খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ কার্যপ্রণালী বিধিমালা, ১৯৮৯
543
বাংলাদেশ গেজেট
অতিরিক্ত সংখ্যা
কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত
সােমবার, নভেম্বর ১৩, ১৯৮৯
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়
স্থানীয় সরকার বিভাগ
শাখা-প্রজেই-৩
প্রজ্ঞাপন
ঢাকা, ২৮ শে কার্তিক, ১৩৯৬/১২ই নভেম্বর, ১৯৮৯
নং এস, আর, ও ৩৮২-আইন/৮৯/শা-প্রজেই-৩/১আর-১১/৮৯/২৫৪-খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার দমন আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২০ নং আইন) এর ধারা ৬৮তে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার নিম্নরূপ বিধিমালা প্রণয়ন করিলেন, যথাঃ-
১। সংক্ষিপ্ত শিরনামা। – এই বিধিমালা খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ কার্যপ্রণালী বিধিমালা, ১৯৮৯ নামে অভিহিত হইবে।
২। সংজ্ঞা। – বিষয় ও প্রসংগের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে এই বিধিমালায়,
(ক) “আইন” অর্থ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২০ নং আইন);
(খ) “পরিষদ” অর্থ খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ;
(গ) এই বিধিমালায় ব্যবহৃত অন্যান্য শব্দ এবং অভিব্যক্তিসমূহ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ আইন, ১৯৮৯ (১৯৮৯ সনের ২০নং আইন) এর ২ ধারায় যে অর্থ বুঝান হইয়াছে সেই একই অর্থ বহন করিবে।।
৩। পরিষদের সভা। – আইনের ৬৯ ধারার বিধান অনুযায়ী পরিষদ কর্তৃক প্রণীত প্রবিধান অনুযায়ী পরিষদের সকল কার্যাদি ইহার সাধারণ অথবা বিশেষ সভায় নিষ্পন্ন হইবে ।
৪। পরিষদ কর্তৃক সভায় করণীয় কার্যাবলী । – নিম্নে বর্ণিত কার্যাবলী সিদ্ধান্ত এবং নিষ্পত্তির জন্য পরিষদের সভায় উপস্থাপন করিতে হইবে, যথাঃ-
(ক) কর, রেইট, টোল এবং ফিস ধার্যকরণ সংক্রান্ত সকল প্রস্তাব;
(খ) বার্ষিক বাজেট ও আর্থিক বিবরণী;
গ) সংশােধিত বাজেট;
(ঘ) পরিষদের তহবিল হইতে ব্যয় নির্বাহের অধিকার অর্পণ সংক্রান্ত সকল প্রস্তাব;
(ঙ) চলতি বাজেটে অন্তর্ভুক্ত নয় এমন সব ব্যয় নির্বাহের প্রস্তাব;
(চ) আইনের প্রথম তফসিলে বর্ণিত উন্নয়নমূলক সকল প্রকার প্রস্তাব এবং প্রকল্পসমূহ;
(ছ) পরিষদের বিভিন্ন প্রকার কার্য সম্পাদনের চুক্তি নিয়মিতকরণ ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিরূপণ;
(জ) পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়নযােগ্য পরিকল্পনাসমূহ এবং ইহাদের প্রাক্কলন; এবং
(ঝ) জনস্বার্থ ও নীতি সম্পর্কিত অত্যাবশ্যকীয় (vital) বিষয়াদি।
৫। পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত কমিটি কর্তৃক করণীয় বিষয়াদি। – (১) বিধি ৬ এ বর্ণিত বিষয়াদি ব্যতীত অন্যান্য সকল কার্যাদি পরিষদের সভায় অথবা পরিষদ কর্তৃক আইনের ২৭ ধারায় নিযুক্ত কমিটির সভায় সম্পাদিত হইবে।
(২) পরিষদ কর্তৃক নিযুক্ত কমিটিকে পরিষদ যে সকল কার্যাদি সম্পাদনের জন্য প্রদান করিবে, কমিটি সেই সকল কার্যাদি পরিষদ কর্তৃক নির্দেশিত পদ্ধতিতে এবং পরিধির মধ্যে সম্পাদন করিবে।
৬। চেয়ারম্যান যে সমস্ত কার্যাদি নিম্পন্ন করিবেন। –
(১) চেয়ারম্যান পরিষদের দৈনন্দিন কার্য পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে দায়ী থাকিবেন।।
(২) চেয়ারম্যান পরিষদের নিম্নোক্ত কার্যাদি সম্পন্ন করিবেনঃ
(ক) পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন;
(খ) পরিষদ কর্তৃক নিয়ােগ করা যাইবে এইরূপ সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়ােগ এবং এইরূপ নিয়ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ;
(গ) কর, রেইট, টোল, ফিস এবং অন্যান্য বকেয়াসহ প্রাপ্য আদায়;
(ঘ) পরিষদ কর্তৃক সকল প্রাপ্তি গ্রহণ;
(ঙ) অনুমােদিত বাজেট বরাদ্দ মােতাবেক পরিষদের নির্ধারিত অংক পর্যন্ত ব্যয় করা;
(চ) পরিষদের সকল প্রকার চুক্তি সম্পাদন করা;
(ছ) পরিষদের পক্ষে সকল প্রকার পত্র বিনিময় করা;
