কাপ্তাই বাঁধ আমার ছােট বােনকে কেড়ে নিয়ে গেছে
685
আমার ছােটবেলার কথা
আমার নাম প্রতিমা দেওয়ান। কিন্তু সবাই আমাকে গণেশ মা নামে একনামে চিনে। তাই প্রতিমা দেওয়ান নামটা কখন যে হারিয়ে গেছে জানতেও পারলাম না। আমাদের বাবা যখন মারা যান তখন আমি অনেক ছােট।
বাবা না থাকলে কী হবে, মা শক্ত হাতে বাবার ফেলে যাওয়া সংসার সামলাতেন। তাই ভাত পানি কাপড় কোনােকিছু নিয়েই আমাদের চিন্তা করতে হতাে না। আমার মায়ের নাম জ্ঞানদা বালা দেওয়ান। আমার বাবা মা উভয়েই দেওয়ান পরিবারের সদস্য ছিলেন। মায়ের বাড়ি বুড়ি ঘাট এলাকায় আর ছিলেন লারমা গােজার দেওয়ান।
এখন ছােট ছেলেমেয়েদের যেরকম কষ্টকর পরিস্থিতি আমাদের সময়ে সেরকম ছিল না। ছােটবেলায় আমাদের কাজ ছিল শুধু খেলা আর খেলা। আমার মা কাজের লােকদের তদারকি করার জন্য প্রায় সময় বাড়ির বাইরে থাকতেন।
আমাদের প্রায় ১৫ জনের মতাে কাজের লােক ছিল শুধু ক্ষেত খামারের জন্য আর তারা সবাই ছিল বাঙালি। এখন আমরা সবাই বাঙালিকে ভয় পাই কিন্তু তখন তাদেরকে ভয় পাওয়ার কোন প্রশ্নই ছিল না। তারা সকলে আমাদের কথায় উঠতাে বসতাে কারণ আমরা তাদের মনিব ছিলাম।
কয়েকজন সানতাল ছিল কাজের জন্য। বাবা নাকি পাঁচ (৫) পরিবার সানতালকে ধম নালা থেকে এনেছিলেন। একজনের নাম মনে আছে মথুরা সানতাল। যেহেত বাড়ির বাইরে কাজ মা দেখাশুনা করতেন তাই বাড়ির ভেতরের কাজগুলো আমরাই দেখাশুনা করতাম।
আমার বাবার মুখ
বাবা আর কাকা বিরাজ মােহন দেওয়ান দেখতে একরকম ছিলেন । একটা স্মৃতি আজো মনে গেঁথে আছে। সেই স্মৃতি অবশ্য বেদনার। যাবার পর তাকে রঙিন কাগজ দিয়ে সুন্দর করে সাজানাে হয়েছিল যখন আগুন দেওয়া হলাে তখন কেবলই আমার মনে হচ্ছিল আহা কত সন্দর রঙিন কাগজগুলাে শুধু শুধু পুড়ে যাচ্ছে। এখন এই ঘটনা মনে পড়লে কষ্ট লাগে। বাবার জন্য কষ্ট না পেয়ে কেমন করে আমি শুধু রঙিন কাগজের কথা ভাবলাম!
