ত্রিপুরা রাজবংশ সম্বন্ধীয় যে লেখাটি বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল
1353
লেখাটি ছিল ‘মুকুট’ নামের একটি নাটিকা। এটি আসলে নোবেল পুরস্কার প্রাপ্ত (সর্বপ্রথম বাঙ্গালি ও এশীয়) বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ঐতিহাসিক নাটক, যা ১৯০৮ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
এই নাটককে সংক্ষিপ্ত আকারে সাজিয়ে ‘নাটিকা’ রূপ দিয়ে ৭ম শ্রেণীর “সপ্তবর্ণা” নামক পাঠ্যপুস্তকে (বাংলা ১ম পত্র) অন্তর্ভুক্ত করা ছিল।
সিলেবাস অনুসারে ‘মুকুট’ নাটিকাটি ছিল অবশ্যই পাঠ্য। কাজেই ধরে নেওয়া যায় যে, সারা বাংলাদেশে ৭ম শ্রেণীতে পড়ুয়া বাঙ্গালি-অবাঙ্গালি শিক্ষার্থী সকলেই সেই ‘মুকুট’ নাটিকাটি পড়েছিল। সেই নাটিকা থেকে সাময়িক ও বার্ষিক পরীক্ষায় অবশ্যই প্রশ্ন থাকতো।
কাজেই নম্বর পাওয়ার জন্য হলেও নাটিকাটির প্রশ্ন-উত্তরে সকল শিক্ষার্থীরা একবার হলেও চোখ বুলিয়েছিল বলে ধরে নেওয়া যায়। এমনকি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও সেই ‘মুকুট’ নাটিকাটি পড়েছেন, পড়িয়েছেন কিংবা চোখ বুলিয়েছেন বলেও ধরে নেওয়া যায়।
কাজেই, ত্রিপুরাদের যে একটা স্বাধীন রাজ্য ছিল, সেবিষয়টি বাংলাদেশের জনগণ অন্তত ‘মুকুট’ নাটিকাটির মাধ্যমে কিছুটা হলেও অবগত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কাজেই, এই নাটিকাটি বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত করার পেছনে যাদের অবদান ছিল, তাঁদের প্রতি আমার চির শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।
তবে, দুঃখের বিষয় হচ্ছে, বর্তমান ৭ম শ্রেণীর বাংলা বইয়ে ‘মুকুট’ নাটিকাটি খুঁজে পাওয়া যায় না। সরাসরি যদি বলি, তাহলে বলতে হয়, নাটিকাটি বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
ঠিক কবে থেকে নাটিকাটি বাদ দেওয়া হল, এবিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য পাওয়া না গেলেও এটা নিশ্চিত যে, নাটিকাটি বাদ দেওয়ার পেছনে অবশ্যই কোন না কোন কারণ আছে। হতে পারে কারণটা এমনঃ-
নাটিকাটি মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের এক ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছিল, যার মূল উপজীব্য বিষয় ছিল “মহারাজা অমর মাণিক্যের শাসনামলে (১৫৭৭ খ্রিঃ – ১৫৮৬ খ্রিঃ) ত্রিপুরা রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকার নিয়ে তিন ভাইয়ের মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্ব”। নাটিকাটির শেষাংশে বলা ছিল-
“ইশা খাঁ বলিলেন, “তবে থাক। এ মুকুট কেহ পাইবে না।” বলিয়া পদাঘাতে মুকুট কর্ণফুলি নদীর জলে ফেলিয়া দিলেন।”
বুঝতেই তো পারছেন, শেষ কথাটি কী সাক্ষ্য দিচ্ছে!!! অর্থাৎ, কর্ণফুলী নদী তথা বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল তৎকালীন ত্রিপুরা রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
এমনকি, যে ঈশা খাঁকে বাংলাদেশের ইতিহাস “বার ভূঁইয়ার প্রধান” হিসেবে উপস্থাপন করে থাকে, সে ঈশা খাঁ প্রকৃতপক্ষে ছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের অশ্বারোহী বাহিনীর সেনাপতি। আর বাংলার বারো ভূঁইয়ারাও কখনই স্বাধীন জমিদার ছিলেন না।
তারাও প্রকৃতপক্ষে ছিলেন ত্রিপুরা মহারাজার শাসনাধীন জমিদার, যারা মহারাজাকে নিয়মিত কর দিতেন। সেসময় বর্তমান বাংলাদেশের বিশাল অংশ স্বাধীন ত্রিপুরা রাজ্যের অধীন ছিল।
Imperial Gazetteer of India Provincial Series: Eastern Bengal and Assam, page: 66-এ উল্লেখ আছে, “The ancient Kingdom of Tipperah at various times extended its rule from the Sundarban in the west to the Burma in the east and north was as far as Kamrup.”
