোলনায় ঘুম পাড়ানোর গানেও ককবরক ভাষী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন সুর পরিলক্ষিত হয়।
কলয় ও দাসপা, দক্ষিণি ও দাসপার মধ্যে সুরের কোন মিল নেই। সেরূপ মামিতাও বিভিন্ন গোষ্টীতে ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
দুঃখের বিষয় এই বিভিন্নতা ও সঙ্গীত পারদর্শীদের ক্রমশ হারিয়ে যাওয়া এবং এগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে কেউ এগিয়ে আসছেনা।
ত্রিপুরা সরকার অথবা এডিসি প্রশাসনও সেদিকে নজর দিচ্ছেনা। আমাদের সত্ত্বাকে ধরে রাখতে হলে একাজে অতিসত্বর হাত দেওয়া দরকার।
এবার আসা যাক এখনকার আধুনিক ককবরক গানের বিষয়ে। অতীতে খুশীকৃষ্ণ ত্রিপুরা বাংলার ‘ভক্তিগীতি’র অনুসরনে ককবরক গানকে দিশায় তুলে এনেছেন।
কিংবদন্তী মতে তিনি নাকি তিনশতাধিক এধরনের ককবরক গান রচনা করে গেছেন। পরবর্তী কালে যাত্রাপালার জন্যও অনেক ককবরক গান রচিত হয়েছে।
এই গানগুলোকে সন্ধান করে পুনঃপ্রকাশ করা প্রয়োজন। এরপর আসে জনশিক্ষা আন্দোলনের জন্য রচিত ও গীত গানগুলো।
সংগঠনকে শক্তি শালী করার উদ্দেশ্যে পাড়ায় পাড়ায় প্রচারের জন্য বাংলা গানের পাশাপাশি এই ককবরক গানগুলো রচিত হয়েছিল। নাবালকত্ব পেরিয়ে সাবালকত্বে পদার্পণ করে আমি বড়জনদের মুখে ওই গানগুলো শুনেছি। দু’একটি গান এখনো স্মরণে আছে।
“হু হু কিষাণ ভাইরগ, হু হু মজুর ভাইরগ, অ ভাইরগ এক উংবাইদি, এক উংবাইদি এক” অর্থাৎ ওরে কিষাণ ভাইয়েরা, ওরে মজুর ভাইয়েরা, তোমরা সবাই এক হও।
আর এই গান শুনেই ধরা নেওয়া যায় ওই সময় থেকে ককবরকে বাংলা শব্দের প্রবেশের সুত্রপাত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও অনেক ককবরক গান রচিত হয়েছে। যেমন-”ভোটনি দিন, ভোটনি দিন, তিনিলে চিনি ভোটনি দিন”অর্থাৎ ভোটের দিন, ভোটের দিন, আজ আমাদের ভোটের দিন ইত্যাদি।
এগুলো ছাড়াও অনেকে আপন খেয়ালে ককবরক আধুনিক গান রচনা করেছেন। স্বর্গত মহেন্দ্র দেববর্মাও এধরণের অনেক গান রচনা করেছেন।
রচিত গানগুলোর কোনটি হারিয়ে গেছে, আবার কোন কোনটি এখনো লোক মুখে গীত হচ্ছে। ককবরক গানে হিন্দুস্তানী ঘরানার সংযোজন তিনি প্রথমে ঘটিয়েছেন একথা বলা যেতে পারে।
অথচ তাঁর সন্তানেরা ককবরক ভাষা না জানার কারনে তাঁর রচিত অমূল্য গানগুলো ঘরের কোনায় খুতরুক বিসিংগ অর্থাৎ সরায় ঢাকা পাতিলে আবদ্ধ হয়ে রয়েছে।
যদিও তাঁর স্মরণে গঠিত কমিটির উদ্যোগে “মহেন্দ্র গীতি” নামে একটি অডিও ক্যাসেটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল কিন্তু ক্যাসেটের কণ্ঠশিল্পীরা সমধিক পরিচিত না হওয়ায় ক্যাসেটটি তেমন জনপ্রিয়তা লাভ করেনি।
মাঝে ককবরক আধুনিক গানের জগতে খরা চলছিল বলা যায়। যখন ককবরকভাষীদের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও আত্মসত্ত্বা বিকাশের শিকড় প্রসারিত করার চৈতন্যোদয়ের আলো দেখা দিল সেই শুভক্ষণে স্বৰ্গত গৌরমোহন দেববর্মার আবির্ভাব ককবরক আধুনিক গানের জগতে আলোড়নের সৃষ্টি হয়।