কাপ্তাই বাঁধের পানি হবার আগেই আমরা খাগড়াছড়ি চলে আসি। এখন পৌরসভা অফিস যেখানে সেখানে খাগড়াছড়ি স্কুলের হেডমাস্টারের বাসা ছিল সেখানেই ছিলাম আমরা। এরপরেই তাে বাবু অনন্ত মাস্টাররা এসেছিলেন।
আমরা ছিলাম অনেক ভাইবােন। ৯ ভাইবােন। তার মধ্যে আমরা ছিলাম তিন (৩) বােন পিঠেপিঠি। আমি, দীপিকা আর সাধনা । আমাদের এই তিনবােনের মধ্যে ভালােবাসাটা ছিল তীব্র। কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারতাম না। এমনকি রাতের বেলা প্রয়ােজনে বাইরে গেলেও তিনজনেই একসাথে যেতাম। আর সারাক্ষণ গল্প করতাম। এখন তাে বােনদের মধ্যে এমন ভালােবাসা দেখি না।
আমাদের বাড়ি ছিল বিরাট মানে বিরাট। জায়গা-জমিও ছিল অনেক । আমার মনে আছে আমাদের কুশ্যাল মানে আখের ক্ষেত ছিল। দুটো গুড় বানানাের মেশিন দিয়ে আশ্বিন মাস থেকে আখ থেকে গুড় বানানাে হতাে ফাগুন চৈত্র মাস পর্যন্ত ।
এমনই আখ হতাে আমাদের। আহ! সেসব দিন। আমাদের যদিও অনেক জমিজমা ছিল তবুও আমরা মাজন ছিলাম না। আমি মাজন শব্দটা প্রথম এসে শুনেছি চেঙেই কূলে এসে। আমাদের ওখানে কেউ নিজেকে মাজন বলে পরিচয় দিত না। (হাসি)
আমাদের বাড়িতে পিনন খাদির কম চল ছিল। সবাই শাড়ি পরতাম। মনে আছে জেঠাবাবু কামিনী দেওয়ানের পুত্রবধুকে (বৌটি আবার আমার মামাতাে বোন অর্থাৎ মায়ের আপন ভাইয়ের মেয়ে) আনতে গিয়েছিলাম আমরা। মাও গেছে তার ভাইয়ের মেয়েকে ভাসুরের ছেলের জন্য বৌ করে আনতে। আমরা তখন আমার ছােট বােন সাধনা একেবারে দুধের শিশু। বড় বড় নৌকা করে ব্যান্ড পার্টি বাজিয়ে আমরা গেলাম বৌ অনতে। নৌকায় কতদিন লেগেছে আমার মনে নেই। তখন তাে আমরা খুব বােকা ছিলাম। বৌ যে কে তাও চিনতাম না। এখন তাে দুধের বাচ্ছাটাও চিনে বৌ কোনজন হতে পারে।
সাধনা মানে চিক্কবি ছােট কিন্তু হাটতে পারে। তাকে ২ টাকা দামে কেনা ছােট শাড়ি পরানাে হয়েছিল। নৌকা থেকে নামার পর বালু চরে কি আর সে শাড়ি পরে হাটতে পারে। এক পা হাটে তাে দুই পা পরে যায়। যাই হােক এভাবে আমরা মামার বাড়ি মানে বৌয়ের বাড়ি পৌছে গেলাম।
আমরা শুনেছি বৌ ভেতরের রুমে থাকে। আমার মামাদেরও বিরাট গুদাম বাড়ি, আমাদের বাড়ি থেকেও বড়। আমার তিন মামাই একসাথে থাকতেন তখন। সেখানে একটা রুম-এ বিয়েতে খাওয়ানাের জিনিসপত্র বিশেষ করে কলাপাতা রাখা হয়েছে । তাে আমরা ভাবলাম এই অন্ধকার রুমে বেী বসে আছে।
তাই আমি আর আমার বােনরাসহ লুকিয়ে লুকিয়ে সেই অন্ধকার রুমের দরজার ফাক দিয়ে দেখতে যাই আবার নিজেরা নিজেরা লজ্জা পেয়ে চলে আসি । আমরা ভেবেছি ঐ অন্ধকার ঘরেই বৌ বসে আছে। কিন্তু কোথায় বৌ? এদিকে বৌ বসে আছে গুদাম বাড়ির বাইরে আলাদা একটা আলগ ঘরে তার বন্ধুদের নিয়ে। আর আমরা ভেবেছিলাম সেই অন্ধকার রুমে রাখা ‘পাতার বােনা’কে বৌ । (হাসি)