তাছাড়া, ত্রিপুরা রাজন্যবর্গের ইতিহাস গ্রন্থ- ‘রাজমালা’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মুকুট’ নাটক, প্রভাংশু ত্রিপুরার গবেষমূলক গ্রন্থ ‘ত্রিপুরা জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি’ এবং বিশিষ্ট লেখিকা শোভা রাণী ত্রিপুরার ইতিহাস গ্রন্থ ‘ত্রিপুরা জাতি’, Dhaka District Gazetteer, Chittagong Hill Districts Gazetteer প্রভৃতিতেও এসকল তথ্য উল্লেখ আছে। এই লুকোনো সত্য তথ্যগুলো এতদিন বাংলাদেশের উগ্র বাঙালিদের জানা ছিল না বললেই চলে।
আর যখনই জেনে গেল, তখন ধীরে ধীরে পাঠ্যপুস্তক সংশোধনের মধ্য দিয়ে ‘মুকুট’ নাটিকাটিকেও পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়া হল। আর এরই ফলে বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘ত্রিপুরা রাজবংশ’ অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে।
তবে, আশাবাদী মানুষ হিসেবে আমি আজও স্বপ্ন দেখি, বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকে পুনরায় ‘মুকুট’ নাটিকা স্থান পাবে।
‘মুকুট’ না হলেও অন্য কোন বিষয়ের মাধ্যমে হলেও বাংলাদেশের পাঠ্যসূচীতে ত্রিপুরা জাতিকে স্থান দেওয়া হবে সেই প্রত্যাশা করি। হতে পারে সেটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই লেখা (১৮৯০ সালে প্রকাশিত ত্রিপুরা ঐতিহাসিক নাটক) “বিসর্জন” কিংবা (১৮৮৭ সালে প্রকাশিত ত্রিপুরা ঐতিহাসিক উপন্যাস) “রাজর্ষি”।
অথবা হতে পারে, ‘বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার’ (২০১৩) প্রাপ্ত গবেষক প্রভাংশু ত্রিপুরার কোন গবেষণাকর্ম কিংবা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ (২০১৭) প্রাপ্ত লেখিকা শোভা রাণী ত্রিপুরার কোন সাহিত্য কর্ম।
গবেষক প্রভাংশু ত্রিপুরা তাঁর “ত্রিপুরা জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতি” গ্রন্থে “ত্রিপুরা জাতির পরিচয়” তুলে ধরেছেন এভাবে, “যে জাতির সামরিক শক্তির বিশালতা বিচলিত করেছিল মোগল সম্রাটগণকে, যে জাতির সাথে লড়াই করে করে বার বার পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছিল পাঠান, মারাঠা, আরাকান, গৌরবঙ্গের শাসকগণকে, যে জাতির স্বাধীনতা ও
সার্বভৌমত্ব খর্ব করতে পারেনি ব্রিটিশ সরকার, যে জাতি প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে গৌরবময় বীরত্ব দেখিয়েছিল, যে জাতির উচ্চ সংস্কৃতিবোধ মুগ্ধ করেছিল রবীন্দ্রনাথসহ বাঙালি মনীষীগণকে,
যে জাতির বিজ্ঞান চর্চার অকুণ্ঠটা উৎসাহিত করেছিল জগদীশ চন্দ্র বসুকে, যে জাতি ন্যূনতম ১৩৬৪ বছর ধরে ভারত উপমহাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ভূ-ভাগ জুড়ে প্রতিষ্ঠা করেছিল দীপ্তিশীলিত সাম্রাজ্য ও সভ্যতা,
যে জাতির রাজন্যবর্গ শত বছর পূর্বে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে ত্রিপুরা রাজ্যে বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক ঘোষণা করেছিল, যে জাতির রাজন্যবর্গ রাজ্যের প্রতিটি নাগরিকের জন্য জানমালের নিরাপত্তা বিধান করত অন্ন, বস্ত্র ও জনস্বাস্থ্যের সেবা প্রদানের জন্য সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল,