ওই সময়ে আমরা আরো অনেক কথা ও কণ্ঠ শিল্পীদের পেয়েছি। সম্মানিত কথাশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পী গনেশ দেববর্মার “অ জনিজং ফায়বাইদি চিনি সঙ”এই গানের জনপ্রিয়তা এখনো আমাকে বিস্মৃত করেনি।
স্মরণে আসে “পাসাখা, পাসাখা, পাসাখা, চিনি সাল” অর্থাৎ উঠেছে, উঠেছে, উঠেছে, আমাদের সূর্য এই গানটিও। ককবরক নতুন নামে নতুন আঙ্গিকে দীর্ঘ সরনি বেয়ে আজ আমাদের সামনে হাজির হয়েছে ঠিকই কিন্তু তার অতীতকেও আমাদের ফিরে তাকানো দরকার।
এখন পর্যন্ত ককবরক আধুনিক গান সুরের মাধ্যমে তার স্বকীয়তার স্ফোরন ঘটাতে পারেনি এখনো। একটি গান শুনলে গানটি সত্যিকারের ককবরক গান-ই-হয়েছে বলে দাবী করতে পারিনা।
কেননা এই সব গানগুলো অর্থহীন বাংলা বা হিন্দী ছায়াছবির গানের আদলে গীত যা মনকে একটুও নাড়া দেয়না। এমন গানের সংখ্যাই বেশী। মানুষের সংস্কৃতি মাখা গন্ধ আধুনিক ককবরক গানে এখনো অনুপস্থিত।
মাঝে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলগীতিকে ককবরকে অনুবাদ করে রবীন্দ্র সঙ্গীত ও নজরুল গীতি গাওয়া শুরু হয়েছিল। ককবরক ভাষীদের মধ্যে বাংলা জানেনা এমন লোক রয়েছেন ঠিকই কিন্তু বাংলা বলতে না পারলেও শোনলে বাংলা বুঝেনা এমন লোক খুব কমই। এই গানগুলোকে ককবরকে অনুবাদ করার পেছনে কোন ধরনের ভাবনা রয়েছে সেটা চিন্তা করা দরকার।
এক সময় বাংলার কীর্তন ও পল্লীগীতি আমাদের মাঝে প্রবেশ করেছিল। আর এখন গানে হিন্দী গানের সুর প্রবেশ করছে।
এই হিন্দী মাখা ককবরক গান শুনেই আমরা আনন্দে হাত তালি দিয়ে নেচে ওঠি আর বলতে থাকি – ককবরক অনেক উঁচ স্তরে পৌঁছে গেছে। যে গানে মাটির গন্ধ নেই, আমার সংস্কৃতির লেশমাত্র চিহ্ন নেই সেটা কী করে আমার গান হলো!
আমার বোধগম্য হচ্ছেনা। ককবরক ভাষীদের রক্তের সঙ্গে সঙ্গীত মিশে রয়েছে কথাটি সবাই বলে থাকেন। কথাটি অকাট্য সত্য, কারণ আমাদের জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি গান আর গান।
অথচ আমরা কী কারণে পেছনে পড়ে রয়েছি তার অনুসন্ধান করা দরকার। সেটা হলো আমাদের বদভ্যাস। এই বদভ্যাস হলো নিজেকে খাটো ও অপরকে উঁচুতে দেখা।
এই বদভ্যাসকে বর্জন না করে আত্মবিকাশ সম্ভব নয়। এছাড়াও রয়েছে সঠিক ভাবে নিজেকে গড়ে তোলার অলসতা।
প্রসঙ্গক্রমে এখানে আরো একটি কথার উল্লেখ করতে হয়। সেটা হল ককবরক গানের সুর চয়নের রীতি প্রসঙ্গ উত্থাপিত হলেই হিন্দুস্তানী রাগের উপস্থিতি দেখা দেয়।
কোনটি দুগারাগ, কোনটি বৃন্দাবনীসারঙ্গ, নয়তোবা কলাবতী, তিলঙ্গ এগুলোর সঙ্গে মিল রয়েছে বলে পন্ডিতরা বলে থাকেন। আমাদের বিজ্ঞজনেরাও তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে নাক উঁচু করে বসে থাকেন।