তাে বৌকে নিয়ে ফেরার পথে হাবুক্কে নামক কোনাে জায়গায় এক মাজনের বাড়িতে আমরা সকলে রাত কাটালাম। সে ব্যক্তি এমন মাজন ছিলেন যে আমাদের ৪ নৌকার বর যাত্রীদের দুবেলা খাওয়াতে উনার কোনাে কষ্ট হয়নি।
পিনন বনাম শাড়ি
আমি আগেই বলেছি আমাদের বাড়িতে পিননের প্রচলন ছিল কম। মা সবসময় শাড়ি পরতেন। মাঝে সাঝে বাড়িতে পিনন পরলেও বাড়ির বাইরে পিনন পরতেন না একেবারেই। অবশ্য তখনতাে এতাে বেশি বাড়ির বাইরে মানে দূরে যাওয়ার সুযােগ ছিল না।
আমাদের বাড়িতে বৌ আনা হতাে শাড়ি দিয়ে । পিনন দিয়ে বৌ আনতে দেখিনি আমি । বৌয়ের জন্য শাড়ি, মাথায় ঘােমটা দেওয়ার জন্য সাইস কাপর আর সােনা দেয়া হতাে গলায় কানে হাতে এমনকি পায়ের নুপুর ছিল সোনার। তখনকার সময়ে রুপার সের/কেজি ছিল ৫ টাকা ।
আমার ভাইয়ের বৌ তখন খুব ছোট যখন সে বৌ হয়ে আমাদের বাড়িতে এসেছে। এতাে ছােট যে আমার বাবার মুখের সামনেই দোলনায় দুলতাে। হুলু মাকে বৌ করে আনার সময় বাড়ি থেকে প্রতিটি শাড়ি ২২ টাকা করে দুটো শাড়ি কিনে দেওয়া হয় একটা আমার জন্য আরেকটা বৌয়ের জন্য। আমারটা গােলাপি রং আরেকটা বেগুনি কালারের। সেময়ে শাড়ির দাম হাত হিসাব করে বিক্রি করা হতাে । ১০ হাত শাড়ির ১০ টাকা দাম। আমাদের সময়ে আমরা আমাদের মতাে স্বাধীন ছিলাম।
কৈশোর বয়সে পিনন পরে বুকে খাদি দিতে আমাদের লজ্জা লাগতো। খাদির মতো করে গামছা দিতাম আমরা। অবশ্য সে গামছাটা আমরা নিজেরাই নয় মাঝে মাঝে শােনা যেতাে ফুলানা ঝিবাে হুত্তমো হইয়ে হিজিনি। তারে বেলে এবারত বিঝু’ত হাল পালনিত হাদি বানি দিবাব’ অর্থাৎ ‘অমুকের মেয়ে কত হয়েছে কে জানে! শােনা যাচ্ছে তাকে এই বিষ্ণুর হাল-পালনির সময়ে খাদি পরাবে।
আমাদের সময়ে খাদি দেওয়া মানে মেয়েটি কৈশাের থেকে নারীতে পা দিয়েছে। সেসময় কিন্তু এই নিয়ে আনন্দ উৎসব হতাে। এখন অবশ্য ছােট থেকে বড় সবাই একই ধরণের পিনন খাদি পরছে। আর নারীতে পরিণত হওয়া সময়টাকে আমাদের সময়ের মতাে কেউ উৎসব করছে না।
তাে বলতেই হয় আমাদের সেসময়টা ছিল উদ্বেগহীন দুঃশ্চিন্তামুক্ত সময়। যেখানে যেভাবে থাকি না কেন কোন ভয় ছিল না- না বাঙালির ভয়, না কোনাে ছেলে বা পরুষের হাতে নির্যাতিত হওয়ার ভয়। এখনতাে সবাইকে এই ভয় কুড়ে কুড়ে খায়। আমাদের সময়ে গ্রামে কাউকে বৌ দেখতে আসলে আমরা সকলে ছেলেমেয়েসহ গল্প দিতাম এমনকি মাঝে মাঝে একটা বড় রুমে একসাথে পাশাপাশি ঘুমাতাম ভাইবােনের মতাে। কাউকে অপমান করার চিন্তা কেউ করতাে না।
কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণ
কাপ্তাই বাঁধ হওয়ার আগেই আমার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ে হলেও বােনদের প্রতি ভালােবাসা ছিল সবসময়। একসময় সাধনা দীপিকারও বিয়ে হয়ে যায়। আমাদের ভাবতে ভালাে লাগতাে যে আমরা বােনেরা সকলেই ভালাে জায়গায় আছি। কাপ্তাই বাঁধ হওয়ার পর আমাদের এই ভালাে থাকায় আগুন লাগে।
আমাদের সেই বাড়ির ভিটে ডুবে গেলে ভাইরা চলে আসে খাগড়াছড়িতে। দীপিকারাও চলে আসে কিন্তু থাকলাে না। তার স্বামী ঠিক করলাে ভারতে চলে যাবে। আমার অন্য দুজন ভাইয়ের সাথে মিলে তারা চলে গেল বর-পরং-এ। সেই যে গেল আর কোনাে খবর নেই তাদের। নিজ মন কাঁদে। কেমন আছে আদৌ বেঁচে আছে কিনা এটা নিয়ে ভাবতে কষ্ট হয়।
অনেক বছর পর আমার ভাই অবশেষে দেশে আসতে পারলেন তখনই জানলাম তারা সকলেই নেফাতে আছেন। আমার তাে ভাইদের চাইতে বােনের জন্য মন কাঁদে। বােন দীপিক দেখার জন্য সবসময় মন উতলা হয়ে থাকে।
অনেক বছর পর দীপিকা দেশে এলাে আমাদের দেখতে। তার তিন মেয়ে মীনাক্ষী, পিনাক্ষী আর রাণী । বড় মেয়ের জন্য তাে এখানেই নেফায় যাওয়ার আগে। সেখানে বাকি দুই মেয়ের জন্য হয়। দীপিকা, আমার ছােট বােনের জন্য আমার খুব মায়া হয়। বেচারা জীবনে কোথাও ঠিকমতাে থিতু হতে পারলাে না।
সেই কথা পরে বলছি। তাে ১৯৬৪ সালের পর ১৯৮০ সালের কাছাকাছি আমাদের আবার দেখা হলাে। শুনলাম বসে বসে তাদের দুঃখের কাহিনি। একমাসের মতাে এখানে থেকে আবার চলে গেল নেফা বর্তমান অরুণাচলে । আবার কি দেখা হবে আমাদের! কিন্তু দেখা হয়ে গেল।
তারও কয়েক বছর পরে আমার বােন জানালাে যে সে বুদ্ধ গয়া তীর্থের জন্য আসছে। আমি যেন পারলে যায়। তাহলে তীর্থও করা হবে আবার দুই বােনের দেখাও হবে। আমি শুনে এক পায়ে খাড়া । যেতেই হবে। তীর্থ ফির্থ কিছুই না আমি যাবাে আমার বােনের সাথে দেখা করতে। এদিকে যাবার সময়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আমার মেয়েরা কিছুতেই যেতে দিবে না আর আমি যাবােই।
গাড়িতে উঠলাম। আমার মেয়েরা আমার নাতি রাজনকে ফোন করে বললাে কুমিল্লাতে যেন আমাকে আটকায়। এভাবে আমি ঢাকায় পৌছলাম। এইবার মেয়েরা আমার আরেক বােন সাধনার মেয়েদের বললাে আমাকে ঢাকায় আটকাতে। আমার তখন অনেক জ্বর। কিন্তু কেউ আমাকে আটকাতে পারলাে না।
আমার মন তখন আমার বােনের জন্য উতলা হয়ে আছে। আমি শরীরে জ্বর নিয়েই ভারতে বুদ্ধ গয়ায় পৌছলাম দীপিকাকে দেখবাে বলে। জ্বরের কারণে আমার কোনাে তীর্থ করা হলাে না, কিন্তু বােনের সাথে দেখা হলাে। ৩/৪ দিন একসাথে হােটেলে থাকলাম তারপর সে তাদের দলের সাথে তীর্থ করতে চলে গেল।
আমি ফিরে এলাম দেশে। দীপিকা শেষ বার এসেছিল ২০১৩ সালে। কিন্তু একদিন থেকেই মনের দুঃখে তাকে চলে যেতে হয়। এইতাে গত বছর সে মারা যায়।