যে জাতির রাজন্যবর্গ মাণিক্য উপাধিতে সমধিক খ্যাতি লাভ করেছিল, যে জাতির ভাগ্যাকাশে ছিল না কোন ইউনিয়ন জ্যাক, যে জাতির রাজন্যবর্গ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভূষিত করেছিল, ভারতবর্ষের সেই প্রাচীন জনজাতির নাম ত্রিপুরা।”
আবার, লেখিকা শোভা রাণী ত্রিপুরা তাঁর “ত্রিপুরা জাতি” গ্রন্থে বলেছেন, “ত্রিপুরাদের সম্পর্কে প্রকাশিত পুস্তক এবং স্কুল পাঠ্য বইয়ে অনেক ভুল তথ্য দেওয়া আছে।
সেখানে ত্রিপুরাকে সামান্য একটি উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ত্রিপুরাকে তুচ্ছার্থে টিপরা বা ত্রিপুরা উপজাতি বলা হয়েছে যা বেদনাদায়ক। পাঠ্য-পুস্তকের এই সকল ভুল সংশোধনের প্রয়োজন।”
গবেষক প্রভাংশু ও লেখিকা শোভা রাণীর উক্তিদ্বয় বিশ্লেষণ করলে যা দাঁড়ায় তার অর্থটা হচ্ছে, একমাত্র তাঁদেরই মাধ্যমে প্রত্যাশিত স্বপ্নটুকু সত্যি করা সম্ভব।
কারণ, বর্তমান বাংলাদেশ সরকার এবং বেশীর ভাগ বাঙালি জনগোষ্ঠী কেবল এই দুই ত্রিপুরা জ্ঞানী ব্যক্তিত্বকে বিশেষভাবে চেনেন এবং জানেন। কাজেই, তাঁরা যদি সত্যিই এবিষয়ে এগিয়ে আসেন, তাহলে আশা করা যায়, সুশীল সমাজ, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী লেখক, সাহিত্যিক, ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতত্ত্ববিদরাও এ বিষয়ে এগিয়ে আসবেন।
আর এভাবে, কোন একসময় বাংলাদেশের ইতিহাসগ্রন্থেও “ত্রিপুরা রাজবংশ” নামে একটি অধ্যায় সংযোজিত হবে। তবে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ত্রিপুরা সমাজের সকলের কম-বেশি ভূমিকা পালন, অংশগ্রহণ, সহযোগিতা এবং স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসা খুবই জরুরি। তাই সেই প্রত্যাশা রাখছি।
সেই সাথে আশা রাখি, পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস চর্চার ক্ষেত্রে কিংবা গবেষণার ক্ষেত্রে যেন ত্রিপুরা জাতির ইতিহাসকে পাশ কাটানো না হয়।
কারণ, ত্রিপুরা জাতির ইতিহাস কেবল ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে সীমাবদ্ধ নয়; এই জাতির ইতিহাস পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা গোটা বাংলাদেশের এক অবিচ্ছেদ্য ইতিহাস।
সংগত কারণে ত্রিপুরা জাতির সাথে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের কীরূপ সম্পর্ক, সেবিষয়ে পরিষ্কার হওয়া জরুরি। রবীন্দ্রনাথ ত্রিপুরা মহারাজাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকারে বলেছিলেনঃ-
“জীবনে যে যশ আমি পাচ্ছি, পৃথিবীর মধ্যে ত্রিপুরা মহারাজা বীরচন্দ্র মাণিক্যই তার প্রথম সূচনা করে দিয়েছিলেন অভিনন্দের দ্বারা। তিনি আমার অপরিনত আরম্ভের মধ্যে ভবিষ্যতের ছবি তাঁর বিচক্ষণ দৃষ্টি দ্বারা দেখতে পেয়েই তখনি আমাকে কবি সম্বোধনে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মানিত করেছিলেন। … ত্রিপুরা রাজন্যবর্গের দানেই দুঃসময়ের সমস্ত আঘাত কাটিয়ে শান্তিনিকেতনকে আজ এতদূর করতে পেরেছি। নইলে ইহা কখনই রক্ষা পেত না।”
