প্রথাগত আইনে আদিবাসী বম নারীর অবস্থান

Jumjournal
Last updated Aug 20th, 2020

1356

featured image

প্রায় ১০ হাজার জনসংখ্যার বম জাতি পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী আদিবাসী জাতিসমূহের মধ্যে অন্যতম সংখ্যালঘিষ্ঠ। নারী-পুরুষে বৈষম্যের দিক দিয়ে বম ও লুসাই সম্প্রদায়ের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। পারিবারিক ও সামাজিক উভয় ক্ষেত্রেই নারীরা বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকে।

লুসাইদের মতোই সামাজিকভাবে শিল্প বম পরিচয়ের জন্য বম জনগোষ্ঠী ভুক্ত পুরুষের ভূমিকাই বেশি। এতে বম নারীর ভূমিকা নেই বললেই চলে।

খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বম সম্প্রদায়ের মধ্যে একজন বম নারী যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কাউকে বিয়ে করেন, তবে তাকে সমাজচ্যুত করা হয়।

আর কোনো বম পুরুষ যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করেন, তবে তার স্ত্রীকেই নিজ ধর্ম-পরিচয় ত্যাগ করে স্বামীর পরিচয় ধারণ করতে হয়।

বম সমাজে বিয়ের পর স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণ পোষণ ও সামাজিক মর্যাদা দেন এবং স্ত্রী স্বামীর পারিবারিক পদবির অধিকারী হন এবং লুসাই সমাজের মতোই স্বামীর অভিভাবকত্বে থাকেন।

একজন বিধবা যদি তার স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তান-সন্ততি সহ স্বামীর পরিবারে বা শশুর শাশুড়ির সাথে একত্রে বসবাস করেন, তাহলে স্বামীর সম্পত্তি থেকে উক্ত বিধবা আমৃত্যু ভরণপোষণ পাবার অধিকারী হন।

কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ে করে স্বামী-শুশুরের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে স্বামীর সম্পত্তি থেকে ভরণপোষণ পান না। এক্ষেত্রে ওই নারী মৃত স্বামীর কাছ থেকে প্রাপ্ত সকল সম্পত্তি পুত্রদের ফেরত দিতে বাধ্য থাকেন।

স্বামীর মৃত্যুবরণের ২৮০ দিন পর বা ধাত্রী বিদ্যা মতে স্ত্রী যদি অবৈধভাবে গর্ভবতী হন এবং সামাজিক আদালত দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে মৃত স্বামী থেকে প্রাপ্ত সকল অধিকার বঞ্চিত হন।

একজন বিধবা যদি সমাজে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে সামাজিক আদালত দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলেও তিনি সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।

বম সমাজের রীতি অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ স্বামীর কারণে হলে তাকে অর্থদণ্ড দিতে হয়, যা স্বামীর উত্তরাধিকারের ৫০ শতাংশ। আর স্ত্রীর কারণে হলে তাকে এক কাপড়ে স্বামীর ঘর ত্যাগ করতে হয় এবং কনেপণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ফেরত দিতে হয়।

এক্ষেত্রে স্ত্রী তার স্বামী কর্তৃক প্রান্ত পারিবারিক মর্যাদা ও পদবি হারান। স্বামী-স্ত্রী যার কারণেই বিচ্ছেদ হোক না কেন, তাদের সন্তান সম্পূর্ণই পিতার হেফাজতে থাকে, পিতার পরিচয় বহন করে ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়। তবে ৩ বছর বয়স পর্যন্ত সন্তান মায়ের হেফাজতে থাকে।

বম জনগোষ্ঠীভুক্ত একজন আদিবাসী পুরুষের ঔরসে জন্ম গ্রহণকারী ব্যক্তিই বম পরিচয়ের অধিকারী। বম জাতিসত্তার অন্তর্ভুক্ত কোনো পরিবারে জন্ম গ্রহণকারী শিশু বম বলে স্বীকৃত হয়, এজন্য মাতার বম হবার কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

নিজেকে বম হিসেবে পরিচয় দান করে এরূপ একজন বমের ঔরসে অনুগ্রহণকারী এবং দত্তকসূত্রে বম পরিবারে লালিত সন্তানও বম পরিচয় লাভ করেন। বম সমাজে বিয়ের পর স্বামী তার স্ত্রীকে ভরণপোষণ ও কি মর্যাদা দেবেন এবং স্ত্রী স্বামীর পারিবারিক পদবির অধিকারী হবেন।