(জ) পরিষদের পক্ষে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করা;
(ঝ) সকল প্রকার লাইসেন্স, পারমিট মঞ্জুর ও প্রদান করা;
(এ) আইনের অধীনে সংগঠিত অভিযােগের ব্যাপারে অভিযােগ দায়েরের ব্যবস্থা করা;
(ট) পরিষদের পক্ষে এবং বিপক্ষে মামলা মােকদ্দমা রুজু এবং পরিচালনার ব্যবস্থা করা;
(ঠ) আইনের অধীনে অপরাধসমূহের আপােষ-নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা; এবং
(ড) এমন সকল কর্তব্য ও দায়িত্ব যাহা বিধিতে বর্ণিত হয় নাই এবং সরকার যে সমস্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য লিখিতভাবে চেয়ারম্যানকে নির্দেশ প্রদান করিবেন, সেই সকল কার্যাদি।
৭। কোন কর্মকর্তা কর্তৃক সম্পাদনীয় কার্যাদি। – এই বিধিমালার বিধি ৬ এ বর্ণিত কার্যাবলীর মধ্যে যে কোন কাজ। চেয়ারম্যান লিখিতভাবে আদেশ দ্বারা কোন কর্মকর্তাকে সম্পাদনের জন্য দায়িত্ব অর্পণ করিতে পারিবেন; এবং এইরূপ আদেশ দ্বারা কার্য সম্পাদনের দায়িত্ব অর্পণ করা হইলে উক্ত আদেশে যে ভাবে যতটুকু কাজ সম্পাদনের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হইবে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সেইভাবে এবং ততটুকু সীমার মধ্যে কাজ সম্পাদন করিবেন ।
৮। নির্বাহী ক্ষমতার ব্যবহার। –
(১) আইনে এবং বিধিতে ভিন্নরূপ কোন বিধান না থাকিলে পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা চেয়ারম্যানের উপর ন্যস্ত থাকিবে ; এবং চেয়ারম্যান আইন এবং বিধি অনুযায়ী পরিষদের সকল প্রয়ােজনীয় কার্য নির্বাহের স্বার্থে উক্ত ক্ষমতা ব্যবহার করিবেন।
(২) পরিষদের নির্বাহী ক্ষমতা স্বয়ং চেয়ারম্যান কর্তৃক অথবা তাহার নিকট হইতে লিখিত আদেশ দ্বারা ক্ষম অন্য কোন ব্যক্তির মাধ্যমে ব্যবহৃত হইবে; এবং এইরূপ আদেশে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে যতটুকু পরিমাণ ক্ষমতা প্রয়ােগের এখতিয়ার প্রদান করা হইবে, ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ততটুকু পরিমাণ নির্বাহী ক্ষমতা প্রয়ােগ করিবেন ।
ব্যাখ্যাঃ —উপ-বিধি (২) এ “ব্যক্তি” অর্থে পরিষদের কোন কর্মকর্তা এবং সদস্যকে বুঝাইবে।
৯। পরিষদের আদেশ বা নির্দেশ। – পরিষদের প্রত্যেক আদেশই পরিষদের নামে, যথা—“পরিষদের আদেশক্রমে প্রকাশ করিতে হইবে এবং এইরূপ প্রতিটি আদেশে চেয়ারম্যান অথবা পরিষদ কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা স্বাক্ষর করিবেন ।
১০। পরিষদের তহবিল পরিচালনা। – পরিষদের চেয়ারম্যান পরিষদের তহবিল পরিচালনা করিবেন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী থাকিবেন।।
১১। পরিষদের সীলমােহর। –
(১) পরিষদের ব্যবহারের জন্য পিতল অথবা রাবারের তৈরী একটি গােল সীল থাকিবে এবং উহাতে জেলার নাম এবং পরিষদের নাম থাকিবে।
(২) পরিষদের সীল পরিষদের চেয়ারম্যানের অথবা চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত আদেশবলে পরিষদের যে কোন কর্মকর্তার হেফাজতে থাকিবে ।
১২। নথি পত্র হেফাজত ও সংরক্ষণ। –
(১) পরিষদের হিসাব সংরক্ষণের সংগে জড়িত সমস্ত নথি পত্রের হেফাজত ও সংরক্ষণের জন্য চেয়ারম্যান দায়ী থাকিবেন ।
(২) পরিষদের অধীন স্ব স্ব বিভাগীয় কর্মকর্তা তাহার বিভাগের সকল নথি পত্রের হেফাজত ও সংরক্ষণের জন্য দায়ী থাকিবেন।
১৩। পরিষদ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুলিপি প্রেরণ । – পরিষদ কর্তৃক সভার কার্যবিবরণী এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবার চৌদ্দ দিনের মধ্যে অনুলিপি সরকারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে ।
১৪। রহিতকরণ। – খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদের ক্ষেত্রে Local Councils Business Rules, ১৯৬৩ এর প্রয়ােগ এতদ্বারা রহিত করা হইল।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে
মােহাম্মদ আবু হেনা
সচিব।
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।