অথচ এটা কেউ ভেবে দেখেনা যে লোকসঙ্গীতই সকল গানের গর্ভধারিনী মাতা। লোকসঙ্গীতের
মাতৃজঠরেই ক্লাশিকেল গানের জন্ম। এজন্য ককবরক সঙ্গীতে অপর সংস্কৃতির সংশ্রব বর্জিত হয়ে আমাদের মাটির গন্ধ, পরিবেশের গন্ধ মাখা হওয়া দরকার।
কেননা মাটির সঙ্গে শিকড়ের সংযোগ না থাকলে শাখা প্রশাখায় পল্লবিত যত বৃহৎ গাছই হোক তাকে খাদ্যের অভাবে শুকিয়ে মরতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট রীতি মেনে গান শেখা দরকার।
আর গানের ভেতরেও মাটির গন্ধ খোঁজার কাজ নিরলস ভাবে করতে হবে। বিশ্বজুড়েই শিকড়ের অনুসন্ধান চলছে, অন্য জাতি গোষ্ঠীর লোকবাদ্য কতদূর এগিয়ে গেছে, তা অল্প কথায় বিবরন দেওয়া সম্ভব নয়।
অপর দিকে আমাদের লোকবাদ্য যন্ত্র সম্পর্কে কেউ তেমন ভাবে চিন্তা ভাবনা করছেনা, লোকবাদ্যযন্ত্র শিল্পী দু’একজন যারা এখনও জীবিত আছেন তাদেরকে ব্যবহার করে ভবিষ্যতের জন্য এই অমূল্য সম্পদকে সঞ্চিত করে রাখার বিষয়েও কেউ গায়ে মাখছেনা।
বাদ্যযন্ত্র চংপ্রেং-এর শিল্পী সম্প্রই দেববর্মা, সারিন্দার শিল্পী সন্তোষ দেববর্মা, ইন্দ্র দেববর্মা, বংশী বাদক রামপদ জমাতিয়া, বৈদ্য দেববর্মা ছাড়াও আরো কয়েকজন শিল্পী রয়েছেন, অথচ তাদের কাছ থেকে ওই সকল বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারের সম্যক ধারনা নিতে নবীনদের মধ্য থেকে কেউ এগিয়ে আসছেনা।
এটাই আমাদের সবচেয়ে ভয় ও চিন্তার কারন। লোকবাদ্যযন্ত্রের যে দশা তেমনি লোক সঙ্গীতেরও সেই একই দশা। জাদুনী তথা ককবরক লোকসঙ্গীত শিল্পী কৗলীয় দেববর্মা, এখনও জীবিত।
তার মতো জাদুনীর কথাশিল্পী ককবরক ভাষীদের মধ্যে বিরল। বিশুদ্ধ জাদুনী গানে যে কথা ও সুরের লহরী রয়েছে বর্তমান যুগের জাদুনীতে তার কোন মিল নেই।
তাছাড়া শব্দ চয়নেও এখন বিশুদ্ধ ককবরক শব্দ পাওয়া মুশকিল। তাই পুরোপুরি ভাবে বিলীন হয়ে যাওয়ার আগেই এগুলোকে সংগ্রহ করে রাখা দরকার। কিন্তু কে করবে একাজগুলো!
এখন ককবরকে নতুন নতুন গানের ক্যাসেট, অডিও ভিডিও সিডি প্রতিদিন একটি করে আত্মপ্রকাশ করছে। “লাংমানি হাদুক” ক্যাসেট বের হওয়ার পর থেকেই এধরনের ক্যাসেট বের হতে থাকে। যেমন সাজৗক, রাংচাক হানি দেস’, হুকবার, চামথৗয়বার, আরো অনেক নামের ক্যাসেট প্রকাশিত হয়েছে।
অথচ আগের ক্যাসেটের গান শুনে যেমন তৃপ্তি পাওয়া গেছে এখনকার নতুন নতুন ক্যাসেটের গান শুনে তেমন তৃপ্তি পাওয়া গেলনা। কী সুর চয়ন বা কী শব্দ চয়ন কোনটাতেই গভীরতা নেই।
এখানেই ভাবনা, আমরা কোন পথে হাঁটছি! ভবিষ্যৎ আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে উজ্জ্বল নাকি অন্ধকার, কে জানে!
ককবরক থেকে বাংলা অনুবাদঃ সুনীল দেববর্মা।
লেখকঃ বিকাশ রায় দেববর্মা, কবি, গীতিকার, সংগীত পরিচালক
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।