বম সমাজে পরুষতান্ত্রিক পরিবার কাঠামোতে পুরুষের একচ্ছত্র প্রভাব থাকলেও যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে পুরুষরা বিভিন্ন কাজে নিজেদের পরিবারের নারীদের জড়াতে বাধ্য, নারীরা কেবল পরিবারের উপার্জনমূলক কাজে জড়িত থাকলেও ক্রমশ তারা গৃহস্থলী কর্মকাণ্ডের দাসসুলভ গণ্ডি পেরিয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের সম্পৃক্ত তুরান্বিত করতে শুরু করেছেন। ফলে পারিবারিক গণ্ডির মধ্যে নারীরা চলাফেরা ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করছেন।

তুলনামূলকভাবে অশিক্ষিত ও প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী বম পরিবারের নারীরা পারিবারিক ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়ায় অপেক্ষাকৃত পশ্চাৎপদ অবস্থায় রয়েছেন। অপরদিকে শিক্ষিত এবং উন্নত এলাকায় বসবাসরত বম পরিবারের নারীরা যথেষ্টই এগিয়ে গেছেন।

বম জনগোষ্ঠীর নারীরা দৈনন্দিন নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনাকাটা, নিজের ও সন্তানের অসুখে চিকিৎসা, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ, গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবাসহ নিজের ও সন্তানের পোশাক-পরিচ্ছদ কেনাকাটা থেকে শুরু করে বাপের বাড়ি কিংবা গ্রামের বাইরে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে পুরুষদের সাথে প্রায়ই সমভাবে সম্পৃক্ত রয়েছেন।

অপরদিকে পরিবারের বিভিন্ন সম্পত্তি ও ফসল ক্রয়-বিক্রয়সহ ছেলেমেয়েদের বিয়েতে নারীরা সীমিত পরিসরে মতামত রাখতে পারলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়ে থাকে।

শিক্ষা ও সচেতনতার কারণে বমদের পারিবারিক ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পৃক্ততা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকলেও এখনো পুরুষের প্রাধান্য সুস্পষ্টভাবে লক্ষণীয়।

বম সমাজের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণের মাত্রা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় নারীর ক্ষমতায়নের গতিও অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

অতীতে বম সমাজের নারীরা গৃহস্থালি কাজের পাশাপাশি তাঁতবস্ত্র তৈরি, পশুপালন ও জুম চাষাবাদের কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ছিলেন। বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি চাকুরিসহ বিভিন্ন ধরনের ফলমূল উৎপাদন ও মুদি ব্যবসায় নিজেদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে অর্থনেতিকভাবে ক্ষমতায়িত হবার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত রয়েছেন।

ফলে পারিবারিক সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি সামাজিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়ও এরা হাতবচিক ভূমিকা পালন করার সক্ষমতা অর্জনের গতিশীলতা অব্যাহত রেখেছেন।

অন্য সমাজের মতো বম সমাজেও পুরুষরা নারীদের অবলা মনে করেন এবং প্রথাগত কাজকর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেষ্টা করেন। যে কারণে নারীরা নিজেদের স্বাধীন স্বাধীন-চেতনার সম্পূর্ণ প্রয়োগ করতে পারেন না।

এভাবে পুরুষের মর্জিমাফিক কাজ করার প্রবণতার ফলে স্বাভাবিকভাবেই নারীর ওপর নানা বৈষম্য বিরাজমান রয়েছে।

বিয়ে

বিয়ে মিশ্র বিয়ে (পুনদং): বম সমাজে ভিন্ন জনগোষ্ঠীর সাথে মিশ্র বিয়ের প্রচলন আছে। তবে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মেয়েকে বিয়ে করলে কনেকে নিজ ধর্ম ও জনগোষ্ঠীভুক্ত করতে হয় প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হলফনামা সম্পাদনের মাধ্যমে।

অন্যথায় তাকে সমাজচ্যুত করা হয়। কোনো বম মেয়ে ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পুরুষের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে তাকে আতিচ্যুত করা হয়।