কাপ্তাই বাঁধের কারণে আমাদের শত বছরের বাড়ি জায়গা সব পানির তলে ডুবে আছে। গ্রীষ্মকালে নাকি মাঝে মাঝে আমাদের ভিটা মাথা তুলে থাকে। আমার তিন তিনটা ভাইবােনকে দেশান্তরী হতে হলাে ।
শুধু দেশান্তরী না একেবারে নিঃস্ব মানুষের মতাে জীবনটা কাটাতে হলাে। অথচ আমাদের কি ছিল না! মেঝাে ভাই আমিয় কুমার দেওয়ানের সাথে আর আমাদের কারাের দেখা হলাে না। সে মারা গেছে অনেক আগে। বড় ভাই শিশির দা একবার এসেছিল। কিন্তু মেঝােভাই একবা বারও আসতে পারেনি।
এমনকি তার স্ত্রী ছেলেমেয়ের সাথেও আমাদের দেখা। এসব কিছু একেবারে স্বপ্নের মতাে লাগে। এইতাে কয়েক বছর আগের কথা আমি একবার অরুণাচলের চাকমাদের নিয়ে করা একটা ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম।
হঠাৎ একজনকে খুব চেনা মনে হলাে। মনে হলাে এটা আমাদের আত্নীয় না হয়ে পারে না। পরে জানলাম সে আমার ভাইয়ের ছেলে অরিন্দম। আমাদের মুখোমুখি কখনাে দেখা হয়নি। হবেও না আর।
এই সেদিন অরিন্দম মারা গেছে। আমার বােন দীপিকাকে নিয়ে আমার অনেক দুঃখ। প্রথম বার সে যখন এখানে এসেছিল তখন তার ছােট মেয়ে রানী সন্তান প্রসবের সময় মারা যায়। রানীর মেয়েটা এখন পিনাক্ষীর কাছে থাকে। শেষবার দীপি আসলো ২০১৩ সালে। মাত্র ১ দিন আগে সে আমার বাড়িতে এসেছে তার পরদিন আমার ছেলে গণেশ হঠাৎ করে মারা গেল।
দীপিকাকে এই ঘটনা ভীষণ শােকগ্রস্ত করে ফেলে বলে আমি পাজারা রাক্ষুসী হয়েছি। আর একদিনও না থেকে সে মিজোরামে তার বড় মেয়ের কাছে চলে যায়। এইতাে শুনলাম গতবছর ২০১৬ সালে সেপ্টেম্বরে আমার ছােটবােন দীপিকা মারা গেছে। আমার ছােটবােন আমার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল।
তাই তাকে নিয়ে আমার দুঃখের শেষ নেই। কোথাও পুরােদমে স্থিতি হতে পারলাে না। কাপ্তাই বাঁধ তাকে একেবারে ঠিকানাহীন করে ছেড়েছে। দেশ ছাড়ার পর নেফাতে ছিল তার ঠিকানা। পরে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। বড় মেয়ে মিজোরামের চাকমা ডিস্ট্রিক কাউন্সিলে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছে ।
মেঝাে মেয়ে আসামে। আজ এখানে কাল ওখানে করতে করতে আমার বােনটার জীবন শেষ হয়ে গেল। হায় কাপ্তাই বাঁধ । পানিযে এতাে ভয়ংকর হতে পারে এই বাঁধ না হলে বুঝতেই পারতাম না। আমাদের সােনার পরিবার এই বাঁধের পানিতেই ডুবে শেষ হয়ে গেল।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ : ২০১৬ সালের দিকে। তিনি বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ২০১৭
লেখকঃ প্রতিমা দেওয়ান, পজিম নারাঙহিয়া, খাগড়াছড়ি।
তথ্যসুত্রঃ “কাপ্তাই বাঁধ: বরপরং – ডুবুরীদের আত্মকথন” – সমারী চাকমা।
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।