রবীন্দ্রনাথের কল্যাণে সেকালের বাংলাদেশের অনেক বাঙ্গালি জ্ঞানী, গুণী ও বিজ্ঞ সমাজ বিশেষ করে বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু, ডঃ দীনেশ চন্দ্র সেন, পণ্ডিত রাম নারায়ণ বিদ্যারত্ন, কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধায়, চিত্রশিল্পী শশি কুমার হেস, আশুতোষ চৌধুরী, নাটোরের রাজা জগদীন্দ্র নাথ, রাজেন্দ্র লাল মিত্র, তারকানাথ পালিত, রাস বিহারি ঘোষ, দ্বারকানাথ চক্রবর্তী, সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁ, রঙ্গনাথ যদুভট্ট এমনকি জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়ীর একাধিক গুণীজন ত্রিপুরা রাজপরিবার থেকে অকুণ্ঠ দান ও সহযোগিতা পেয়ে কৃতার্থ হয়েছেন।
এছাড়া কবি মদন মোহন মিত্র, প্রখ্যাত বিনা বাদক হোসেন খাঁ, নাট্যাচার্য কুলন্দর বক্স, প্রসিদ্ধ এস্রাজ বাদক পঞ্চানন মিত্র, সেতার বাদক নবীন চাঁদ গোস্বামী, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখও রাজদরবারে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো শোভা পেতেন। এখানে মনীষীদের দু-একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরা শ্রেয় মনে করি।
ডঃ দীনেশ চন্দ্র সেনঃ “আমার প্রথম গ্রন্থ ‘বঙ্গভাষা’ এবং শেষ গ্রন্থ ‘বৃহৎবঙ্গ’ ত্রিপুরা রাজন্যবর্গের নামে সংযোজিত করিতে পারিয়া আমি ধন্য হইয়াছি। আমার সামাজিক জীবনের উদয় ও অস্ত ত্রিপুরা সিংহাসনের উৎসাহ ও আনুকূল্যের রশ্মিপাতে বিদ্ব্যৎ সমাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছে।”
বিশ্বনন্দিত সুর সম্রাট আলাউদ্দিন খাঁঃ “আমার অন্নদাতা শ্রীল শ্রীযুক্ত মহারাজা মাণিক্য বাহাদুরের শ্রীচরণ কৃপার আশীর্বাদে আমি এখন যশ, আনন্দ ও সম্মান পাইতেছি।”
বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুঃ “আমার জীবনব্যাপী বিজ্ঞান সাধনার সংকটকালে ত্রিপুরা মহারাজা রাধা কিশোর মাণিক্য বাহাদুর গভীর অনুপ্রেরণা এবং বিলাতে থাকিয়া গবেষণা প্রচারের জন্য অর্থানুকূল্য প্রদান, আমাকে পৃথিবীর বুকে উচ্চ মার্গে উপস্থাপন করিতে এবং গৌরবার্জন করিতে সহায়তা দিয়াছিল।”
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরঃ “সমগ্র ভারত উপমহাদেশে যেখানে বাংলা ভাষার প্রচলন ছিল সীমিত এবং তাকে রাজকার্যে ব্যবহারের কথা কখনও কেউ চিন্তা করেনি, তখন ত্রিপুরা রাষ্ট্রের সরকারী ভাষা ছিল বাংলা।
আমার মাতৃভাষা বাংলা, বিজাতীয় ও বিভাষীয় দেশে রাজভাষার মর্যাদায় সমাসীন, এর চেয়ে গৌরবের বিষয় আর কি হতে পারে।”
অতএব, নিঃসন্দেহে বলা যায়, বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বিশ্বদরবারে বাঙ্গালিদের জ্ঞান বিকাশে ত্রিপুরা জাতির এক বিশাল অবদান আছে। কাজেই, সেই কৃতজ্ঞতাস্বরূপ বাংলাদেশ সরকারও যদি ত্রিপুরাদের ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও অবদান সম্পর্কে পাঠ্যপুস্তকে যথাযথ মর্যাদা সহকারে তুলে ধরে, তাহলে সেটা হবে সত্যিই এক অভূতপূর্ব মহান কর্ম। এই মহান কর্মে রাষ্ট্র, সরকার ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এগিয়ে আসুক, সেই প্রত্যাশা থাকলো।
লেখক: মুকুল ত্রিপুরা
প্রকাশঃ এপ্রিল, ২০১৮, “শৈলশশী” প্রকাশনায়
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।