মিশ্র বিয়ের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধর্ম থেকে আসা পাত্রীকে অবশ্যই খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করতে হয় এবং কম সামাজিক আদালত অথবা বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খ্রিষ্টধর্মের রীতিনীতি অনুসারে চার্চ এন্ডারের বাড়িতে ‘ইকাইসিয়াহ/তেলঙহাম’ অনুষ্ঠান সম্পাদন করতে হয়। এ ধরনের মিশ্র বিয়েতে স্ত্রীকে বম সমাজে প্রচলিত ধর্ম ও গোত্রের মর্যাদা ও পদবি ধারণ করতে হয়।

বিধবা বিবাহ : বম সামাজিক প্রথামতে বিধবা বিবাহ অনুমোদিত। একজন বিপত্নীক যেমন বিয়ে করতে পারেন, তেমনি একজন বিধবা নারীও বিয়ে করতে পারেন।

একজন বিধবা যদি তার স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তান-সন্ততিসহ স্বামীর পরিবারে বা শশুর-শাশুড়ির সাথে একত্রে বসবাস করেন, তাহলে স্বামীর সম্পত্তি থেকে উক্ত বিধবা আমৃত্যু ভরণপোষণ পাবার অধিকারী হন।

কিন্তু দ্বিতীয়বার বিয়ে করে যদি স্বামী-শ্বশুরের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান, তাহলে স্বামীর সম্পত্তি থেকে ভরণপোষণ পান না। বিধবাদের নিজ পিতা বা ভাইয়ের বাড়িতে থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে হয়।

বম সমাজের বৈবাহিক কর্তব্যসমূহ নিম্নরূপ : 

  • স্ত্রী তার স্বামীর সাথে বসবাস করবেন এবং স্বামীর ন্যায়সংগত নির্দেশ মেনে চলবেন;
  • স্বামী তার স্ত্রীর সাথে বসবাস করতে ও ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন;
  • উভয়েই পারিবারিক ও সাংসারিক দায়দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠাবান থাকবেন;

আইনসংগত বিয়েতে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার ও দায়িত্ব নিম্নরূপ :

  • বিয়ের সময় যদি স্ত্রী নাবালিকা থাকে, তবে নাবালিকা স্ত্রীর ওপর সাবালক স্বামীর অভিভাবকত্ব বর্তায়। এক্ষেত্রে নাবালিকার পিতা-মাতার চেয়েও স্বামীর দাবি অগ্রগণ্য;
  • বিয়ের পর স্ত্রীকে অবশ্যই স্বামীর ইচ্ছানুযায়ী পছন্দনীয় স্থানে স্বামীর সাথে বসবাস করতে হয় এবং স্বামীর সকল প্রকার ন্যায়সংগত নির্দেশ মানতে হয়। অনুরূপভাবে স্বামীকেও যথাযথ মর্যাদায় স্ত্রীকে তার সাথে রাখতে হয় এবং তাঁকে পারিবারিক মর্যাদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী ভরণপোষণ করতে হয়।

বম সমাজে বিবাহবিচ্ছেদের রীতি প্রচলিত আছে। স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে জীবদ্দশায় বৈবাহিক সম্পর্কের পরিসমাপ্তিকে মাক সেহ বলা হয়। স্বামী কর্তৃক স্ত্রীর বিরুদ্ধে বম সোশ্যাল কাউন্সিলে অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে মাক সেহু সম্পাদন করা যায়।

স্বামীর কারণে যদি বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাহলে স্বামীকে বম সমাজের রীতি অনুসারে অর্থদণ্ড দিতে হয়। এক্ষেত্রে স্ত্রীকে দেয়া পণের টাকা স্বামী ফেরত পান না। স্বামীর দেয়া অর্থদণ্ডকে মাক প্রেহ্ বলা হয়।

স্ত্রী দোষে বিচ্ছেদ হলে স্ত্রীকে এক কাপড়ে স্বামীর সংসার ত্যাগ করতে হয় এবং পণ নেয়া টাকার পুরোটাই স্বামীকে ফেরত দিতে হয়। স্বামী-স্ত্রী সার কারণেই বিচ্ছেদ – হোক না কেন, ওই দম্পতির সন্তান এবং স্থায়ী সম্পত্তি (ভূমি, লাইসেন্স করা বন্দুক ও অন্যান্য) স্বামীর অধিকারে থাকে।

যদি স্বামীর সম্মতিতে স্ত্রীর হেফাজতে সন্তান লালিতপালিত হয়, সেক্ষেত্রেও সন্তান পিতার গোত্র পরিচয়ে পরিচিত হয়। কন্যাসন্তানের বিয়ের সময় নেয়া কনেপণ থেকে মায়ের প্রাপ্য অংশ তার মাকে দিতে হয়।

মাক সেহ্ সম্পাদনের পর স্ত্রী স্বামীর উত্তরাধিকারসহ পারিবারিক পদবি ও মর্যাদা হারান। তবে স্বামীর কারণে মাক সেহু হলে স্ত্রী স্বামীর সংসারের ৫০ শতাংশ সম্পত্তি পান।

স্বামী-স্ত্রী যার কারণেই মাক সেহু সম্পাদিত হোক না কেন, সন্তান পিতার হেফাজতে থাকে। তবে নাবালক সন্তান তিন বছর পর্যন্ত পিতার ভরণপোষণে মায়ের হেফাজতে লালিত-পালিত হয়। সন্তান পিতার আইনগত উত্তরাধিকার লাভ করে। স্বামী সরকারি চাকুরিজীবী হলে তার মৃত্যুর পর মাক সেহ্ প্রাপ্ত স্ত্রী পেনশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন।

বিবাহবিচ্ছেদ বা মাক সেই সম্পাদনের তারিখ থেকে ২৮০ দিন পর বিচ্ছেদপ্রাপ্ত স্ত্রীর গর্ভে যদি কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করে, তবে বম সমাজের রীতিনীতি অনুসারে সামাজিক আদালত তার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে থাকে।

উত্তরাধিকার

বম সমাজে পুত্রসন্তানই পিতার সম্পত্তির আইনগত উত্তরাধিকারী। পরিবারের স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে স্ত্রী বা কন্যার কোনো অধিকার নেই, তবে অস্থাবর সম্পত্তিতে তাদের অধিকার স্বীকৃত।

দত্তক পুত্র বা কন্যাসন্তানের ক্ষেত্রেও একই আইন প্রযোজ্য। বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত মতে, স্বামীর মৃত্যুর পর স্বাভাবিক অবস্থায় স্ত্রী অস্থাবর সম্পত্তির ২৫ শতাংশের উত্তরাধিকারী হন।

আর যদি মৃত স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে স্ত্রী পুনরায় বিয়ে করেন, তবে তিনি সেই সম্পত্তির উত্তরাধিকার হারিয়ে ফেলেন। হেডম্যানকার্বারি নিয়োগের ক্ষেত্রে পরিবারের জ্যেষ্ঠপুত্ৰই অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন।

বম সমাজে ‘ইনকাইসিয়াহ’/তেলঙহাম’ নিয়মে একজন বিবাহিত স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাবার অধিকারী হন।

একজন বম নারী বিয়ের পূর্বে বা পরে স্বামীর সংসারে কিংবা পৈতৃক বা মাতৃক সূত্রে কিংবা তার আত্মীয় কর্তৃক দান বা উপহার হিসেবে কিংবা স্বউপার্জিত অর্থে সম্পত্তি ক্রয় অথবা লাভ করতে পারেন। বিয়ের পূর্বে অর্জিত কোনো সম্পত্তির ওপর আইনত নিরঙ্কশ মালিকানা স্বত্ব ও অধিকার স্ত্রীর থাকে।

স্বামী নিষ্ঠর প্রকৃতির হলে, স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করলে, সতিনের সাথে সংসারে অবস্থান বা বসবাসে অসম্মত হলে, প্রথম স্ত্রী স্বামীর ভিটায় নিরাপদ অবস্থানে থেকে স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ লাভের অধিকারী হন অথবা বম সোশ্যাল কাউন্সিল বা সার্কেল চিফ চালত আদালতের মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তে পিত্রালয়ে অবস্থান করে স্বামীর কাছ থেকে খোরপোষ লাভের অধিকারী হন।


তথ্যসূত্রঃ প্রথাগত আইনে আদিবাসী পাহাড়ী নারীর অবস্থান (এডভোকেট সুস্মিতা চাকমা)। 

জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।

আরও কিছু লেখা